রাজধানীর উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে সাধারণ কোটায় ভর্তি হওয়া ৫৭ শিক্ষার্থীকে এক মাসের জন্য শিক্ষা কার্যক্রম থেকে বিরত রাখার নির্দেশ দিয়ে হাইকোর্টের আদেশ নিষ্পত্তি করেছেন আপিল বিভাগ। ওই শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম চালানোর পাশাপাশি বঞ্চিত শিক্ষার্থীকে সাত দিনের মধ্যে ভর্তি করানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার (১৭ জানুয়ারি) দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে ৫ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
ফলে ৫৭ শিক্ষার্থীর কার্যক্রমে বাধা নেই। এছাড়া স্বাস্থ্য অধিদপ্ততরের পরিচালককে দেওয়া নির্দেশনা অনুযায়ী রিটকারীর সন্তানকেও ভর্তি করাতে হবে। আদালতে আধুনিক মেডিকেল কলেজের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। যে রিটের কারণে হাইকোর্ট ৫৭ শিক্ষার্থীকে কার্যক্রম থেকে বিরত রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন, তার পক্ষে ছিলেন এ এম আমিন উদ্দিন।ভর্তিচ্ছু এক শিক্ষার্থীর অভিভাবকের করা ওই রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ৯ জানুয়ারি ৫৭ শিক্ষার্থীর কার্যক্রমে বিরতি দিয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।এর বিরুদ্ধে আপিলে আবেদন করে মেডিকেল কর্তৃপক্ষ।
‘আগে এলে আগে ভর্তির সুযোগ’- পদ্ধতিতে ওই শিক্ষার্থীদের ভর্তি করা হয়।
রুলে সরকারি নীতিমালা অনুসরণ না করে ৫৭ শিক্ষার্থীর ভর্তি প্রক্রিয়া কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চান হাইকোর্ট।১০ দিনের মধ্যে স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
১৭ ডিসেম্বর ‘উত্তরা মেডিকেলে ভর্তিতে মেধাতালিকাকে উপেক্ষা’ শিরোনামে একটি দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি যুক্ত করে চলতি শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস প্রথম বর্ষের ভর্তি থেকে বঞ্চিত হওয়া তারিকুলের বাবা নজরুল ইসলাম গত ২ জানুয়ারি আধুনিক মেডিকেল কলেজের ভর্তি পদ্ধতি চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন। ওইদিন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু বলেন, নীতিমালা অনুসরণ করে ভর্তি না করায় এক অভিভাবকের রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ‘আগে আসলে আগে ভর্তির সুযোগ’ পদ্ধতিতে ভর্তি হওয়া ৫৭ শিক্ষার্থীকে একাডেমিক কার্যক্রম থেকে
এক মাসের জন্য বিরত রাখতে কলেজ কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। পরে আইনজীবী রেজিনা মাহমুদ বলেন, এ কলেজে মোট আসন ৯০টি। এর মধ্যে বিভিন্ন কোটায় ১৮টি আর সাধারণ কোটায় ৭২টি আসন।
গত বছরের ১১ ডিসেম্বর সাধারণ কোটার এ ৭২টি আসনে ১৫টি আসনে ভর্তি হয়ে যান শিক্ষার্থীরা। বাকি ৫৭টি আসনে ভর্তির জন্য ১৪ ডিসেম্বর মেধা তালিকা অনুযায়ী শিক্ষার্থী ভর্তি না করে ‘আগে এলে আগে পাবেন’ ভিত্তিতে আরেকটি ভর্তি বিজ্ঞপ্তি দেয় মেডিকেল কলেজ প্রশাসন।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে ১৭ ডিসেম্বর বেলা ১১টার মধ্যে ভর্তিচ্ছুদের আসার জন্য বলা হয়।
কিন্তু তারিকুল ইসলাম ১৭ ডিসেম্বর বেলা ১১টার পর কলেজে গিয়ে জানতে পারেন ১১টার মধ্যেই ৫৭ আসনে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে গেছে। ২৬১ ক্রমিকের ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী তারিকুলের দাবি, মেধাক্রম অনুসারে ভর্তি নেওয়া হলে সে ওই কলেজে ভর্তির সুযোগ পেতো। তাই তার বাবা রিট করেন।
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘আগে এলে আগে ভর্তির’ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কলেজের অধ্যক্ষ বলেন, গত বছর আমরা মেধাতালিকা অনুযায়ী ডেকেও শিক্ষার্থী পাইনি। তাই আমরা এবার এ পদক্ষেপ নিয়েছি’