অনশনের প্রথম দিনেই অসুস্থ ২৪ মাদ্রাসা শিক্ষক: প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস চান

নিজস্ব প্রতিবেদক |

জাতীয়করণের দাবিতে আট দিনের টানা অবস্থান কর্মসূচি শেষে মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) থেকে অনশন শুরু করেছেন মাদরাসা শিক্ষকরা। বাংলাদেশ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা শিক্ষক সমিতির ব্যানারে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ কর্মসূচি পালন করছেন তাঁরা। প্রথম দিনের অনশনেই ২৪ জন শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে জানা গেছে। তাঁদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন চিকিৎসাকেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া অনেক নারী শিক্ষকের সঙ্গে তাঁদের বাচ্চারাও অবস্থান করছে। তীব্র শীতে খোলা আকাশের নিচে বসে থেকে শিশুরা কাহিল হয়ে পড়েছে। এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে শিক্ষকদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করা হয়নি।

গাইবান্ধার ১ নম্বর স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসায় তরিবর রহমান ১৫ বছর ধরে চাকরি করছেন। তিনি দৈনিকশিক্ষাকে বলেন, ‘বেতন না পেয়ে কত দিন চলা যায়? সামান্য জমি চাষ করে সংসার চালাতে হয়। দীর্ঘদিন ধরেই মানবেতর জীবন যাপন করছি। বেতন না পেলেও নিয়মিতই মাদরাসায় যেতে হয়। এখন আমাদের আর বাড়ি ফিরে গিয়ে লাভ নেই। তাই দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়ব না।’

বরিশালের করিবাহী চর স্বতন্ত্র মাদরাসার শিক্ষক জেসমিন আক্তার। তিনি তাঁর চার বছরের ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে অনশনে বসেছেন। তিনি বলেন, ‘স্বামীর সামান্য আয়ে সংসার চালানো কষ্টকর। দীর্ঘদিন ধরে মাদরাসায় শিক্ষকতা করছি। কিন্তু কোনো বেতন পাই না। গত ৯ দিন ধরে প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান করছি। বাচ্চাকে বাড়িতে কার কাছে রেখে আসব? তাই সঙ্গে রেখেছি। বাচ্চাটার খুব কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু এর পরও রয়েছি। কারণ দাবি আদায় ছাড়া আমাদের আর বাড়ি ফিরে যাওয়ার উপায় নেই।’

সমিতির মহাসচিব কাজী মোখলেসুর রহমান  বলেন, ‘দীর্ঘদিন বিনা বেতনে চাকরি করতে করতে আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। জাতীয়করণ ছাড়া আমাদের আর ভিন্ন কোনো পথ খোলা নেই। সরকার প্রাথমিক শিক্ষাকে জাতীয়করণ করেছে। আমরাও তো প্রাথমিক শিক্ষার অন্যতম অংশ। তাহলে আমাদের কেন বাকি রাখা হবে? আমাদের বিশ্বাস প্রধানমন্ত্রীকে বিষয়টি ঠিকমতো বোঝালে তিনি নিরাশ করবেন না। তাই আমরা তাঁর দিকেই তাকিয়ে আছি।’

জানা যায়, মাদরাসা বোর্ডের নিবন্ধন পাওয়া ১০ হাজারের মতো স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা আছে। এতে শিক্ষকের সংখ্যা প্রায় ৫০ হাজার। মাত্র এক হাজার ৫১৯টি ইবতেদায়ি মাদরাসার প্রধান শিক্ষক দুই হাজার ৫০০ টাকা ও সহকারী শিক্ষকরা দুই হাজার ৩০০ টাকা ভাতা পান। বাকি শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরে বিনা বেতনে চাকরি করছেন।

উল্লেখ্য, এর আগে নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা এমপিওভুক্তির দাবিতে আমরণ অনশনে নামেন। কর্মসূচির ষষ্ঠ দিনে গত শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশ্বাস পেয়ে তাঁরা অনশন ভেঙে ফিরে যান।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ - dainik shiksha পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা - dainik shiksha হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে - dainik shiksha সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন - dainik shiksha জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো - dainik shiksha ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা - dainik shiksha তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0029540061950684