কীসের জোরে ঘুরে ফিরে বিতর্কিত শিক্ষা অফিসার নূর মোহাম্মদ আবারও ময়মনসিংহের ত্রিশালে? এমন প্রশ্ন এখন ত্রিশালের শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সকলের। উপজেলা শিক্ষা অফিসার নূর মোহাম্মদের কর্মে অতিষ্ঠ ও হয়রানির শিকার উপজেলার শিক্ষকেরা। তারই ফলশ্রুতিতে বিগত ২০১৫ খ্রিস্টাব্দের ২রা আগস্ট ত্রিশাল উপজেলার সকল শিক্ষকের আবেদনের প্রেক্ষিতে তাকে ময়মনসিংহেরই আরেক উপজেলা গৌরিপুর বদলি করা হয়। ঘুষ, দুর্নীতি, মহিলা শিক্ষকের উত্যক্ত করার অভিযোগে বিগত দুই বছরে পাঁচ বার বদলি করা হয় বিতর্কিত এই শিক্ষা কর্মকর্তাকে।
ময়মনসিংহের ত্রিশাল, গৌরিপুর, ফুলবাড়িয়া ও কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলায় দুই বছরে ঘুষ, দুর্নীতি ও নারী উত্যক্তের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিনি বদলি হয়েছেন।
তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, টাকা ছাড়া শিক্ষকের ছুটিসহ যাবতীয় পাওনা কাগজে তিনি স্বাক্ষর করেন না। প্রায় সব কর্মস্থলেই তার বিরুদ্ধে অনিয়মিত অফিস করার অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়া শিক্ষা কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ ত্রিশালে এসে উপজেলার দপ্তরী নিয়োগের নামে ঘুষ বাণিজ্য শুরু করে দিয়েছেন বলে বিভিন্ন অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে তার বদলির খবর শুনে ত্রিশাল উপজেলার সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৬’শ জন শিক্ষক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, সচিব, মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে তাদের স্বাক্ষর সম্বলিত আবেদন জানিয়েছেন। এ কারণে ত্রিশাল উপজেলার শিক্ষকরা চরম হুমকি ও হয়রানির মুখে রয়েছেন। ময়মনিসংহের নেতা ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের তদবিরের পরও সংশ্লিষ্টরা নিরবতা পালন করছেন।
বিতর্কিত উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদের খুটির জোর কোথায়? তার কর্মকান্ডের ফলে ২০০৫ খ্রিস্টাব্দ থেকে তিনি কোনো উপজেলায় ৫ থেকে ৬ মাসের বেশি থাকতে পারেন না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে বিলম্বিত করলে ৬’শ শিক্ষকের আবেদন, ধর্মমন্ত্রীর প্রত্যাশাসহ মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে বর্তমান সরকারের অঙ্গীকার ব্যাহত হবে।
এজন্য, বিতর্কিত নূর মোহাম্মদকে অবিলম্বে দুর্নীতির ছোয়া যেখানে নেই সেখানে সরিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রতি আহ্বান অতীতের সব ধরনের দুর্নীতির বিষয়ে তদন্ত করে প্রাথমিক শিক্ষাকে কলুষতামুক্ত করারও দাবি জানানো হয়েছে।
কয়েকটি বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সদস্যরা জানিয়েছেন, বর্তমান শিক্ষা বান্ধব সরকারের সকল অর্জন ম্লান করে দিচ্ছে এই বিতর্কিত কর্মকর্তা। ৬’শ শিক্ষকের যন্ত্রণা, দুঃখ-কষ্টের সাথে যুক্ত হচ্ছে ম্যানেজিং কমিটিসহ সচেতন অভিভাবকবৃন্দ। বিতর্কিত কর্মকর্তার প্রশ্চয়দাতা সরকারের ভাবমূর্তি ধুলোয় মিশিয়ে দিচ্ছেন। বিষয়টি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন ত্রিশালের শতাধিক ভুক্তভোগী শিক্ষকবৃন্দ।