নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুরে নিরাপত্তার অভাবে উত্ত্যক্তের শিকার স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া তিন ছাত্রী প্রায় এক মাস ধরে বাড়ি ছাড়া। উত্যক্তের শিকার ছাত্রীদের পরিবারকে মামলা তুলে নিতে ভয় দেখানোর অভিযোগ উঠেছে উত্যক্তকারীর স্বজনদের বিরুদ্ধে। নিরাপত্তার অভাবে ভুক্তভোগী পরিবারের অন্য সদস্যরাও শঙ্কিত হয়ে পড়েছে।
উত্ত্যক্তের শিকার পরিবারটির অভিযোগ, শুধু হুমকিতে থেমে নেই উত্যক্তকারীর স্বজনরা। উত্ত্যক্তের ঘটনায় দায়ের করা দুইটি মামলা তুলে নিতে তাদের পরিবারের অন্ততপক্ষে ১৪ সদস্যদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে পাল্টা একটি মামলা দায়ের করে হয়রানি করা হচ্ছে।
উত্ত্যক্তকারীদের স্বজন এনায়েত হোসেন বাদী হয়ে ওই চাঁদাবাজি মামলাটি দায়ের করেন। এই মামলায় মেয়ের বাবা, চার চাচা ও দাদাসহ ১২জনকে আসামী করা হয়েছে। অথচ উত্ত্যক্তকারীদের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা ও স্কুলছাত্রীকে উত্ত্যক্তের ঘটনায় পৃথক দুইটি মামলা দায়ের করা হলেও পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি। উপরন্ত চাঁদাবাজির মামলায় পরিবারটির সদস্যরা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন পরিবারটি।
উত্ত্যক্তের শিকার হওয়া ছাত্রীর দাদা অভিযোগ করেন, উত্ত্যক্তের ঘটনার বিচার চাইতে গিয়ে উত্ত্যক্তকারীর স্বজনদের হাতে ছাত্রীর বাবা প্রথম মারধরের শিকার হন। ওই ঘটনায় উত্ত্যক্তের শিকার ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে ২৮মে গুরুদাসপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।
ওই মামলা দায়ের হওয়ার পর উত্ত্যক্তকারীর স্বজনরা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে ছাত্রীর বাড়িতে ঢুকে ২৯ মে ছাত্রীর বাবা, দুই চাচাকে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টা ও দাদা কে মারধর করে। ওই ঘটনায় ১জুন ছাত্রীর দাদা বাদী হয়ে আদালতে হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করেন। মামলায় উত্ত্যক্তকারী নুরুল হক, তার বাবা আব্দুল হক, স্বজন আয়নাল হক, জয়নাল আবেদীন, আশরাফ হোসেন, মিজানুর রহমান, মিল্টন, বাবুসহ ১৩জনকে আসামী করা হয়েছে।
তারা মামলা তুলে নিতে বিভিন্ন মাধ্যম দিয়ে তাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। অন্যথায় পরিণতি খারাপ হবে বলেও হুমকি দিচ্ছে। এখন উত্ত্যক্তকারীদের নজরদারী আর তাদের দায়ের করা চাঁদাবাজি মামলায় গ্রেপ্তার আতঙ্কে দিন কাটাতে হচ্ছে। পুলিশের অসহযোগীতায় আর উত্ত্যক্তকারীদের হুমকির মুখে বসবাস করছেন তারা। নিরাপত্তার অভাবে পরিবারের স্কুল- কলেজ পড়ুয়া মেয়েদের অন্যত্র পাঠানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে উত্ত্যক্তকারীদের স্বজন জয়নাল আবেদীন মুঠোফোনে দাবী করেন, পরিস্থিতির কারনে তাদের প্রতিপক্ষের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। তবে মামলা তুলে নিতে ভয় দেখানোর অভিযোগ সত্য নয়। উপরন্ত তারাই পুলিশি গ্রেপ্তার এড়াতে আত্মগোপনে রয়েছেন। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে আপোসের চেষ্টা করা হচ্ছে।
গুরুদাসপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তারেকুল ইসলাম সরকার জানান, তিনটি মামলার তদন্ত চলছে। এ কারণে আসামীদের গ্রেপ্তার করা যাচ্ছে না। তবে উত্ত্যক্তের শিকার পরিবারটিকে ভয় দেখানোর খবর পুলিশের জানা নেই। এ সংক্রান্ত ঘটনায় থানায় অভিযোগও করেনি কেউ। পুলিশ নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করছে।