চার ভাগে বিভক্ত হচ্ছে ঢাকা মহানগর ছাত্রদল

হাবিবুর রহমান খান |

ঢাকা মহানগর ছাত্রদলকে চার ভাগে ভাগ করা হয়েছে। ঢাকা মহানগর উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব ও পশ্চিম নামে এ শাখা করা হয়েছে। আগে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ নামে দুটি শাখা ছিল। মহানগর চারটিসহ ঢাকা ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা কলেজ, তিতুমীর কলেজের নতুন কমিটি গঠন প্রায় চূড়ান্ত।

১ জানুয়ারি ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনের পরপরই এসব কমিটি ঘোষণা করা হতে পারে বলে ছাত্রদল সূত্রে জানা গেছে। এদিকে পছন্দের প্রার্থীকে গুরুত্বপূর্ণ পদে আনতে দায়িত্বপ্রাপ্তরা নিজেদের মতো এলাকা ভাগ করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ছাত্রদলের সভাপতি কারাগারে থাকাবস্থায় মহানগর চার ভাগ ও কমিটি গঠন নিয়েও সংগঠনের ভেতরে নানা আলোচনা-সমালোচনা চলছে। যতদিন পর্যন্ত ছাত্রদল সিন্ডিকেটের প্রভাবমুক্ত না হবে ততদিন যোগ্য ও ত্যাগীরা গুরুত্বপূর্ণ পদে আসতে পারবে না বলেও মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেন।

জানতে চাইলে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটি সহসভাপতি নাজমুল হাসান বলেন, মহানগর চার ভাগ করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। শিগগিরই তা চূড়ান্ত করা হবে। একই সঙ্গে ছাত্রদলের ইউনিটগুলোর নতুন কমিটি গঠনের কাজও চলছে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর পরই তা ঘোষণা করা হতে পারে।

জানা গেছে, ডেমরা, যাত্রাবাড়ী, শাহজাহানপুর, সবুজবাগ, পল্টন, শাহবাগ, নিউমার্কেট, ধানমণ্ডি এলাকাকে পূর্ব, উত্তরা, গুলশান, ক্যান্টনমেন্ট, বনানী, বাড্ডা, তেজগাঁও, খিলগাঁও এলাকা নিয়ে উত্তর, কামরাঙ্গীরচর, লালবাগ, চকবাজার, শ্যামপুর, কোতোয়ালি এলাকা নিয়ে পশ্চিম, মোহাম্মদপুর, আদাবর, দারুস সালাম, শাহআলী, পল্লবী, মিরপুর এলাকা নিয়ে মহানগর দক্ষিণ শাখা নির্ধারণ করা হয়েছে।

সূত্র আরও জানায়, কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণার এক বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও এখনও কোনো ইউনিটের নতুন কমিটি ঘোষণা করতে পারেনি। এসব ইউনিটের কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া বারবার শুরু করা হলেও শেষ পর্যন্ত তা হয়নি।

এদিকে মহানগর চার ভাগের এলাকা ভাগ নিয়েও নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেন, নিজের পছন্দের লোকদের গুরুত্বপূর্ণ পদে আনতে স্বাভাবিক নিয়মের ব্যত্যয় ঘটানো হয়েছে।

তারা বলেন, ধানমণ্ডি ও নিউমার্কেট এলাকা ঢাকা মহানগর দক্ষিণ কিংবা পশ্চিম অংশে পড়ার কথা। কিন্তু নিজেদের লোককে পদে বসাতে এসব এলাকাকে পূর্ব অংশের সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যাত্রাবাড়ী থেকে পূর্ব অংশ শুরু হয়ে পল্টন-শাহবাগ হয়ে ধানমণ্ডি পর্যন্ত কিভাবে পূর্ব ভাগে পড়ে তা বোধগম্য নয়। চার ভাগে ভাগ করার সময় এ নিয়ে কেউ কেউ প্রতিবাদ জানালেও তা আমলে নেয়া হয়নি।

সূত্র জানায়, ছাত্রদলের দেখভাল করার দায়িত্বপ্রাপ্ত বৃহত্তর নোয়াখালী অঞ্চলের এক বিএনপি নেতা কামাল নামে তার পছন্দের এক প্রার্থীকে পূর্বের সাধারণ সম্পাদক বানাতে এভাবে মহানগরকে ভাগ করেছে। কামাল ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের রাজনীতি করে। কামালের বাড়িও নোয়াখালী এলাকায়।

ছাত্রদল সূত্রে জানা গেছে, কামাল এক সময় ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর ভোল পাল্টে তিনি ছাত্রদলের রাজনীতিতে ঢুকে পড়েন।

বিগত সরকারবিরোধী আন্দোলনে রাজনীতি ছেড়ে ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। তাকে পদ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ায় সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। তাকে পদ দেয়া হলে আবারও ছাত্রদলে ভয়াবহ সংঘর্ষের আশংকা করছেন কেউ কেউ।

ছাত্রদল ঢাকা কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান মিঠু বলেন, যারা বিগত দিনে রাজপথে ছিলেন তাদের দিয়ে কমিটি করা হলে সংগঠন আরও শক্তিশালী হবে। সবাই তাই চায়। দলের চেয়ারপারসনও বারবার বলেছেন, ত্যাগী ও যোগ্যদের দিয়েই কমিটি করা হবে। আশা করি তার নির্দেশ মেনেই দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিটি করবেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0025320053100586