একই পরিবারে প্রতিবন্ধী ৩ শিক্ষার্থী ভাতা পায়না কেউ

ঘাটাইল (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধিঃ |

টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলাা পৌরসভাধীন একটি গ্রাম ঘাটাইল পশ্চিম পাড়া। দিন মজুর জাহাঙ্গীর ও স্ত্রী বিনা বেগম দম্পতির তিন সন্তান মিলে পাঁচ সদস্যের পরিবারের বাস এই গ্রামে। আর এই পরিবারের কর্তাসহ চার সদস্যই প্রতিবন্ধী। বিনা বেগমের বয়স যখন ১০ ঠিক তখনই বাক প্রতিবন্ধী জাহাঙ্গীরের সাথে তার বিয়ে হয়। ২০ বছরের সংসার জীবন তাদের। বিয়ের ১০ বছর পর ঘর আলোকিত করে জন্ম নেয় প্রথম কন্যা সন্তান। তাদের সংসারে জন্ম নেয়া তিন সন্তান প্রত্যেকেই জন্ম থেকেই বাক ও শ্রবন প্রতিবন্ধী। বড় সন্তান জাহানারা (১৪), মেঝ সন্তান বিজয় (১০) ও ছোট সন্তান তানিয়া (০৭)। প্রতিবন্ধী হলেও লেখাপড়ায় পিছিয়ে নেই তারা। তিন ভাই বোনের মধ্যে জাহানারা ঘাটাইল এসই বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ৮ম শ্রেনীতে, ছোট ভাই বিজয় উপজেলার চাঁন্দশী প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ে ৫ম শ্রেনীতে এবং ছোট বোন তানিয়া একই বিদ্যালয়ে ২য় শ্রেণিতে পড়ে। তাদের মধ্য কেউ ভাতা পায়না। প্রতিবন্ধী হওয়া সত্বেও থেমে নেই পরিবারের প্রধান জাহাঙ্গীর, দিন মজুুরের কাজ করে যা পায় তা দিয়েই কোন রকম চলে যায় সংসার।

দারিদ্রের নির্মম কষাঘাতে জর্জরিত পরিবারটি সংগ্রাম করে জীবন-জীবিকা চালিয়ে যাচ্ছে। জীবনযুদ্ধে টিকে থাকা অদম্য চেষ্টারত পরিবারটির খোঁজ আজও কেউ নেয়নি। ভাগ্যে জুটেনি কোন সরকারি সাহায্য সহযোগিতা। সরকার কর্তৃক প্রতিবন্ধী ভাতার প্রচলন থাকলেও উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার দৃষ্টি আকর্ষণ হলেও ৪ জন প্রতিবন্ধীর মধ্যে ভাতা পায় মাত্র একজন। পরিবারের একজন ছাড়া আর কোনো সদস্যের নাম নেই ভাতার তালিকায়। খেয়ে না খেয়ে মানবেতর জীবন যাপনে বাধ্য হচ্ছে প্রতিবন্ধী পরিবারটি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,
পরিবারের একমাত্র স্বাভাবিক সদস্য সন্তানদের মা বিনা বেগম (৩০) বলেন, সন্তানদের বাবা বাক প্রতিবন্ধী হওয়ায় স্বাভাবিক কাজ কর্ম পেতে তার অনেক বিড়ম্ভনা পোহাতে হয়। আমার তিন সন্তানের সবাই ওর বাবার মতো বাক ও শ্রবন প্রতিবন্ধী। পুরো সংসারটাই চলে টেনে টুনে । মাঝে মাধ্যে পরিবারের সদস্যদের ভাগ্যে এক মুটো ভাত ও জুটেনা। আমার স্বামী একটি প্রতিবন্ধী কার্ড পেয়েছে বছরে পায় ৩ হাজার টাকা। কিন্তু তিন হাজার টাকায় এক বছরে কি হয়। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে অনেক কষ্টে খেয়ে, না খেয়ে কোনো মতে সংসার চলছে।

এ বিষয়ে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সানজিদা সুলতানা বলেন, ইতিমধ্যেই আমরা বিষয়টি জেনেছি। আশা করছি এই অর্থ বছরের মধ্যেই তাদের জন্য কোন একটি ব্যবস্থা করতে পারবো। তিনজন শিক্ষার্থী প্রতিবন্ধীর মধ্যে ১ জনকে ভাতা অথবা একজনকে প্রতিবন্ধী উপবৃত্তি দেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল কাশেম মুহাম্মদ শাহীন জানান, সরকারের পক্ষ থেকে ওই পরিবারকে যত প্রকার সেবা দেওয়া যায় তাদেরকে দেওয়া হবে। এ ব্যাপারে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তিনি জানান।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
প্রাথমিকে ১০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ জুনের মধ্যে: প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha প্রাথমিকে ১০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ জুনের মধ্যে: প্রতিমন্ত্রী পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা দাবি মাধ্যমিকের শিক্ষকদের - dainik shiksha পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা দাবি মাধ্যমিকের শিক্ষকদের ঝরে পড়াদের ক্লাসে ফেরাতে কাজ করছে সরকার - dainik shiksha ঝরে পড়াদের ক্লাসে ফেরাতে কাজ করছে সরকার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি, ভাইবোন গ্রেফতার - dainik shiksha প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি, ভাইবোন গ্রেফতার ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি - dainik shiksha ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন প্রায় শূন্যের কোটায় - dainik shiksha শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন প্রায় শূন্যের কোটায় ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে - dainik shiksha ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0023770332336426