উত্তরপত্র মূল্যায়নের সম্মানী অনলাইন ব্যাংকিংয়ে

নিজস্ব প্রতিবেদক |

পাবলিক পরীক্ষার উত্তরপত্র (খাতা) মূল্যায়নের সম্মানী পেতে পরীক্ষকদের হয়রানি আর দীর্ঘসূত্রতা এড়াতে চালু হচ্ছে অনলাইন ব্যাংকিং সিস্টেম। ফলে এক বছরের উত্তরপত্র মূল্যায়ন করে আরেক বছর পর্যন্ত সম্মানীর জন্য অপেক্ষা করতে হবে না পরীক্ষকদের।

জানা যায়, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়ন সম্মানী অনলাইন পেমেন্ট সিস্টেমে পরিশোধ করার সফটওয়্যার তৈরি করা হয়েছে।  আগামী সপ্তাহের মধ্যে জেএসসি পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নের সম্মানী রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে নিজ নিজ হিসাব নম্বরের মধ্য দিয়ে তুলতে পারবেন পরীক্ষকরা।

শিক্ষা বোর্ডের আওতাধীন পাবলিক পরীক্ষাগুলোয় খাতা মূল্যায়নের জন্য প্রতি বিষয়ে মনোনীত করা হয় একজন প্রধান পরীক্ষক। প্রধান পরীক্ষকের অধীনে থাকে বেশিসংখ্যক পরীক্ষক। পরীক্ষকরাই শিক্ষার্থীদের উত্তরপত্র মূল্যায়ন করেন। এর পর প্রধান পরীক্ষকের অধীনে উত্তরপত্র নিরক্ষণের জন্য থাকে একাধিক নিরক্ষকও। সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকরা এ দায়িত্ব পালন করেন।

ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মাহাবুবুর রহমান বলেন, প্রথমে সোনালী ব্যাংকে পরীক্ষকদের অ্যাকাউন্ট করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এর পর সবার অ্যাকাউন্ট ও মোবাইল নাম্বারসহ বিষয়ভিত্তিক তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে একটি অনলাইন ডেটাবেজ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, পরীক্ষা শেষ হবে দায়িত্বশীলতার সঙ্গে আমাদের শিক্ষকরা খাতা দেখবেন এবং তাদের মূল্যায়ন সম্মানীও পরীক্ষা শেষ হওয়ার তিন থেকে চার মাসের মধ্যে পরিশোধ করা হবে। এ ছাড়া এ সম্পর্কে একটি ই-ফাইলিং করা হবে। পরে আরও দ্রুত সময়ের মধ্যে সহজে সম্মানী পাবেন পরীক্ষকরা।

জানা গেছে, এ বছরের জেএসসির ১১ হাজার পরীক্ষকের মধ্যে প্রথম ধাপে ৯ হাজার পরীক্ষককে একযোগে অনলাইনে পেমেন্ট দেওয়া হবে। দ্বিতীয় দফায় দেওয়া হবে বাকি দুই হাজার পরীক্ষককে। পরে এক মাসের মধ্যে এ বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন সম্মানী পরিশোধ করা হবে। এভাবে প্রায় ৪২ হাজার পরীক্ষকের জন্য অনলাইন ব্যাংকিং সিস্টেম করা হচ্ছে।

বোর্ডের এই উদ্যোগের ফলে খাতা মূল্যায়ন সম্মানী পরিশোধে শিক্ষকদের হয়রানি ও দীর্ঘসূত্রতা কমবে। যাকে যুগান্তকারী পদক্ষেপ বলে মনে করছেন শিক্ষাসংশ্লিষ্টরা।

শিক্ষকরা জানিয়েছেন, আগে তাদের উত্তরপত্র মূল্যায়ন সম্মানী পেতে দীর্ঘ সময় লেগে যেত। কোনো পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন সম্মানী পেতে দুই বছর সময় লাগত। এর কারণ আগে খাতা মূল্যায়ন সম্মানী চেকের মাধ্যমে শিক্ষককের ঠিকানায় পাঠানো হতো। শিক্ষকরা ওই চেক ব্যাংকে ভাঙিয়ে নিতেন। তখন হাজার হাজার পরীক্ষকের চেকে বোর্ড চেয়ারম্যান ও সচিবকে স্বাক্ষর করতে হতো। এ কারণে সম্মানী পেতে দীর্ঘসূত্রতা তৈরি হতো। কিন্তু নতুন নিয়মে সে হয়রানি থাকছে না।

ঢাকা বোর্ডের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পরীক্ষক ও সরকারিকরণের তালিকাভুক্ত কলেজ শিক্ষকদের নেতা মো: জহুরুল ইসলাম জানান, গত দুই বছরের সম্মানীর টাকা বকেয়া রয়েছে।

শিক্ষক নেতা মো: আবুল বাশার বলেন, শিক্ষকদের পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নে যে  সম্মানী দেয়া হয়, তা অতিসামান্য। যথাসময়ে সম্মানী না পেলে শিক্ষকদের মধ্যে উত্তরপত্র মূল্যায়নে আগ্রহ থাকে না।

শিক্ষক নেতা মো: নজরুল ইসলাম রনি বলেন, আশা করছি বোর্ডের  নতুন উদ্যোগের ফলে এখন থেকে যথাসময়ে সম্মানীর টাকা পাওয়া যাবে। পাশাপাশি হয়রানিও বন্ধ হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল - dainik shiksha ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি - dainik shiksha সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ - dainik shiksha বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা - dainik shiksha ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস - dainik shiksha এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0054059028625488