অন্য সবই আছে, নেই শিক্ষার্থী

রংপুর প্রতিনিধি |

বুধবার (৬ জানুয়ারি) বেলা ১১টা থেকে ১টা। রংপুর নগরের কল্যাণ সংসদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে একজন শিক্ষার্থীও পাওয়া যায়নি। পাঁচটি শ্রেণিকক্ষের সব কটি ছিল শূন্য। শুধু অফিসকক্ষে প্রধান শিক্ষকসহ তিনজন শিক্ষক ছিলেন উপস্থিত।

এই চিত্র প্রতিদিনেরই বলে জানা গেছে। প্রতিষ্ঠানটি যেখানে অবস্থিত, সেখানে নিম্নবিত্ত পরিবারের তেমন বসবাস নেই। তা ছাড়া আশপাশে ভালো কয়েকটি বিদ্যালয় রয়েছে। এসব কারণে এই বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি হয় না বলে জানা গেছে।

নগরের কামাল কাছনায় অবস্থিত এই বিদ্যালয়টি ১৯৯৩ সালে স্থাপিত হয়। বর্তমানে প্রধান শিক্ষক ছাড়াও দুজন সহকারী শিক্ষক রয়েছেন। আর আছেন একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী। বিদ্যালয় ভবনটি দোতলা। মোট ছয়টি কক্ষ। একটি কক্ষে বসেন শিক্ষকেরা। বাকিগুলো শ্রেণিকক্ষ।

গত বুধবার দুই ঘণ্টা বিদ্যালয়ে অবস্থান করে দেখা যায়, এই সময়ে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত কোনো শিক্ষার্থীকে পাওয়া যায়নি। তবে শ্রেণিকক্ষগুলো ছিল খোলা।

বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি, প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ১০০ শিক্ষার্থী রয়েছে। এর মধ্যে প্রথম শ্রেণিতে ২০ জন, দ্বিতীয় শ্রেণিতে ২২, তৃতীয় শ্রেণিতে ১৫, চতুর্থ শ্রেণিতে ১৫ ও পঞ্চম শ্রেণিতে ৮ জন। তবে এসব শিক্ষার্থীর হাজিরা খাতা দেখাতে চায়নি কর্তৃপক্ষ।

এ বছর প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় এই বিদ্যালয় থেকে মাত্র পাঁচজন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। তবে তারা সবাই পাস করেছে বলে বিদ্যালয় সূত্র জানিয়েছে।

কথা হয় বিদ্যালয়টির সামনের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা খবির উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, এই বিদ্যালয়ে শিক্ষকেরা প্রতিদিনই উপস্থিত হন। মাঝেমধ্যে চার-পাঁচজন শিক্ষার্থী দেখা যায়। কখনো কখনো তাও দেখা যায় না।

জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মনোয়ারা বেগম বলেন, এই এলাকার আশপাশে বেশ কিছু ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থাকায় সরকারি এই প্রতিষ্ঠানটিতে খুব কমসংখ্যক ছেলেমেয়ে ভর্তি হয়।

প্রধান শিক্ষক মাজেদা খাতুন বলেন, এই এলাকার পরিবারগুলোর অধিকাংশ বিত্তবান। দরিদ্র পরিবারের বসবাস খুব একটা নেই। তাই এখানে সরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে তেমন শিক্ষার্থী পাওয়া যায় না। তবু শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে।

বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি খগেন্দ্রনাথ বর্মণও। তিনি বলেন, এলাকার অভিভাবকেরা তাঁদের ছেলেমেয়েদের আশপাশের ভালো স্কুলে পড়াশোনা করান। এর ফলে এখানে তেমন ছাত্রছাত্রী ভর্তি হয় না। আসলে শিক্ষার্থী নেই বললেই চলে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের জানা নেই।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
দেরিতে এসে স্বপ্নভঙ্গ গুচ্ছে ভর্তিচ্ছু অনেকের - dainik shiksha দেরিতে এসে স্বপ্নভঙ্গ গুচ্ছে ভর্তিচ্ছু অনেকের নবম পে-স্কেল বাস্তবায়নসহ ৭ দাবিতে সরকারি কর্মচারীদের মানববন্ধন - dainik shiksha নবম পে-স্কেল বাস্তবায়নসহ ৭ দাবিতে সরকারি কর্মচারীদের মানববন্ধন কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে জগদীশ চন্দ্র বসুর নামে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে সম্মতি প্রধানমন্ত্রীর - dainik shiksha জগদীশ চন্দ্র বসুর নামে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে সম্মতি প্রধানমন্ত্রীর প্রধান শিক্ষককে লাঞ্ছিতের অভিযোগে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি গ্রেফতার - dainik shiksha প্রধান শিক্ষককে লাঞ্ছিতের অভিযোগে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি গ্রেফতার শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ নিজের শিক্ষককে নিয়ে শ্রেণিকক্ষে ঢাবি শিক্ষক, প্রশংসায় ভাসছে ফেসবুক - dainik shiksha নিজের শিক্ষককে নিয়ে শ্রেণিকক্ষে ঢাবি শিক্ষক, প্রশংসায় ভাসছে ফেসবুক please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0025851726531982