প্রধান শিক্ষকের চলতি দায়িত্ব পেয়ে খুশী হওয়ার পরিবর্তে বিপাকে পড়েছেন ঢাকার ৮৭ জন শিক্ষক।
অনেক দূরত্বের স্কুলের প্রধান শিক্ষকের চলতি দায়িত্ব পেয়ে অনেকে বলেছেন এই আদেশ বাতিল না হলে চাকরি ছেড়ে দেবেন। মন্ত্রণালয়ের এক শ্রেণির আমলা হয়তো ইচ্ছে করেই হয়রানিমূলক এই পদায়ন দিয়েছেন বলে অভিযোগ শিক্ষকদের।
দীর্ঘদিন যাবত তারা যেসব স্কুলে সহকারি শিক্ষক হিসেবে চাকরি করে আসছিলেন সেখানেই অথবা তার কাছাকাছি কোনো স্কুলের প্রধান শিক্ষক পদে চলতি দায়িত্ব চেয়েছিলেন শিক্ষকরা কিন্তু তাদেরকে দেয়া হয়েছে অনেক দূরের স্কুলে। যেমন দনিয়ার এক শিক্ষককে প্রধান শিক্ষক পদে পদায়ন করা হয়েছে মিরপুরে।
ভুক্তভোগী শিক্ষকরা জানান, ২৩শে মে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপনে ঢাকা শহরের ৮৭ জন সহকারি প্রাথমিক শিক্ষককে প্রধান শিক্ষকের শূন্যপদে চলতি দায়িত্ব দেয়া হয়। ১লা জুনের মধ্যে যোগদান না করলে তারা ৪ই জুন থেকে স্ট্যান্ড রিলিজড বলে গণ্য হবেন। অনেকেই ওই আদেশ বাতিল করার চেষ্টা করছেন।
ফাতেমা খানম নামে এক শিক্ষক জানান, আমি দনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলাম। কিন্তু আমাকে প্রধান শিক্ষককের চলতি দায়িত্ব দিয়ে গুলশানের বড়বাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠান দুটি ঢাকা শহরের দুই প্রান্তে অবস্থিত।
বাংলাদেশ শিক্ষক অধিকার সুরক্ষা ফোরামের আহ্বায়ক মো: সিদ্দিকুর রহমান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, দীর্ঘ নয়বছর পদোন্নতি বন্ধ থাকায় ৮৭ জন শিক্ষকের বেশিরভাগেরই বয়স ৫৫ বছরের বেশি। অনেকেই ২০১৭ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে অবসর গ্রহণ করবেন। অথচ তাদের পদায়ন করা হয়েছে নিজ থানার বাইরে অনেকদূরের স্কুলে। একদিকে অধিকাংশ বয়স্ক নারী শিক্ষক। অপরদিকে যাতায়াত বাবদ প্রতিদিন ২০০/৩০০ টাকা খরচ করতে হবে। ঢাকা শহরের বিদ্যালয়ের সময়সূচি সকাল সাড়ে সাতটা থেকে। এই সময়ের মধ্যে স্কুলে পৌছে প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করা কঠিন হয়ে পড়বে।
তিনি আরো বলেন, যে ভালো উদ্দেশ্য নিয়ে চলতি দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে এমন পদায়ন আদেশের কারণে। অবিলম্বে এ পদায়নে বাস্তবসম্মত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষকরা। এতে মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা ধীরে ধীরে প্রাণহীন হয়ে পড়বে।
এবিষয়ে ঢাকা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শাহীন আরা বলেন, তালিকায় অন্তর্ভুক্ত বেশ কিছু শিক্ষকের নতুন পদায়ন স্থান নিয়ে কিছু বিতর্ক আছে বলে আমি ব্যাক্তিগতভাবে জানতে পেরেছি। ওই সব শিক্ষকদের দাবী তাদেরকে বর্তমান কর্মস্থল থেকে অনেক দূরে পদায়ন করা হয়েছে। তবে এ সংখ্যা খুবই সীমিত বলে আমি মনে করি। তারপরেও শিক্ষকদের তালিকাটি দেখে এবিষয়ে বিস্তারিত জানাতে পারবো।