এমপিও দুর্নীতি: সংস্থার তদন্ত প্রতিবেদনে যা আছে

নিজস্ব প্রতিবেদক |

এমপিওভুক্তিতে দুর্নীতির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের কতিপয় কর্মকর্তা ও কর্মচারি এবং জেলা ও উপজেলাভিত্তিক এমপিও দালালদের একাধিক চক্র গড়ে উঠছিল। এই চক্রকে ঘুষ না দিলে এমপিওভুক্ত হওয়া প্রায় অসম্ভব ছিল।  এইসব চক্র তছনছ করে এমপিওভুক্তিতে ঘুষ দুর্নীতি ও হয়রানি বন্ধ করতে ২০১৫ খ্রিস্টাব্দে এমপিওভুক্তি বিকেন্দ্রীকরণ ও অনলাইনে প্রক্রিয়াকরণ শুরু করে সরকার। কিন্তু সুফল মেলেনি। হয়রানি, ঘুষের হার ও স্তর বেড়েছে। এসব অভিযোগ নিয়ে সর্বাধিক প্রতিবেদন প্রকাশ হয় শিক্ষা বিষয়ক দেশের একমাত্র জাতীয় পত্রিকা দৈনিকশিক্ষায়। সম্প্রতি সরকারের একটি সংস্থার প্রতিবেদনে এমপিওভুক্তিতে কীভাবে দুর্নীতি হয়, কারা জড়িত, কারা ঘুষ দেয়, কারা ঘুষ দিয়েও স্বীকার করে না এসব তথ্য উঠে আসে। ঘুষ-দুর্নীতিরোধে কিছু মন্তব্য ও সুপারিশ করা হয়েছে সংস্থাটির প্রতিবেদনটিতে। দৈনিকশিক্ষার পাঠকের জন্য তা ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরা হবে এই কলামে।

কুমিল্লা জেলার যাদেরকে হয়রানি ও ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ নেয়া হয়েছে :
মুরাদনগরের বদিউল আলম ডিগ্রী কলেজের উদ্ভিদ বিদ্যার শিক্ষক মোঃ সুমন পাটোয়ারী, মোঃ হেলাল উদ্দিন, বাংলা শিক্ষক মোঃ আরিফ বিল্লাহ, ইংরেজি শিক্ষক বিরিন কুমার দাস, রসায়নের শিক্ষক মোঃ নজরুল ইসলাম মোল্লা, রাষ্ট্র বিজ্ঞানের শিক্ষক মল্লিকা সুলতানা, প্রাণী বিদ্যার শিক্ষক ফারহানা আযম, গণিতের মোঃ জাহাঙ্গীর আলম ও পদার্থ বিদ্যার শিক্ষক ইব্রাহিম রেজা। মনোহরগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজের কম্পিউটার বিদ্যার শিক্ষক মোয়াজ্জেম হোসেন ও বিজ্ঞানের শিক্ষক মোঃ কামরুল ইসলাম।

ফেনী জেলার যাদেরকে হয়রানি ও ঘুষ নেয়া হয়েছে: 

সদরের শিবপুর আরবীহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মোঃ আব্দুল হালিম, মজিদ মিয়ার বাগান দাখিল মাদ্রাসার সহকারি শিক্ষক মোঃ গিয়াস উদ্দীন, সামছুদ্দিন ভূঁঞা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মুক্তা ভৌমিক, গোবিন্দপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মোঃ জহিরুল আলম, আল জামেয়াতুল ফালাহহিয়া কামিল মাদ্রাসার সহকারি শিক্ষক মোঃ জিয়াউর রহমান| সোনাগাজীর এম এস হক উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক সুভদ্রা রানী, ভোরবাজার এ্যাড বেলায়েত হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মোঃ শাহ জালাল, আহম্মদপুর নরনবী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক জামশেদ আরা, আমিরাবদ বিসি লাহা স্কুল এন্ড কলেজের সহকারি শিক্ষক সত্যজিৎ ভৌমিক, চরসাহাভিখারী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আনোয়ার হোসেন, চরসাহাভিখারী কারামভিয়া দাখিল মাদ্রাসার সহকারি শিক্ষক মোঃ দেলোয়ার হোসেন, হাসানপুর শাহ আলম চৌধুরী হাইস্কুলের সহকারি শিক্ষক নয়ন দেবনাথ|

