বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের বেতন

মো. আশফিকুর রহমান |

বিশ্ববিদ্যালয়কে বলা হয় সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ। তাহলে এখানে যাঁরা পড়ান তাঁরা সর্বোচ্চ শিক্ষিত এবং তাঁদের বেতন ও সম্মান সর্বোচ্চ হবে—এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বাংলাদেশে সেটা উল্টো। সর্বোচ্চ শিক্ষিত মানুষদের তাঁদের সম্মান ও বেতনের জন্য রাস্তায় দাঁড়াতে হয়, বলতে হয়—আমাদের বেতন বাড়ান। এটা ভুলে গেলে চলবে না—এই শিক্ষিত মানুষগুলোর হাতেই আমাদের জাতির ভাগ্য নির্ভর করে। দেখি এই মানুষগুলোকে অসম্মান করে কথা বলা হয়, তখন আমার মতো ছাত্র যারা শিক্ষকদের সম্মান করে তারা তাদের শিক্ষকদের অপমান সহ্য করতে পারে না।

বঙ্গবন্ধুর মতো রাজনীতিবিদ এখন নেই কিন্তু আমার শিক্ষক আছেন। তাই আমি শিক্ষকই হতে চাই। ভালো ফলাফল করে যখন এই মহান পেশায় আসব তখন দেখব অন্যের কাছে ধরনা দিতে হচ্ছে আমার সংসার খরচ চালানোর জন্য। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা ডিসিপ্লিনের প্রথম ব্যাচের ছাত্র হওয়ার জন্য এই চরম সত্যটি আমাকে জানতে হয়েছে যে, শিক্ষকের বেতন খুবই কম। আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আয়ের হিসেব নেওয়ার কথা বলা হয়। কিন্তু জোর গলায় বলতে পারি, অবৈধ পন্থায় আয় করার মতো সুযোগ সম্মানিত শিক্ষকদের নেই। শিক্ষকদের ক্ষেত্রে বলা হয়—বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নিয়ে টাকা আয় করার কথা। কিন্তু তাঁদের সংখ্যা কয়জন তা বলা খুব বেশি কঠিন হবে না। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের বাড়তি আয়ের উপায় হয়তো আছে আর সেটা হলো ভর্তি পরীক্ষা আর সন্ধ্যাকালীন কোর্স। কিন্তু যতদূর জানি এই টাকার একটা বড় অংশ ইউজিসি এবং নিজস্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন তহবিলে জমা রাখা হয়। কারণ শিক্ষকদের গবেষণা ও প্রকাশনার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ সরকার থেকে দেওয়া হয় না। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখানো হয়—কিন্তু শিক্ষকদের বঞ্চিত করে তাঁদের যথাযথ সম্মান ও বেতন না দিয়ে আমরা কীভাবে ডিজিটাল হব বুঝে উঠতে পারি না। শিক্ষকরা যে আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন, আমাদের ক্ষতি হলেও আমি এই আন্দোলনকে সমর্থন করি। কারণ যাঁরা দেশকে বেশি দেবেন, তাঁরা কম পাবেন, সেটা হতে পারে না।

স্যার একদিন বলেছিলেন—আমার বন্ধু যার ক্লাসে পারফরমেন্স আমাদের থেকে খারাপ ছিল সে এখন বেতন পায় দুই লাখ টাকার থেকে বেশি। কিন্তু আমরা যারা শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ভালো ফলাফল করে এখানে আছি—তারা আমার বন্ধুর ড্রাইভারের সমান বেতন পাই। আশা—করি, শিক্ষকদের যৌক্তিক বেতন দেবেন, তাঁদের প্রাপ্য সম্মান দেবেন।

লেখক: মো. আশফিকুর রহমান, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
মাধবীলতা নয়, স্কুলের নাম কচুগাড়ি পুনর্বহালের দাবি - dainik shiksha মাধবীলতা নয়, স্কুলের নাম কচুগাড়ি পুনর্বহালের দাবি খুদে শিক্ষার্থীর হাতে অস্ত্র কেনো! - dainik shiksha খুদে শিক্ষার্থীর হাতে অস্ত্র কেনো! এইচএসসির ফরম পূরণ শুরু আজ - dainik shiksha এইচএসসির ফরম পূরণ শুরু আজ মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে - dainik shiksha মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে মুজিবনগর দিবসে সব স্কুল-কলেজে আলোচনা - dainik shiksha মুজিবনগর দিবসে সব স্কুল-কলেজে আলোচনা মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষক নিবন্ধন সনদের ফটোকপি পোড়ানো কেমন প্রতিবাদ! - dainik shiksha মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষক নিবন্ধন সনদের ফটোকপি পোড়ানো কেমন প্রতিবাদ! কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0024230480194092