সব স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা জাতীয়করণের দাবিতে বৃহস্পতিবার (১১ই জানুয়ারি)তৃতীয় দিনের মতো আমরণ অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষকরা। কন কনে শীতে অনশনে থাকা অসুস্থের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। কর্মসূচির তিনদিনে ইবতেদায়ি মাদ্রাসার ৭৪ জন শিক্ষক অসুস্থতা হয়ে পড়েছেন।
বাংলাদেশ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতির মহাসচিব কাজী মোখলেসুর রহমান বৃহস্পতিবার দুপুরে দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে জানান, কন কনে শীতে টানা আট দিন অবস্থান ধর্মঘটের পর গত মঙ্গলবার (৯ই জানুয়ারি)সকাল ১১টা থেকে আমরণ অনশন শুরু করেন শিক্ষকরা। এ অনশন কর্মসূচিতে এখন পর্যন্ত ৭৪ জন শিক্ষক অসুস্থ হয়েছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা এ অনশন কর্মসূচি থেকে সরে আসবেন বলে জানান তিনি। [in side add]
উল্লেখ্য, এর আগে নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা এমপিওভুক্তির দাবিতে আমরণ অনশনে নামেন। কর্মসূচির ষষ্ঠ দিনে গত শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশ্বাস পেয়ে তাঁরা অনশন ভেঙে ফিরে যান।
জাতীয়করণের দাবিতে আট দিনের টানা অবস্থান কর্মসূচি শেষে মঙ্গলবার (৯ই জানুয়ারি) থেকে অনশন শুরু করেছেন মাদ্রাসা শিক্ষকরা। বাংলাদেশ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতির ব্যানারে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ কর্মসূচি পালন করছেন তাঁরা।বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মাদ্রাসা শিক্ষকদের জাতীয়করণের দাবিতে আমরণ অনশনে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপকমিটির সহ সম্পাদক সাগর আহমেদ শাহীন।
বাংলাদেশ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতির সভাপতি আলহাজ কাজী রুহুল আমিন চৌধুরী বলেন,দীর্ঘদিন বিনা বেতনে চাকরি করতে করতে আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। জাতীয়করণ ছাড়া আমাদের আর ভিন্ন কোনো পথ খোলা নেই। সরকার প্রাথমিক শিক্ষাকে জাতীয়করণ করেছে। আমরাও তো প্রাথমিক শিক্ষার অন্যতম অংশ। তাহলে আমাদের কেন বাকি রাখা হবে? আমাদের বিশ্বাস প্রধানমন্ত্রীকে বিষয়টি ঠিকমতো বোঝালে তিনি নিরাশ করবেন না। তাই আমরা তাঁর দিকেই তাকিয়ে আছি।
ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতির দপ্তর সম্পাদক মো. ইনতাজ বিন হালিম জানান, এ তীব্র শীতে খোলা আকাশের নিচে বসে থাকতে হচ্ছে। কিন্তু আমাদের এ দুঃখ-কষ্ট দেখার কেউ নেই। দ্রুত আমাদের দাবি মেনে নেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনরোধ জানাচ্ছি। গত ১ জানুয়ারি থেকে ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান ধর্মঘট পালন করে আসছে ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষকরা। পরে ৯ জানুয়ারি থেকে লাগাতার অমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন তারা।
জানা যায়, মাদরাসা বোর্ডের নিবন্ধন পাওয়া ১০ হাজারের মতো স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা আছে। এতে শিক্ষকের সংখ্যা প্রায় ৫০ হাজার। মাত্র এক হাজার ৫১৯টি ইবতেদায়ি মাদরাসার প্রধান শিক্ষক দুই হাজার ৫০০ টাকা ও সহকারী শিক্ষকরা দুই হাজার ৩০০ টাকা ভাতা পান। বাকি শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরে বিনা বেতনে চাকরি করছেন।