পরশুরাম পাইলট হাইস্কুলের সহকারি শিক্ষক তাহিদুল ইসলাম মজুমদার, শুথুমা কেবিএ আজিজ বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক সৈয়দ নজরুল ইসলাম, সুবার বাজার সিনিয়র মাদ্রাসার সহাকারি শিক্ষক মাজাহারুল করিম, তৌহিদ একাডেমীর সহকারি শিক্ষক কিবরুল করিম, সুবার বাজার সিনিয়র মাদ্রাসার সহকারি শিক্ষক আব্দুর রহিম, উত্তর কেতরাঙ্গা ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার সহকারি শিক্ষক আব্দুল মমিন, কালিকপুর বসারত উল্লাহ হাইস্কুলের সহকারি শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক ও রুনা লায়লা।

ফুলগাজী দারুল উলুম দাখিল মাদ্রাসার সহকারি শিক্ষক জীবন চন্দ্র দাস, হাসানপুর দারুল উলুম আলিম মাদ্রাসার সহকারি শিক্ষক শামিম রায়হান, জিএমহাট হাইস্কুলের সহকারি শিক্ষক সুমনা খানম, আনন্দপুর হাইস্কুলের সহকারি শিক্ষক হোসনেয়ারা আক্তার, বেগম খালেদা জিয়া মহিলা কলেজের প্রভাষক মোঃ সাইফুল ইসলাম।

দাগনভূঁঞা থানার সাপুয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক সুবর্ণা আচার্য্য, দাগনভূঁঞা আজিজিয়া ফাজিল মাদ্রাসার প্রভাষক জেবুন নাহার, মাইমনা আক্তার জাহানারা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক কোরবান আলী, ইয়াকুবপুর ইছাকিয়া এতিমখানা সিনিয়র মাদ্রাসার সহাকারি শিক্ষক মোঃ আব্দুল জলিল ও ফাজিলেরঘাট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক কিউএম মঞ্জুরুল আলম।

ছাগলনাইয়া থানার জাফর ইমাম আইডিয়াল হাইস্কুলের সহাকরি শিক্ষক মোঃ সালাউদ্দিন পাটোয়ারী ও মোঃ জামাল উদ্দিন। চাঁদগাজী হাইস্কুল এন্ড কলেজের সহাকারি শিক্ষক কামরুন্নাহার। নিজপানুয়া হাইস্কুলের সহাকারি শিক্ষক সাহিদা আক্তার ও মির্জানগর বাজার দালিখ মাদ্রাসার সহকারি শিক্ষক মোঃ সাফায়েত উল্লাহ।

সংস্থার তথ্যমতে, একই রকম অনিয়মের সঙ্গে জড়িত ফেনী জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ওয়ালীউল্লাহ, ফেনী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নুরুল আমিন, ছাগলনাইয়ার শিক্ষা অফিসার এ কে এম আলী জিন্নাহ, পরশুরাম উপজেলা শিক্ষা অফিসার শহিদুল করিম, ফুলগাজীর মো:এনামুল হক, সোনাগাজীর আল আমিন, দাগনভুয়ার দেওয়ান মো: জাহাঙ্গীর ও নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের শিক্ষা অফিসার সভ্রত রায়।

লক্ষীপুর জেলার যাদেরকে হয়রানি ও তিন হাজার থেকে সাত হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ নেয়া হয়েছে:

রায়পুরের দিঘীর পাড় সমাজ কল্যাণ উচ্চ বিদ্যালয়ের নুসরাত জাহান, সদরের দত্তপাড়া ডিগ্রী কজেলের গণিতের প্রভাষক মোঃ মাহমুদুল হক, দত্তপাড়া রাম রতন বহুমুখি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক( গণিত ও সাধারণ বিজ্ঞান) মাহমুদা নাসরিন পলি, লক্ষ্মীপুর বালিকা বিদ্যানিকেতনের সহকারি শিক্ষক(কৃষি) মো: আতিকুর রহামান, তেহারিগঞ্জের হোসেনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক নার্গিস আক্তার, সদরের মোহাম্মদ উল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহাকরী শিক্ষিকা(কৃষি) জিন্নাতআরা বিথী ও লাহারকান্দি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা(আরশাদুল ইসলাম)

টাঙ্গাইলের জেলা শিক্ষা অফিসার লায়লা খানম ও একই অফিসের অফিস সহকারি আবদুল আজিজ প্রসঙ্গে প্রতিবেদনে যা বলা হয়েছে: 

অভিযোগ: কাগজ-পত্র ঠিক থাকা সত্ত্বেও হয়রানীর উদ্দেশ্যে বারবার বিভিন্ন অজুহাতে ভুল ধরার চেষ্টা করা। জেলা শিক্ষা কার্যালয়ে ধাপে ধাপে পঞ্চাশ হাজার টাকা প্রদান করেও এমপিওভুক্ত করতে ব্যর্থ হয়।

মন্তব্য: এমপিওভুক্তিতে অনিয়ম-দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া গেছে এবং এমপিওভুক্তির প্রক্রিয়াতে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে।

