ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও তাদের অবিভাবকদের ভোগান্তি কমাতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) প্রশাসনের সর্বশেষ মানবিক পন্থা শিওর ক্যাশের মাধ্যমে টাকা পরিশোধ করে ভর্তি। এতে শিওরক্যাশের সার্ভিজ চার্জ সর্বোচ্চ ৩০টাকা। এক টাকাও যদি কোনো এজেন্ট বা কেউ বেশি নেয় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে শিওরক্যাশ কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার দুটি এজেন্টের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে বলে দৈনিকশিক্ষাডটকমকে জানিয়েছেন শিওর ক্যাশের উর্ধবতন কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, কোনো এজেন্ট যদি ত্রিশ টাকার বেশি চায় তবে ভর্তিচছুরা অভিযোগ জানাতে পারেন রুপালী-ব্যাংক শিওরক্যাশের এই 09606224488 নম্বরে। শিওরক্যাশের সেলস টিমের সদস্যরা নিয়মিত মনিটর করছেন কেউ বেশি চার্জ করে কি-না।
জানা যায়, জবির ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে অনলাইনে সম্পন্ন হচ্ছে ১ম বর্ষের ভর্তি কার্যক্রম। রূপালী ব্যাংকের শিওর ক্যাশের মাধ্যমে নেওয়া হচ্ছে ভর্তির নির্ধারিত ফি। বিগত বছরগুলোর তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকেই শিক্ষার্থী, অভিভাবকদের ভোগান্তি কমাতেই এই উদ্যোগ গ্রহণ করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
দৈনিকশিক্ষার সঙ্গে আলাপকালে ভর্তিচ্ছু শারমিনের বাবা শহীদুর রহমান বলেন, ‘শিওরক্যাশ মাধ্যমে টাকা পরিশোধ ভালো পদ্ধতি। আমার কাছে নির্ধারিত ফি’র অতিরিক্ত দাবী করলে আমি ওই এজেন্টকে বলি শিওর ক্যাশের হটলাইনে অভিযোগ জানাবো। এ কথা শুনে ওই এজেন্ট আমার কাছে আর বেশি টাকা দাবী করেনি’
বরিশাল থেকে আসা ‘এ’ ইউনিটে ভর্তিচ্ছু হাবিবুর রহমনা দৈনিকশিক্ষাকে বলেন, ‘সদরঘাটে লঞ্চ থেকে নেমেই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এসেছি। এখানে টাকা জমা দিতে এসে দেখি ৩০ টাকার বেশি চার্জ করছে। পরে কিছুটা দূরে লক্ষীবাজারের এজেন্টদের মাধ্যমে টাকা জমা দেই্। তারা বেশি চার্জ করেনি।
হাবিব জানান, ‘আমার একজন আত্মীয় রয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব। তার কাছ থেকে শুনেছি শিওরক্যাশের মাধ্যমে ভর্তির যাবতীয় টাকা জমা দেয়া যাবে।’
শিওরক্যাশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও বুয়েটের সাবেক অধ্যাপক ড. শাহাদাত খান বলেন, ‘শিওরক্যাশ পেমেন্ট সিস্টেমে ব্যবহৃত সকল সফটওয়্যার ও প্রযুক্তি সম্পূর্ণভাবে বাংলাদেশে প্রস্তুত। আমাদের দেশের শিক্ষার্থীরাই তৈরী করেছে বিশ্বমানের সফটওয়্যার।’ ‘শত শত সরকারি স্কুল-কলেজের ভর্তি ফি শিওরক্যাশের মাধ্যমে নির্বিঘ্নে জমা দিয়ে স্বস্তি পাচ্ছেন ভর্তিচছু ও অভিভাবকরা। আমাদের অতীতের সাফল্য বিবেচনায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিওরক্যাশের মাধ্যমে ভর্তি ফি জমা দেয়ার ব্যবস্থা করার’।
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান জানান, প্রথম বর্ষে ভর্তির জন্য কোনো শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাসে এসে ভর্তি ফি জমা দিতে হবে না। দেশের যে কোনো প্রান্ত থেকে শিওরক্যাশের মাধ্যমে ঘরে বসে টাকা জমা দিলে প্রাথমিকভাবে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। পরবর্তীতে নির্ধারিত সময়ে শিক্ষার্থী প্রয়োজনীয় সকল মুল সনদপত্র বিভাগে জমা দিলেই চূড়ান্ত ভর্তি সম্পন্ন হবে। ভর্তি প্রক্রিয়ায় কোনোভাবে নির্ধারিত সময় পার হয়ে গেলে ভর্তি টাকা জমা দেওয়ার সুযোগ নেই। সিস্টেমের কারণে অন্য ছাত্র ওই আসন দখল করে নিবে। আবার কোনো শিক্ষার্থী টাকা জমা দিয়ে যদি মুল সনদ বা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা না দেয় তাহলে তার ভর্তি সংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়ে যাবে।