কুমিল্লা বোর্ডের এইচএসসি পরীক্ষার খাতা আনতে গিয়েছিলেন কুমিল্লা বোর্ডের যুক্তিবিদ্যা এবং উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপণন বিষয়ের পরীক্ষকবৃন্দ। কিন্তু বোর্ডের অব্যবস্থাপনায় খাতা আনয়নে পরীক্ষক হিসেবে নিয়োজিত শিক্ষকদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। শনিবার (২৭শে মে) এ ঘটনা ঘটে।
অনুসন্ধানে জানা যায় যে, উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপণন বিষয়ের পরীক্ষকদের প্রত্যেককে ৫০০ কপি করে খাতা দেওয়া হয়েছে কিন্তু এই খাতাগুলো কক্ষ থেকে গেট পর্যন্ত আনয়নে বোর্ডের কোন ব্যবস্থাপনা নেই । ফলে কিছু শ্রমিক খাতা প্রদানকারী কক্ষের মধ্যেই ৩গুণ দামে বস্তা বিক্রি ও গেট পর্যন্ত এনে দিয়ে আদায় করছে ইচ্ছেমতে টাকা । আবার আরেক বস্তা আনার জন্য তড়িঘড়ি করে খাতার বস্তাটা রেখে দিয়ে চলে যায়।
কাল উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপণনের খাতা একজন শ্রমিকের সহায়তায় বোর্ডের গেট পর্যন্ত আনান একজন পরীক্ষক। কিন্তু শ্রমিক আরেক বস্তা আনার জন্য তড়িঘড়ি করে ফেলে দেওয়ায় তার এক বান্ডেল খাতা ড্রেনের মধ্যে পড়ে যায়। বিপাকে পড়েন সংশ্লিষ্ট পরীক্ষক হিসেবে নিয়োজিত শিক্ষক। এরপর ওই শিক্ষককে নিজে পুরো বান্ডেল ধুয়ে বোর্ডের মাঠে রৌদ্রে দিয়ে দাড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।
ভুক্তভোগী শিক্ষক জানান, বোর্ডের কক্ষ থেকে বের করার পর সব দায়িত্ব এসব শিক্ষকদের। ৪ বস্তা সমপরিমাণ কাগজ নিয়ে ৩ তলা থেকে কীভাবে নামবো? কিংবা বস্তা কোথায় পাবো? অথবা গাড়ির ব্যবস্থা কোথায়? কোন ব্যবস্থাপনা নেই। আবার এইসব কাগজের কোন ক্ষতি , হারিয়ে গেলে কিংবা বৃষ্টিতে ভিজে গেলে তার দায় এই শিক্ষককেই নিতে হবে।
এ বিষয়ে বোর্ডের প্রধান পরীক্ষকের নিকট জানার জন্য যোগাযোগ করা হলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজী হননি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষক মোঃ শরীফুর রহমান আদিল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘গত কয়েকদিন আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয় একটা ছবি, যেখানে দেখা যায় ঢাকা বোর্ডের সামনে মাথায় এসএসসি পরীক্ষার খাতার বস্তা নিয়ে দাড়িয়ে আছেন একজন শিক্ষক। বোর্ডের ৪ তলা থেকে নিজে মাথায় করে নিচে আনার পরও যানবাহনের জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে হয় ঐ শিক্ষককে।’
‘এই দৃশ্য দেখার পরও মন্ত্রণালয় কিংবা বোর্ড পরীক্ষার খাতা আনা নেওয়া করানোর জন্য নিজস্ব কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। যা সত্যিই দুঃখজনক। এ বিষয়ে কী করা উচিৎ তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বোর্ডগুলোর উচিৎ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মতো পরীক্ষকদের নামে নামে খাতাগুলো ডাক কিংবা কুরিয়ারযোগে পাঠিয়ে দেওয়া এতে করে এইধরনের সমস্যার সমাধান সম্ভব। একইসাথে বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত যাতায়াত ভাড়া ৩০০ টাকা নিয়েও আর কোনও ক্ষোভ থাকবেনা ।’