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার চিতেশ্বরী এলাকার বংশাই স্কুল এন্ড কলেজের গণিত শিক্ষক সোহেল রানা গোয়েন্দা সংস্থাকে তথ্য দিতে অনীহা প্রকাশ করেছে।

তবে, প্রতিবেদন প্রকাশের ১৮ ফেব্রুয়ারি দৈনিকশিক্ষায় টেলিফোন করে লায়লা খানম দাবি করেছেন তিনি ঘুষ নেননি। তিনি দাবি করেন, তিনি শ্রেষ্ঠ জেলা শিক্ষা অফিসার নির্বাচিত হয়েছিলেন।

জামালপুর জেলা: জামালপুর সদরের তিতপল্ল্যার কাষ্টসিংগা ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার জুনিয়র মৌলভী শিক্ষক আসাদুল ইসলাম রুকনের কাছ থেকে ঘুষ নিয়েও এমপিওভুক্ত করা হয়নি। ঘুষ নেয়ার অভিযোগ জামালপুর সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোছা: আফরোজা বেগম ও অফিস সহকারি কাম কম্পিউটার অপারেটর মো: মোমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে।

তবে, দৈনিকশিক্ষায় ১৮ ফেব্রুয়ারি ইমেইলে পাঠানো এক প্রতিবাদলিপিতে অপারেটর মোমিনুল ইসলাম শিক্ষক আসাদুল ইসলামকে ‘এবেকবারেই গরিব ঘরের সন্তান’ হিসেবে উল্লেখ করে হেয় প্রতিপন্ন করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন। প্রতিবাদলিপিতে,  ‘মানবিক কারণে তার এমপিওভুক্তি হওয়া উচিত, কিন্তু সরকারি নীতির কাছে মানবিক কারণ অতি দূর্বল। তার এমপিওভুক্তির ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ ভিত্তিহীন’ দাবি করেন।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক মো: মাহাবুবুর রহমান দৈনিকশিক্ষাকে বলেন, প্রজাতন্ত্রের একজন কর্মচারি হয়ে একজন শিক্ষককে ‘গরীব ঘরের সন্তান’ ও ‘সরকারি নীতি দূর্বল’ মন্তব্য করা সরকারি কর্মচারিদের আচরণবিধির লঙ্ঘণ।লিখিত অভিযোগ পেলে মমিনুলের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ঘুষ নিয়ে এমপিওভুক্ত করা হয়েছে যে তিনজনকে:  শেরফুল আনসারী (দিলুজ মিয়া) প্রধান শিক্ষক জামালপুর উচ্চ বিদ্যালয়, জামালপুর।সাইদুর রহমান, প্রধান শিক্ষক, কৈডোলা উচ্চ বিদ্যলয় সদর। ইমদাদুল হক , সহকারী লাইব্রেরীয়ান, জাহানারা লতিফ মহিলা কলেজ, মেলান্দহ।

ঘুষ নিয়েও এমপিওভুক্ত করা হয়নি ‍যে দুইজনকে:  মশিউর রহমান, সহকারী শিক্ষক (বিজ্ঞান) ঝিল বাংলা সুগার মিল উচ্চ বিদ্যালয়, দেওয়ানগঞ্জ ও একই স্কুলের  সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) শফিকুল ইসলাম।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাজশাহী আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ-পরিচালক শারমীন ফেরদৌস চৌধুরী এমপিওভুক্তির জন্য গোপন সিন্ডিকেট তৈরি করেছেন। এই সিন্ডিকেটে রয়েছে অফিস সহকারি আজিজ ও আওয়াল। অবৈধ সুবিধার জন্য দরকষাকষি করেন।

অভিন্ন অভিযোগ উঠেছে রাজশাহীর গোদাগাড়ীর শিক্ষা অফিসার সামছুল কবির, তানোরের শিক্ষা অফিসার আমিরুল ইসলাম, বোয়ালিয়ার শিক্ষা অফিসার জাহিদ হোসেন, কম্পিউটার অপারেটর উজ্জ্বল, চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী আব্দুল মুকিমের বিরুদ্ধে। রংপুর আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোস্তাক হাবিবের অনিয়মের সহযোগী ড্রাইভার মহব্বত। ভোলা জেলার মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার প্রাণ গোপাল দে, চরফ্যাশন উপজেলার শিক্ষা অফিসার সামালগীর, চট্টগ্রামের মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জিয়াউল হুদা সিদ্দিকীর বিরুদ্ধেও আর্থিক সুবিধা নেওয়ার অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেছে।

 

 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল - dainik shiksha ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি - dainik shiksha সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ - dainik shiksha বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা - dainik shiksha ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস - dainik shiksha এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0054030418395996