জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের গতির সঙ্গে তাল মেলাতে পারছে না শিক্ষার্থীরা!

নিজস্ব প্রতিবেদক |

BHOLA PICকিছুদিন আগেও যথাসময়ে পরীক্ষার দাবিতে আন্দোলন করতেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। কিন্তু বছরখানেকের ব্যবধানে বদলে গেল দৃশ্যপট-একাডেমিক কার্যক্রমে গতি আসায় এখন পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে পথে নেমেছেন শিক্ষার্থীরা।

গত শনিবার দেশব্যাপী এবং রোববার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে শিক্ষার্থীরা। আগামী বুধবার গাজীপুরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে এক ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচিও ঘোষণা করেছে তারা।

গত ২৮ ডিসেম্বর তৃতীয়বর্ষের পরীক্ষার সময়সূচি ঘোষণা করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সে অনুযায়ী আগামী ২০ জানুয়ারি শুরু হয়ে ১৬ ফেব্রুয়ারি তৃতীয় বর্ষের তত্ত্বীয় পরীক্ষা হওয়ার কথা।

কিন্তু সূচি ঘোষণার পর প্রস্তুতি না থাকায় পরীক্ষা দুই থেকে আড়াই মাস পিছিয়ে দেওয়ার দাবি জানান তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলোতে অনার্স তৃতীয় বর্ষে ঠিকমতো কাস হয়নি।

তাদের সিলেবাসের অর্ধেকটাই এখনও পড়া বাকি। তাই পরীক্ষার জন্য যথাযথ প্রস্তুতি নিতে পারেনি তারা।

এর আগে ২০১৮ সালের মধ্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত কলেজগুলো সেশনজট মুক্ত করতে চলতি বছরের ২২ জানুয়ারি থেকে সকালে ক্লাস ও বিকেলে পরীক্ষা গ্রহণের কর্মসূচি নিয়ে ‘ক্র্যাশ প্রোগ্রাম’র ঘোষণা দেয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, নয় মাস শিক্ষাবর্ষ ধরে সর্বোচ্চ তিন মাসের মধ্যে ফল প্রকাশের ধারাবাহিকতা ধরে রেখে কর্মসূচি নেওয়ায় একাডেমিক কার্যক্রমে গতি এসেছে।

নতুন পরীক্ষা পরিচালনা ও উত্তরপত্র মূল্যায়ন পদ্ধতি, ডাকযোগে পাঠানোর পরিবর্তে আঞ্চলিক কেন্দ্রগুলো পুরোপুরি সক্রিয় করে পরীক্ষকদের সঙ্গে যোগাযোগ, ওএমআর পদ্ধতিতে পরীক্ষার্থীদের হাজিরা, উত্তরপত্র মূল্যায়ন শেষে পরীক্ষকরা একটি বিশেষ সফটওয়্যারের মাধ্যমে নম্বর কেন্দ্রীয় সার্ভারে পাঠান। এতে পরীক্ষা ব্যবস্থাপনা ও ফল প্রকাশে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটেছে।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক হারুন-অর-রশিদ বলেন, ‘ক্র্যাশ প্রোগ্রাম’ ঘোষণার পর পরীক্ষাগুলো নির্ধারিত সময়ে গ্রহণ ও ফল প্রকাশ করা হয়েছে, একাডেমিক কার্যক্রমে এখন গতি এসেছে। এতে ২০১৭ সালের মধ্যে পুরান সব বর্ষের শিক্ষার্থীরা সেশনজটমুক্ত হতে পারবে। আর ২০১৮ সালের মধ্যে পুরোপুরি সেশনজটমুক্ত হবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, ক্রাশ প্রোগ্রামে স্নাতকে ২১০ দিন ক্লাস, ফরম পূরণে ১৫ দিন, পরীক্ষা ৫৫ দিন, ফল ৯০ দিন এবং প্রতি ক্লাস ৬০ মিনিট নেওয়ার কথা বলা হয়। আগে যা ছিল ২৪০ দিন, ৩০ দিন, ৭৫ দিন, ১২০ দিন ও ৪৫ মিনিট। মাস্টার্সেও এভাবে সময় কমিয়ে আনার কথা রয়েছে। ২০১৬ সাল পর্যন্ত ক্র্যাশ প্রোগ্রাম শেষে নিয়মিতভাবে ক্লাস-পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। সেশনজট নিরসনে ক্র্যাশ প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে ২০১৫-১৬ সেশনের প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির ভর্তি প্রক্রিয়াও এগিয়ে আনা হয়।

কিছুদিন আগেও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বর্ষের পরীক্ষা শেষ হতে প্রায় দেড় বছর পেরিয়ে যেতো। ৭/৮ বছরের আগে অনার্স এবং মাস্টার্স শেষ হতো না। এতে বয়স শেষ হয়ে যাওয়ায় অনেকেই সরকারি চাকরির আবেদন করতে পারতেন না বলে দ্রুত পরীক্ষার দাবিতে আন্দোলন করতেন। এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য অধ্যাপক হারুন-অর-রশিদ বলেন, আগে পরীক্ষা নেওয়ার জন্য আন্দোলন করতো, এখন পেছানোর জন্য করছে। তাদের দাবির বিষটি আমাদের নজরে আছে, দাবি যৌক্তিক হলে নিশ্চয়ই বিবেচনা করা হবে। তিনি আরও বলেন, যেসব বিষয়ে আগে থেকে জট সেগুলো জটমুক্ত না করা গেলেও অন্য বিষয়গুলো মুক্ত হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0099630355834961