ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে আজ মঙ্গলবার ভিসি অধ্যাপক আখতারুজ্জামানকে লাঞ্ছিত ও সেখানে অবস্থানকারী বাম ছাত্র সংগঠন ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দীনকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় জনসংযোগ দপ্তর থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। তদন্ত কমিটিকে যত দ্রুত সম্ভব প্রতিবেদন প্রদানের জন্য বলা হয়েছে।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে ঘটনার একটি বর্ণনাও দিয়েছে বিশ্ববিদ্যায় কর্তৃপক্ষ। এতে বলা হয়, মঙ্গলবার আনুমানিক বেলা ১২টায় উপাচার্য কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচির নামে বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র ও হাতিয়ার ব্যবহার করে উপাচার্য অফিসের তিনটি গেটের তালা ও শিকল ভেঙে তারা উপাচার্যের অফিস কক্ষের সামনে অবস্থান নেয়। তারা দুটি মাইকে অশোভন ও কুরুচিপূর্ণ ভাষা প্রয়োগ করে শিক্ষক, প্রক্টোরিয়াল বডির সদস্য এবং উপাচার্যকে উদ্দেশ্য করে অশালীন বক্তব্য প্রদান করতে থাকে। অফিস প্রাঙ্গণের বিভিন্ন স্থানে আপত্তিকর ও কুরুচিপূর্ণ দেয়াল চিত্র অংকন ও উক্তি লিখতে থাকে। এ সময় তাদের গণ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে একটি প্রতিনিধি দলকে উপাচার্যের কাছে বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য আহ্বান জানানো হয়। কিন্তু আহ্বানে সাড়া না দিয়ে তারা অশালীন বক্তব্য চালিয়ে যায় এবং অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড পরিচালনায় বাধা প্রদান করতে থাকে।
এতে বলা হয়েছে, উপাচার্য পূর্ব নির্ধারিত বোর্ড অব অ্যাডভান্সড স্টাডিজ সভায় সিনেট ভবনে যাওয়ার পথে উদ্ধত, উত্তেজিত এবং উচ্ছৃংখল আন্দোলনকারীরা আক্রমনাত্মক ভঙ্গিতে উপাচার্যের পথ রোধ করে। এ অবস্থায় উপাচার্য ধৈর্য্য ধরে তাদের বক্তব্য শোনেন এবং তাদের অভিযোগ তদন্ত প্রক্রিয়া চলছে উল্লেখ করে বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি তদন্ত সাপেক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করে দোষী যে-ই হোক তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার আশ্বাস দেন। আন্দোলনকারীরা সেই বক্তব্য প্রত্যাখান করে অশালীন ও আক্রমণাত্মক বক্তব্য প্রদান করতে থাকে। এক পর্যায়ে তারা উপাচার্যের প্রতি বলপ্রয়োগ ও আক্রমণ করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী, প্রক্টোলিয়াল বডির সদস্য এবং শিক্ষার্থীরা মানব বলয় তৈরী করে উপাচার্য মহোদয়কে তার কার্যালয়ে ফিরিয়ে আনে।
বিজ্ঞপ্তিতে এ ধরনের সহিংস কার্যক্রম পূর্ব পরিকল্পিত উল্লেখ করে আন্দোলনের নামে ধ্বংসাত্মক ও নাশকতামূলক ধারাবাহিক কার্যক্রমের আরও একটি বড় ধরনের অপপ্রয়াস বলে দাবি করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আন্দোলনের নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমে বাধা প্রদান, সহিংসতা এবং সম্পদের বিনাশ করে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনাকারীদের কাছে দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানানো হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যে কোনো নিপীড়নমূলক, সন্ত্রাসী ও নাশকতামূলক শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে উল্লেখ করা হয়।