ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা বিষযে এম,এ পাশ করেছি। ছাত্র হিসাবে যথেষ্ট ভাল ছিলাম না। কিন্তু পড়াশোনার দৌড় একেবারে কম নয়, বয়স হয়েছে, এখনও ছাত্রদের মত পড়াশোনা করি। পেশা অধ্যাপনা।
আজ দীর্ঘ ১৪ বৎসর যাবৎ জাতীয় টেলিভিশন স্কুল বিতর্ক প্রতিযোগিতার সাথে জড়িত। বিতর্ক দল গঠন, বিতর্ক প্রতিযোগিতা করা, বিতার্কিকদের স্ক্রিপ এডিটিং করাও রুটিন ওয়ার্ক।
সম্প্রতি বাংলাদেশ জাতীয় টেলিভিশন স্কুল বিতর্ক প্রতিযোগিতায় একটি দল প্রেরণ করেছিলাম। প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষের অনুরোধে আমি নিজেও টেলিভিশনে গিয়েছি। ওই দিনের বির্তকের প্রস্তাবনা ছিল “কর্মমূখী শিক্ষার অনুপস্থিতি বেকারত্বের মূল কারণ।” প্রস্তাবনার পক্ষের দলটি ছিল ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজ বিপক্ষে বক্তব্য রেখেছে বোদা পাইলট গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ। ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজের কাছে বোদা পাইলট গার্লস হাই স্কুল (২.১০) দুই দশমিক এক শূন্য পয়েন্টে হেরে গেছে।
তবে হারা দলটি তথ্য নির্ভর অপূর্ব বক্তব্য উপস্থাপন করেছে। হার-জিত থাকবেই, যারা কখন হারেনি, তারা কোন দিনই জয়ের মূখ দেখে না।
কথা তা নয়, সামান্য নম্বার কম পাওয়ার বিষয়টি জানতে পারলাম ওই দলটি একটি উচ্চারণ বার বার ভুল করেছে। তারা ‘আজকের’ শব্দটিকে ‘আজগের’ বলেছে। মারত্মক ভুল। হাস্যকর বিষয় বিচারক উচ্চারণ সম্পর্কে কি পরিমাণ ধারণা রাখেন তা জানিনা তবে তাদের জেনে রাখার জন্য কিছু উচ্চারণ নিচে উপস্থাপন করলাম। যা তাঁদের জেনে রাখা উচিত, অপরদিকে আমরা যারা বক্তব্য রাখি তাদের শিখিয়ে রাখা উচিত।
কোন ভাষার উৎকর্ষ এবং সমৃদ্ধি ঘটে, ওই ভাষার উচ্চারণ পদ্ধতির মধ্য দিয়ে। শুদ্ধ উচ্চারণ, ভাষা ব্যবহারকারীর সর্বশ্রেষ্ঠ ঐশ্চর্য। ধরুন, কোন একজন বললেন, ‘আমি এবং তুমি আজকের অনুষ্ঠানে যাব না। কারণ বিবাহ অনুষ্ঠানে আমার যেতে ইচ্ছা করে না।’ এই বাক্যটি বলার সময় শুদ্ধ উচ্চারণ হবে, ‘আমি এব্ঙ তুমি আজগের অনুশ্ঠানে যাবো না। কারণ, বিবাহ্ও অনুশ্ঠানে আমার যেতে ইচ্ছা করে না।’ অর্থাৎ লেখব, ‘আজকের’ উচ্চারণ করবো, ‘আজগের’, লেখছি, ‘এবং’ উচ্চারণ হবে ‘এব্ঙ’। লেখব, ‘অংশু (অর্থ, কিরণ বা আঁশ) উচ্চারণ করবো, ‘ওঙ্শু’, লেখব, ‘অংসু (অর্থ, কাঁধ)’, উচ্চারণ করবো, ‘অঙশো’। লেখব, ‘অংসভার (অর্থ, দায়িত্ব)। উচ্চারণ করবো, ‘অঙ্শোভার’। লেখব, ‘অকবি (অর্থ, যার কবি প্রতিভা নেই), উচ্চারণ করবো, ‘অকোবি’। লেখব, ‘অকর্ম (অর্থ, অবাঞ্চিত কাজ), উচ্চারণ করবো, ‘অর্কমো’। লেখব, ‘অকলুষ (অর্থ, নিষ্পাপ, নির্দোষ), উচ্চারণ করবো, ‘অকোলুশ’। লেখব, ‘অকল্প’ (অর্থ, যা ভাবা যায় না), উচ্চারণ করবো, ‘অকল্পো’।
লেখব, ‘অকল্যাণ’ (অর্থ, অমঙ্গল, অশুভ), উচ্চারণ করবো, ‘অকোল্লান্’। লেখব, ‘অকথ্য’ (অর্থ, যা বলা উচিত নয়, অশ্লীল), উচ্চারণ করবো, ‘অকোত্থো’। লেখব, ‘অকথন’ (অর্থ, যা মুখে আনা যায় না, কু-কথা), উচ্চারণ করবো, ‘অকথোন্’। লেখব, ‘বাংলা’, উচ্চারণ করবো, ‘বাঙলা’।
লেখক : রহিম আব্দুর রহিম, সাংবাদিক ও কলামিস্ট