এসএসসি বা দশম শ্রেণীর আগামী প্রি-টেস্ট ও টেস্ট পরীক্ষা নেয়া হবে কেন্দ্রীয়ভাবে। এসএসসি পরীক্ষার মতোই অভিন্ন প্রশ্নপত্রে হবে এ পরীক্ষা। ঢাকার প্রশ্নব্যাংক থেকে অনলাইনে পাঠানো হবে সেই প্রশ্নপত্র। এরপর তা নির্ধারিত পদ্ধতিতে স্কুল-মাদ্রাসায় খুলে পরীক্ষা নিতে হবে। বুধবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে আমরা এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নিতে চাচ্ছি অনলাইনে পাঠানো প্রশ্নপত্রের মাধ্যমে। অনলাইনে পাঠানো প্রশ্নে সরাসরি পাবলিক পরীক্ষা নিলে কেমন হবে তার পূর্ব-অভিজ্ঞতা দরকার। সেজন্যই এ আয়োজন করতে চাই। এতে ভুলত্রুটি, সীমাবদ্ধতা এবং প্রয়োজনীয়তাও আমাদের জানা হবে।’
তিনি বলেন, অনলাইনে প্রশ্ন পাঠিয়ে পরীক্ষা নেয়ার এ উদ্যোগ সফলভাবে প্রয়োগ হলে ২০১৯ সালের এসএসসি হবে একই পদ্ধতিতে। তখন আমরা আর প্রশ্ন ছাপাবো না। পরীক্ষার ৩০ মিনিট আগে তা পাঠানো হবে। সে অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।’
জানা গেছে, বুধবারের সভায় আরও বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত হয়েছে। এরমধ্যে অন্যতম হচ্ছে- পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে কেন্দ্রে ঢুকতে হবে। এরপর কোনো অজুহাতেই কাউকে ঢুকতে দেয়া হবে না। এছাড়া পরীক্ষা শুরুর সময় ইন্টারনেট বন্ধ রাখার ব্যাপারে সরকারের কাছে প্রস্তাবও দেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। পাবলিক পরীক্ষা অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে সুপারিশ প্রণয়নের জন্য গঠিত কমিটির এ সভায় সভাপতিত্ব করেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন। এতে একই বিভাগের অতিরিক্ত সচিব চৌধুরী মুফাদ আহমদ, ড. মোল্লা জালাল উদ্দিন, জাবেদ আহমেদ ও মোহাম্মদ জয়নুল বারী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব কাজী নাজির হোসেন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. এসএম ওয়াহিদুজ্জামান, ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. মাহাবুবুর রহমান, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. মোস্তাফিজুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই প্রোগ্রামের আইটি ম্যানেজার মো. আরফে এলাহী মানিক এবং বাংলাদেশ পরীক্ষা উন্নয়ন ইউনিটের ঊর্ধ্বতন বিশেষজ্ঞ রবিউল কবির চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। সভায় আসন্ন এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা সুষ্ঠু, নির্বিঘœ ও নকলমুক্ত পরিবেশে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থা হিসেবে প্রশ্নব্যাংক প্রস্তুত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রশ্নপত্র বহনের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা ট্যাপযুক্ত বিশেষ খামে পরিবহনের ব্যাপারে আলোচনা হয়। বহু সেট প্রশ্ন প্রস্তুত রাখা, নির্ধারিত সময়ের আগে প্রশ্ন না খোলা, পিন কোড ব্যবহার, অনলাইনে বা ইউএসবি ডিভাইসের মাধ্যমে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রশ্ন পাঠানো এবং পরীক্ষা শুরুর আগে থেকে কিছু সময়ের জন্য কেন্দ্র এলাকায় ইন্টারনেট বন্ধ রাখার ব্যাপারেও আলোচনা হয়। সভায় জানানো হয়, পরীকাক্ষা কেন্দে কেউ স্মার্ট ফোন ব্যবহার করতে পারবে না। শুধুমাত্র কেন্দ্র সচিব একটি সাধারণ ফোন ব্যবহার করতে পারবেন।