৩৬তম বিসিএসের চূড়ান্ত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ কিন্তু পদ স্বল্পতার কারণে ক্যাডার পদে নিয়োগ না পাওয়া তিন হাজার ৩০৮ জনকে নন-ক্যাডারে নিয়োগ দেয়ার আগ্রহ নেই বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের। এসব প্রার্থীকে নন-ক্যাডারে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর শূন্যপদে নিয়োগ দিতে ইতোমধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কাছে শূন্য পদের তালিকা আহ্বান করা হলেও খুব একটা সাড়া পায়নি সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)।
এ জন্য গত ১১ জানুয়ারি ফের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কাছে শূন্য পদের তালিকা চেয়েছে সংস্থাটি। এর আগে ৫ সেপ্টেম্বর সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কাছে নন-ক্যাডারের শূন্য পদের ‘রিকুইজিশন’ আহ্বান করে পিএসসি। এতে তেমন সাড়া পায়নি সংস্থা।
এ ব্যাপারে পিএসসির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক গতকাল বলেন, ‘সাড়া পাওয়া যায়নি- বিষয়টি এরকম নয়। অনেক মন্ত্রণালয় ও বিভাগই আমাদের প্রয়োজনীয় শূন্য পদের তালিকা দিয়েছে। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমাদের চিঠিও দফতরগুলোতে যথাসময়ে পৌঁছে না বা দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের নজরে আসে না। এসব কারণে আবারও শূন্যপদের তালিকা আহ্বান করা হয়েছে। তাছাড়া আমরা চাই, চূড়ান্ত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ একজন মেধাবী প্রার্থীও যেন বঞ্চিত না থাকে, বাদ না পড়ে।’ গত ১৭ অক্টোবর ৩৬তম বিসিএসের চূড়ান্ত পরীক্ষার ফল প্রকাশ করে সরকারি কর্ম কমিশন। এতে মোট উত্তীর্ণ হয় পাঁচ হাজার ৬৩১ জন। এর মধ্যে দুই হাজার ৩২৩ জনকে বিভিন্ন ক্যাডারে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়।
ফলে সব প্রক্রিয়ায় উত্তীর্ণ হয়েও পদ স্বল্পতার কারণে তিন হাজার ৩০৮ জন চাকরিপ্রার্থীকে ক্যাডার পদে নিয়োগ দেয়া সম্ভব হয়নি। এসব প্রার্থীকে নন-ক্যাডারে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর পদে নিয়োগ দেয়া হবে।
গত ১১ জানুয়ারি সরকারের বিভিন্ন সচিবকে দেয়া এক ডিওতে (আধা-সরকারিপত্র) পিএসসি বলেছে, ‘৩৬তম বিসিএস লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ তিন হাজার ৩০৮ জন প্রার্থীকে পদ স্বল্পতার কারণে ক্যাডার পদে সুপারিশ করা সম্ভব হয়নি। মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদফতর ও পরিদফতরের নন-ক্যাডার প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর নিয়োগযোগ্য ৫০ শতাংশ শূন্য পদের তালিকা এবং নন-ক্যাডার পদে নিয়োগ (বিশেষ) বিধিমালা-২০১০ এর বিধি ৬ (ক) অনুযায়ী রাষ্ট্রীয় বিশেষ প্রয়োজনে ৫০ শতাংশের অধিক পদ পূরণের প্রয়োজন হলে তার যৌক্তিকতা উল্লেখপূর্বক শূন্য পদের তালিকা আগামী ৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কমিশনে প্রেরণের জন্য পুনরায় অনুরোধ করা হলো।’
এ ব্যাপারে ড. মোহাম্মদ সাদিক জানান, ‘৩৬তম বিসিএসে নন-ক্যাডারে নিয়োগের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রায় সাড়ে তিন হাজার শূন্য পদের তালিকা দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। সব পদে হয়তো নিয়োগ দিতে পারব না। কিন্তু আমরা চেষ্টা করব, বঞ্চিত প্রার্থীদের সবাইকে নন-ক্যাডারে নিয়োগ দেয়ার।’
বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে দেয়া পিএসসির চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, ‘৩৬তম বিসিএসের লিখিত ও মৌখিক উভয় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ কিন্তু পদ স্বল্পতার কারণে ক্যাডার পদে সুপারিশপ্রাপ্ত নন এমন প্রার্থীদের নন-ক্যাডার প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর পদে নিয়োগের বিষয়ে সরকারি কর্ম কমিশন সচিবালয়ের গত ৫ সেপ্টেম্বরের আধা-সরকারি পত্রে আপনার মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদফতরের ১ম ও ২য় শ্রেণীর নন-ক্যাডার শূন্য পদের তালিকা গত ২৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রেরণের জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল। তার পরিপ্রেক্ষিতে কোন রিকুইজিশন পাওয়া যায়নি। কমিশন মাত্র কয়েকটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ হতে স্বল্প সংখ্যক শূন্য পদের রিকুইজিশন পেয়েছে।’
সৌজন্যে: সংবাদ