যেখানে স্কুল-কলেজের মেয়েদের উত্ত্যক্ত করে বখাটে-দুর্বৃত্তরা সহজে পার পেয়ে যায়, সেখানে ঝালকাঠিতে সুজন সিকদার নামের এক বখাটের শাস্তি হওয়া কিছুটা হলেও স্বস্তিদায়ক।ঝালকাঠি প্রতিনিধির পাঠানো খবর থেকে জানা যায়, দশম শ্রেণির তিন ছাত্রী স্থানীয় মহিলা কলেজের সামনের একটি কোচিং সেন্টারে পড়ছিল। এ সময় বখাটে সুজন জানালা দিয়ে তাদের উত্ত্যক্ত করে। পরে বাসায় ফেরার সময় রাস্তায় তাদের পথরোধ করে সুজন। তখন তিন ছাত্রী ছেলেটিকে ধরে চড়-থাপ্পড় দেয়। এএসপি (সদর সার্কেল) ঘটনাটি সিসি ক্যামেরায় দেখে দ্রুত সেখানে পুলিশ পাঠালে ছাত্রীরা সুজনকে তাদের হাতে তুলে দেয়। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) ভ্রাম্যমাণ আদালত সুজনকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।
ছাত্রীদের ভাষ্য অনুযায়ী, বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসার সময় অনেকেই ইভ টিজিংয়ের শিকার হলেও আগে কেউ এভাবে প্রতিবাদ করেনি। সুজনের ঘটনায় যে তিনটি মেয়ে প্রতিবাদ করেছে, তাদের সাহসের তারিফ করতে হয়। আমরা তিন কন্যাকে এ কারণে অভিনন্দন জানাই যে তাদের দেখাদেখি অন্য মেয়েরাও প্রতিবাদ করতে শিখবে। এতে সেসব বখাটে খামোশ হবে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) বলেছেন, ঈদ উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় শহরের প্রতিটি মোড়ে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে বলে বখাটে সুজনকে ধরে বিচার করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু অন্য সময় যখন সিসি টিভি থাকবে না, তখন কী হবে? সব সময়ই যেন বখাটেদের নিবৃত্ত করা যায়, সেই উপায় বের করতে হবে। এ ক্ষেত্রে সব সময় সিসি ক্যামেরা বসানো একটি প্রতিকার হতে পারে। কিন্তু প্রকৃত কাজটা করতে হবে সমাজ ও প্রশাসনকেই।
সাজাপ্রাপ্ত সুজন জেলখানা থেকে বেরিয়ে এসে যাতে ফের একই কাজ করতে না পারে, সে ব্যাপারেও প্রশাসনকে সজাগ থাকতে হবে। সর্বোপরি তিন সাহসী কন্যাকে পূর্ণ নিরাপত্তা দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে সুজনের অভিভাবকদের সহায়তা প্রয়োজন। অপরাধ বন্ধের কাজটি শুরু করতে হয় ঘর থেকেই। সুজনের মা–বাবা নিশ্চয়ই চাইবেন না তাঁদের সন্তান মেয়েদের উত্ত্যক্তকারী হিসেবে সমাজে চিহ্নিত হোক।
সৌজন্যে: প্রথম আলো