এক ছাত্রীর ছবি তোলাকে কেন্দ্র করে বেসরকারি ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে ছাত্রদের মধ্যে সংঘর্ষ ও গোলাগুলিতে অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। সাভারে অবস্থিত বিএনপি-জামাতপন্থীদের মালিকানাধীন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই ছাত্রের মধ্যে ছবি তোলা নিয়ে প্রথমে বাকবিতণ্ডা হয়। তারপর বহিরাগতদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাতে সাভারের দত্তপাড়া এলাকায় অবস্থিত ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির স্থায়ী ক্যাম্পাসে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। বাকবিতণ্ডার ঘটনায় তুহিন নামে এক ছাত্র ক্যাম্পাসে গুলি ছুড়লে ছাত্ররা প্রতিবাদ জানান এবং রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন।তুহিনের সঙ্গে বহিরাগত সন্ত্রাসীরাও ছিলো বলে জানা যায়। বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা ক্যাম্পাসের সামনে থাকা তুহিনের মালিকানাধীন একটি ফাস্টফুডের দোকান ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন।
পরে সাভার মডেল থানা পুলিশ ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে ছাত্রদের ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির স্থায়ী ক্যাম্পাসের সামনে অবস্থিত তুহিন ফাস্টফুডে এক ছাত্রীর ছবি তোলাকে কেন্দ্র করে দুই ছাত্রের মধ্যে বাকবিতণ্ডার ঘটনা ঘটে।
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষক কামাল পাশা সাংবাদিকদের বলেন, সন্ত্রাসী হামলায় আহতদের উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর আলোচনা করে বহিরাগতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মহাসিনুল কাদের বলেন, যারা সন্ত্রাসী ও অস্ত্রধারী তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
২০০২ সালের ২৪ জানুয়ারি যাত্রা শুরু করে ড্যাফোডিল। বিএনপি-জামাত জমানার শিক্ষামন্ত্রী ড. এম ওসমান ফারুকের আপন বোন জামাই বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচায থাকার সুবাদে ওই সময়ে সব ধরণের সুবিধা পায় বিশ্ববিদ্যালয়টি। নানা অসঙ্গিত থাকলেও বিএনপিপন্থী কম্পিউটার ব্যবসায়ী সবুর খান ও তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী ওসমান ফারুকের ক্যারিশমায় বিশ্ববিদ্যালয়টি ভালো প্রতিষ্ঠানের তালিকাভুক্ত হয়। যুদ্ধাপরাধের তালিকাভুক্ত আসামী হওয়ায় গ্রেপ্তার এড়াতে বিদেশে রয়েছেন ওসমান ফারুক।
প্রথম বছরে অনুষদ ছিল মাত্র দুটি, ছাত্র-ছাত্রী ছিল ৬৮ জন। এখন ধানমণ্ডি, আশুলিয়া ও উত্তরায় তিনটি ক্যাম্পাস আছে। প্রধান ক্যাম্পাসটি ঢাকার মিরপুর রোডের ধানমণ্ডির শুক্রাবাদে। শিক্ষক আছেন ৬০০ জন। সাভারের আশুলিয়ায় ১৫০ একরেরও বেশি জায়গার ওপর স্থায়ী ক্যাম্পাস আছে। তাতে শিক্ষা, প্রশাসনসহ অনেক ভবন আছে। সব ছাত্র-ছাত্রীর জন্য আবাসিক সুবিধাও আছে।