অষ্টম শ্রেণির বাংলা বইয়ে মিয়ানমার সম্পর্কিত একটি রচনায় কিছু আপত্তিকর শব্দ রয়েছেন বলে মনে করছেন কেউ কেউ। শিশু একাডেমির সাবেক সহকারী পরিচালক বিপ্রদাশ বড়ুয়া লিখিত ‘মংডুর পথে’ নামক ভ্রমণ কাহিনীটি অষ্টম শ্রেণির বাংলা পাঠ্য বই ‘সাহিত্য কণিকা’র ৫৩ নম্বর পৃষ্ঠায় পাওয়া যায়। বইটি প্রকাশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ারের সরাসরি নিয়ন্ত্রণাধীন জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড। বইটি বাংলাদেশের শিক্ষাক্রম অনুসারে পাঠদানকারী সব বাংলা ও ইংরেজি ভার্সনের শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণ করে আসছে সরকার।
রচনার পাঠ পরিচিতিতে লেখা রয়েছে, “…বাংলাদেশের চট্টগ্রাম থেকে অনেকে মংডুতে গিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস করছে। আবার একই রাখাইন সম্প্রদায়ের লোক আছে মংডুতে ও বাংলাদেশের পটুয়াখালীতে। ফলে দুদেশের ভাষা ও সংস্কৃতির মিলও লেখক খুঁজে পেয়েছেন। এক সময়ে মংডু ছিল আরাকান নামের এক স্বাধীন দেশের অংশ। আরাকানে ছিল মুসলমানের শাসন। মিয়ানমারে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রাধান্য থাকলেও মংডুতে উল্লেখ্যযোগ্য সংখ্যক মুসলমানের বসবাস লক্ষ করেছেন লেখক।”
৫৪ নম্বর পৃষ্ঠায় ৭ নম্বর অনুচ্ছেদটি এরকম: “মাঝবয়সী সুন্দরী এক রমণী আমাদের প্রায় টেনে নিয়ে গেল তার রয়েল রেস্তরাঁয়, রাতের খাওয়ার জন্য। ইউনাইটেড হোটেলে যারা উঠেছে তারা নাকি ওদিকে এক মুসলিম রেস্তঁরায় খেয়ে নিয়েছে।”
অষ্টম অনুচ্ছেদের শেষ কয়েকটি লাইন এরকম: “ওর নাম ঝরনা। পূর্ব পুরুষের বাড়ী চট্টগ্রামের রাউজান।আমার পাশের থানা। ওর মতো আরও একজন বাঙালি মেয়ে রান্না করে। চেহারা ও স্বাস্থ্য গরিব ঘরের রোগা-পটকা নারীর মতো।”
ভ্রমণকাহিনীটার শুরু এরকম: ‘সন্ধ্যের আলো-আঁধারিতে, ২৪ শে মে, ২০০১, মিয়ানমারের (বার্মার) সীমান্ত শহর মংডুর পথে নেমে আমার মুখ, চোখ, কান ও হৃদয় অচেনা আবেগে উপচে পড়ল।’
দ্বিতীয় অনুচ্ছেদে রয়েছে, “এমন সময় আরাকান বার্মা থেকে আলাদা স্বাধীন রাজ্য ছিল। তার পরিধি ছিল উত্তরে ফেনী নদী থেকে আন্দামান সাগরের কাছাকাছি পুরো বঙ্গোপসাগর উপকুল। সেখানে এসে পড়েছি এখন। আরাকান রাজ্যের রাজসভায় দৌলত কাজী আলাওল সাহিত্যচর্চা করেছেন।”
বইটির সংকলন, রচনা ও সম্পাদনায় রয়েছেন দশজন লেখক ও শিক্ষক। এঁদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং বি সি এস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত সরকারি কলেজ শিক্ষকও রয়েছেন।
তাঁরা হলেন, অধ্যাপক ড. মাহবুবুল হক, অধ্যাপক নিরঞ্জন অধিকারী, অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ, অধ্যাপক ড. রফিকউল্লাহ খান, অধ্যাপক ড. সৈয়দ আজিজুল হক, অধ্যাপক শ্যামলী আকবর, অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর, ড. সরকার আবদুল মান্নান, ড. শোয়াইব জিবরান ও শামীম জাহান আহসান।