ময়মনসিংহের নান্দাইলে দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে মোবাইল ফোনে বাজে ইঙ্গিত ও অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে এর অডিও রেকর্ড ছড়িয়ে দিয়েছেন উচ্চ বিদ্যালয়ের এক ইংরেজি শিক্ষক। এ ঘটনায় এলাকাবাসী ও অভিভাবকরা বিদ্যালয়ে গিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষককে কক্ষে তালাবদ্ধ করে বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করেন।
বিক্ষোভের মুখে অভিযুক্ত শিক্ষক ক্ষমা চেয়ে জনরোষ এড়ানোর চেষ্টা করেন। এ সময় প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ এনে প্রধান শিক্ষককে চড়-থাপ্পড় মারার ঘটনাও ঘটে। পরে পুলিশ গিয়ে শিক্ষকদের মুক্ত করে। গতকাল রবিবার উপজেলার কিসমত বনগ্রামের আব্দুল হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম তারেকুল ইসলাম। তিনি বিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষক।
প্রসঙ্গত, গত এসএসসি পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীদের নকলে সহায়তা করার অভিযোগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রধান শিক্ষক এনায়েত হোসেনকে হাতেনাতে ধরে নিজ অফিসে নিয়ে তিন ঘণ্টা বসিয়ে রেখেছিলেন। তাঁকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন ইউএনও। খবর পেয়ে স্থানীয় এমপির হস্তক্ষেপে তিনি ছাড়া পান।
বিদ্যালয় ও স্থানীয় সূত্র জানায়, আব্দুল হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়ে ভবনেই সকাল ও বিকেলে ব্যাচ করে প্রাইভেট পড়ান ইংরেজি শিক্ষক তারেকুল ইসলাম। সরকার থেকে শিক্ষকদের ওপর প্রাইভেট পড়ানোয় নিষেধাজ্ঞা থাকলেও প্রধান শিক্ষকের জ্ঞাতসারে বিদ্যালয়ে বসেই প্রাইভেট পড়ান তারেকুল। বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ওই ছাত্রী সকাল ৮টার প্রথম ব্যাচে তাঁর কাছে প্রাইভেট পড়তে যেত।
সম্প্রতি একদিন সকাল ৮টায় বিদ্যালয়ে প্রাইভেট পড়তে গিয়ে ওই ছাত্রী দেখে শিক্ষক ও অন্য সহাপাঠীরা আসেনি। একা হয়ে পড়ায় ওই ছাত্রী শিক্ষককে ফোন দিয়ে জানতে চায় তিনি আসবেন কি না। এ সময় শিক্ষক তারেকুল মেয়েটিকে খারাপ কিছু করতে এসেছে বলে ইঙ্গিত দেন। তিনি মেয়েটিকে খারাপ কাজ করতেই একলা এসেছে বলে নানা অশ্রাব্য ও অকথ্য ভাষা ব্যবহার করেন। এ সময় মেয়েটি ক্ষমা চাইলেও তিনি গালাগাল অব্যাহত রাখেন। সম্প্রতি এই গালাগালের অডিও রেকর্ড হাতে হাতে ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসী নিশ্চিত হন, মোবাইল ফোনের ওই কথোপকথনের পুরুষ কণ্ঠস্বরটি ইংরেজি শিক্ষক তারেকুল ইসলামের। এ নিয়ে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। তাতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে মানুষ। সাপ্তাহিক ছুটি শেষে গতকাল রবিবার শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও এলাকাবাসী আব্দুল হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করে।
এ ব্যাপারে তারেকুলকে প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রধান শিক্ষক এনায়েত হোসেন ভূঁইয়া। ঘটনাস্থলে উপস্থিত নান্দাইল মডেল থানার দ্বিতীয় কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল হান্নান বলেন, ঘটনাটি নিয়ে এলাকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে অবনতি না হয় সে কারণে তিনি পুলিশ নিয়ে ওই বিদ্যালয়ে গিয়েছেন।