জাতীয়করণের অনশনে শিক্ষকের সংখ্যা বাড়ছে

সাঈদ হোসেন |

শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণের দাবিতে আমরণ অনশনে শিক্ষকের সংখ্যা বাড়ছে। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গত ১০ই জানুয়ারি বেসরকারি শিক্ষা জাতীয়করণ লিয়াঁজো ফোরামের ব্যানারে শিক্ষকরা অবস্থান ধর্মঘট শুরু করেন। দাবি আদায়ে সরকার থেকে কোনো আশ্বাস না পাওয়ায় ১৫ই জানুয়ারি থেকে আমরণ অনশন করছেন তারা। অনশনের তৃতীয় দিনে বুধবার সকালেও দেখা গেছে শিক্ষকরা দলে দলে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসছেন। আন্দোলন ফলপ্রসূ না করে কেউ ঘরে ফিরবেন না বলে জানিয়েছেন শিক্ষক নেতারা।

বেসরকারি শিক্ষা জাতীয়করণ লিয়াঁজো ফোরামের নেতা মোঃ নজরুল ইসলাম রনি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে এ বিষয়ে বলেন, ‘সারাদেশ থেকে শিক্ষকরা রওনা দিয়েছেন। আস্তে আস্তে শিক্ষকদের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে। ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষক, নন এমপিও শিক্ষকরা যেভাবে দাবি আদায় করে ঘরে ফিরেছেন আমরাও তেমনি জাতীয়করণের ঘোষণা না নিয়ে ফিরব না। তিনি বলেন, প্রতি বছর হাজার হাজার কোটি টাকা সরকারের বিভিন্ন খাতে অপচয় হচ্ছে। সেসব টাকা সঠিক ব্যবহার করলে জাতীয়করণ সম্ভব।

তিনি আরও বলেন, ‘আর দুএক দিন আমরা দেখব। যদি জাতীয়করণের ঘোষণা না আসে তাহলে আমরা কাফনের কাপড় পরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে রওনা হব শেষ বারের মত।’

সুনামগঞ্জ থেকে আসা বেসরকারি স্কুলের শিক্ষিকা সুচিত্রা চৌধুরী বলেন, ‘দেখতে দেখতে আমাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। শিক্ষকদের মর্যাদা ফিরিয়ে দিয়ে জাতীয়করণ করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’

নেত্রকোনারর আটপাড়া নাজিরগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও জাতীয়করণ মঞ্চের উদ্যোক্তা আবুল বাশার নাদিম বলেন, ‘কয়েকটা কারণে বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণ করা দরকার। প্রথমত, প্রত্যন্ত অঞ্চলে শিক্ষার বিস্তার। প্রতিষ্ঠান সরকারি হলে শিক্ষা ব্যয় কমে যাবে। ফলে কৃষক, শ্রমিক তাদের সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে আগ্রহী হবেন। শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়ার হার কমে আসবে। জাতীয়করণ হলে এভাবে শিক্ষার সামগ্রিক মান বাড়বে। এছাড়া জাতীয়করণ করতে সরকারকে অতিরিক্ত অর্থও খরচ করতে হবে না। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর অভ্যন্তরীণ সম্পদ থেকে বার্ষিক যে আয় হবে তাতেই সব খরচ উঠে আসবে।’

ময়মনসিংহ সদরের দাপুনিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আফজালুর রশিদ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমরা যদি বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর শিক্ষার দিকে তাকায় তাহলে দেখা যাবে তাদের শিক্ষার মান আমাদের চেয়ে অনেক উন্নত। তাই তাদের দেশও উন্নত। এজন্য বাংলাদেশকে উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে শিক্ষার মানোন্নয়নের বিকল্প নেই। আর সমগ্র শিক্ষা জাতীয়করণ ছাড়া শিক্ষার মানোন্নয়নও সম্ভব না।

‘শিক্ষাক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করেন শিক্ষকরা। কিন্তু তারা সবচেয়ে বেশি অবহেলিত। এসব অবহেলার কারণে শ্রেণিকক্ষে পাঠদানে বিরুপ প্রভাব পড়ছে। সব কিছু মিলিয়ে জাতীয়করণই একমাত্র সমাধান।

গত ১০ থেকে ১৪ই জানুয়ারি পর্যন্ত জাতীয়করণের দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে টানা পাঁচদিন অবস্থান ধর্মঘট পালন করেন বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারিরা। এরপর সোমবার (১৫ই জানুয়ারি) থেকে আমরণ অনুশন শুরু করেন তারা। মঙ্গলবার আমরণ অনশনের ছিল দ্বিতীয় দিন। জাতীয়করণের এক দফা দাবির প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করে এ পর্যন্ত ৬টি শিক্ষক সংগঠন একজোট হয়েছেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষক নেতারা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে যাবেন না বলেও জানান তারা।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
প্রাথমিকের শিক্ষকদের ফের অনলাইনে বদলির সুযোগ - dainik shiksha প্রাথমিকের শিক্ষকদের ফের অনলাইনে বদলির সুযোগ তীব্র তাপপ্রবাহের ভেতরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে রোববার - dainik shiksha তীব্র তাপপ্রবাহের ভেতরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে রোববার দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি নতুন শিক্ষাক্রম ও কিছু কথা - dainik shiksha নতুন শিক্ষাক্রম ও কিছু কথা কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে স্কুলে দুই শিফটের ক্লাস চালু রাখার সভা রোববার - dainik shiksha স্কুলে দুই শিফটের ক্লাস চালু রাখার সভা রোববার শিক্ষা কর্মকর্তার আইডি ভাড়া নিয়ে প্রধান শিক্ষকের বাণিজ্য - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার আইডি ভাড়া নিয়ে প্রধান শিক্ষকের বাণিজ্য শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে নিষিদ্ধ, মৌলবাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিন - dainik shiksha নিষিদ্ধ, মৌলবাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিন please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0025930404663086