চলতি বছরে পাঠ্যপুস্তক বোর্ড প্রকাশিত ও সপ্তম শ্রেণির বাংলা পাঠ্যবই ‘সপ্তবর্ণায়’ স্থান পেয়েছে বিখ্যাত শিশুসাহিত্যিক সুকুমার রায়ের ‘আনন্দ’ কবিতাটি। কিন্তু কবিতার লাইনগুলো এলোমেলো। কবিতার তৃতীয় লাইনটি পাঠ্যবইয়ে চলে গেছে নবম লাইনে। চতুর্থটি দশমে। এভাবে আটটি লাইনের গরমিলে কবিতাটিতে হ-য-ব-র-ল অবস্থা তৈরি হয়েছে।
কলকাতার আনন্দ পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত সুকুমার রায়ের ছেলে সত্যজিৎ রায় ও পার্থ বসু সম্পাদিত ‘সুকুমার রায়ের সমগ্র শিশুসাহিত্যে’ (প্রথম প্রকাশ বৈশাখ ১৩৮৩, ষোড়শ মুদ্রণ ভাদ্র, ১৪১৯) কবিতাটি আছে। সেখানে কবিতাটি এ রকম—
যে আনন্দ ফুলের বাসে, যে আনন্দ পাখির গানে,
যে আনন্দ অরুণ আলোয়, যে আনন্দ শিশুর প্রাণে,
যে আনন্দে বাতাস বহে, যে আনন্দ সাগরজলে,
যে আনন্দ ধূলির কণায়, যে আনন্দ তৃণের দলে,
যে আনন্দে আকাশ ভরা, যে আনন্দ তারায় তারায়,
যে আনন্দ সকল সুখে, যে আনন্দ রক্তধারায়,
সে আনন্দ মধুর হয়ে তোমার প্রাণে পড়ুক ঝরি,
সে আনন্দ আলোর মত থাকুক তব জীবন ভরি।
কিন্তু এনসিটিবির সপ্তম শ্রেণির বাংলা বইয়ে কবিতাটি ছাপা হয়েছে এভাবে—
যে আনন্দ ফুলের বাসে,
যে আনন্দ অরুণ আলোয়,
যে আনন্দে বাতাস বহে,
যে আনন্দ ধূলির কণায়,
যে আনন্দে আকাশ ভরা,
যে আনন্দ সকল সুখে,
সে আনন্দ মধুর হয়ে
যে আনন্দ পাখির গানে,
যে আনন্দ শিশুর প্রাণে,
যে আনন্দ তৃণের দলে,
যে আনন্দ তারায় তারায়,
যে আনন্দ রক্তধারায়,
তোমার প্রাণে পড়ুক ঝরি,
থাকুক তব জীবন ভরি।
দৈনিকশিক্ষাডটকমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রতিবছরই বইয়ে ভুল ধরা পড়ে কিন্তু তা আর সংশোধন হয় ন। একটি কমিটি গঠন করেই খালাস।
পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত চেয়ারম্যন অধ্যাপক রতন সিদ্দিকী দৃষ্টি আকর্ষন করলে প্রথমে তিনি দাবী করেন দু-চারটি বইয়ে ভুল হতে পারে। সবগেুলোতে না। তবে, গত তিনদিন ধরে সাংবাদিকরা তার দৃষ্টি আর্কষণ করার পর আজ সোমবার সকালে স্বীকার করেছেন, এনসিটিবি বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।
এনসিটিবির সাবেক চেয়ারম্যান গাজী মো. আহসানুল কবীর দৈনিকশিক্ষাডটকমকে বলেন, এখানে পদায়ন করা দরকার ভাষা ও সাহিত্যে অভিজ্ঞ শিক্ষকদের কিন্তু তা না করে বর্তমানের চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে সবাই পদায়ন পেয়েছেন শিক্ষামন্ত্রীর সাবেক বিতর্কিত এপিএসএর পছন্দে।
বদলি ভিত্তিক পদায়ন না হয়ে যোগ্যতাভিত্তিক পদায়ন হওয়া উচিত এনসিটিবিতে।
কারো স্ত্রী, কারো শ্যালিকা বা কারো ভাইকে ঢাকায় পদায়ন করতে হলে এনসিটিবিকে বেছে নেওয়া হচ্ছে বছরের পর বছর যাবত।