স্কুল-কলেজের সামনে সারের স্তূপ!

নিজস্ব প্রতিবেদক |

ঈশ্বরদী পাকশী নর্থ বেঙ্গল পেপার মিল্স হাইস্কুল ও পাকশী রেলওয়ে কলেজের শিক্ষক/শিক্ষাথীসহ আশপাশের বসবাসকারী মানুষ ইউরিয়া সারের ঝাঁঝালো গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। বৃষ্টির পানিতে গলে যাওয়া ইউরিয়া সার মিশ্রিত পানি ফসলি জমিতে ছড়িয়ে পড়ার কারণে আশপাশের ১০ – ১৫ বিঘা ফসলি জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। কৃষকরা জানান গত ১ বছর ধরে এসব জমিতে কোন ফসল হয় না। এই এলাকায় শতাধিক গাছও মারা গেছে।

গত শুক্রবার সরেজমিনে এই এলাকা ঘুরে দেখা যায় অসংখ্য গাছপালা মরে শুকিয়ে গেছে। শুকনো ডালপালা নিয়ে বাতাসে পড়ে যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে অর্ধশতাধিক মরা গাছ। নর্থ বেঙ্গল পেপার মিল্স হাই স্কুলের শিক্ষার্থীরা জানায় প্রতিদিন স্কুলে যাতায়াতের সময় সারের ঝাজালো গন্ধে তাদের দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। সারের তীব্র গন্ধ বাতাসের সঙ্গে ক্লাসরুম পর্যন্ত চলে আসে। সর্বক্ষণ তাদের নাকে রুমাল দিয়ে থাকতে হয়। অভিভাবক ও স্থানীয়রা জানান এতে মাঝে মধ্যেই তাদের সন্তানরা নানা রকম অসুখে পড়ে।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন তীব্র পরিবেশ বিপর্যয় ও গন্ধের মধ্যে আমাদের স্কুল চালু রাখতে হচ্ছে। এতে করে ছাত্রছাত্রীরা প্রায় অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হয়। ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও বলেন সারের দ্বারা এক ধরনের কেমিক্যল বাতাসে মিশে যায়। যা নিশ্বাসের সঙ্গে মানুষের শরীরে প্রবেশ করলে নানা রকম অসুস্থতা সৃষ্টি হয়। এই অবস্থা দির্ঘদিন চললে ক্যানসার পর্যন্ত হতে পারে। পাকশী রেলওয়ে কলেজের অধ্যক্ষ বলেন, দির্ঘদিন ধরে সার স্তূপ করে রাখার কারণে কলেজ ক্যাম্পাসে সারের তীব্রগন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। এতে ছাত্রছাত্রীরা প্রায় অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।

এলাকাবাসী ও কলেজের শিক্ষার্থীরা সার অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার দাবি জানালেও কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। ফলে ছাত্রছাত্রীরা কলেজ থেকে টিসি নিয়ে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। মিজানুর রহমানসহ স্থানীয় কয়েকজন জানান তাদের ফসলী জমিতে আবাদ বন্ধ হওয়ায় তারা চরম ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। বিষয়টি মিল কর্তৃপক্ষ ও বিসিআইসি কর্মকর্তাকে জানানো হলেও কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

পাকশী পেপার মিলের এমডি বলেন বিসিআইসির পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত পাকশী পেপার মিলে সার গুদামজাত করা হয় এবং এখান থেকে রিপ্যাকিং করে দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রেরন করার জন্য চার হাজার টন ইউরিয়া সার রাখা হয়েছে। মিলের ভিতরে স্থান সংকুলন না হওয়ায় পেপার মিল্স হাই স্কুলের কাছে পেপার মিলের পরিত্যক্ত কলোনীর মধ্যে স্তূপ করে পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। মিলের পক্ষ থেকে বিসিআইসির অনুমতি ছাড়া এই সার সরানো সুযোগ মিল কর্তৃপক্ষের নেই।

বিসিআইসির ডেপুটি ম্যানেজার (সেলস্) বলেন মিল ও মিলের বাইরে যে সার রাখা হয়েছে তা এখান থেকে রিপ্যাকিং করে আশে পাশের এলাকায় সরবরাহ করে থাকে। কিন্তু সাম্প্রতি ডেলিভারী প্রোগ্রাম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখানে দির্ঘদিন বাধ্য হয়েছেন তারা। কবে নাগাদ সার সরানো হবে তা বলতে পারেন নি তিনি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ - dainik shiksha পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী - dainik shiksha ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ - dainik shiksha প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন কলেজ পরিচালনা পর্ষদ থেকে ঘুষে অভিযুক্ত সাংবাদিককে বাদ দেওয়ার দাবি - dainik shiksha কলেজ পরিচালনা পর্ষদ থেকে ঘুষে অভিযুক্ত সাংবাদিককে বাদ দেওয়ার দাবি পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ - dainik shiksha পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন - dainik shiksha জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা - dainik shiksha হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে - dainik shiksha সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0032620429992676