ডিগ্রি কলেজের তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সম্ভাবনা ফের কমেছে। ১৫৩ জনের এমপিওভুক্তির বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা অধিদপ্তরের আইন উপদেষ্টার মতামত আমলে নেয়নি এমপিও কমিটি। এমপিও না হওয়ার শর্ত সাপেক্ষে ডিগ্রি কলেজে তৃতীয় শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়ে বছরের পর বছর যাবত শিক্ষকতা করে আসছেন তারা। আবার এমনই শতাধিক শিক্ষক অন্যভাবে এমপিওভুক্ত হয়েছেন।
জানা যায়, বিভিন্ন কলেজের ২৪টি রিট মামলায় হাইকোর্টের রায়ের আলোকে অধিদপ্তরের আইন উপদেষ্টার মতামত এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা নুসরাত জাবীন বানু স্বাক্ষরিত আদেশে ১৫৩ জনকে এমপিওভুক্ত করার কথা বলা হয়। কিন্তু মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. এস এম ওয়াহিদুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত নভেম্বর মাসের এমপিও কমিটির সভায় তা নাকচ হয়। আজ ২০ নভেম্বর অধিদপ্তরের সভাকক্ষে এমপিও কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় একাধিক পরিচালক ও উপ-পরিচালক দৈনিকশিক্ষায় প্রকাশিত প্রতিবেদন ‘তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তি: মন্ত্রণালয়ের আত্মঘাতি আদেশ!’ নিয়ে আলোচনা করেন।
একাধিক সূত্রমতে, পরিচালক ও উপ-পরিচালকগণ সভায় এই মর্মে মতামত ব্যক্ত করেন যে, আপীল বিভাগ ১৫৩ জনের এমপিওভুক্তির বিষয়টি সরকারের বিবেচনার ওপর ছেড়ে দিয়েছেন। যেহেতু একই প্রকৃতির ১০২ জন তৃতীয় শিক্ষককে অধিদপ্তরই এমপিওভুক্ত করেছেন সেই আলোকে বিষয়টি বিবেচনা করার কথা বলেছেন সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগ। আজকের সভার শুরুতে মহাপরিচালক বিষয়টি প্রথমেই বাতিল করে দেন। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা নুসরাত বানুর কথা আমলে নেয়নি এমপিও কমিটি। অধিদপ্তরের আইন শাখার আবুল কাসেমের যুক্তিও ধোপে টেকেনি।
এমপিও কমিটির একজন সদস্য বলেন, সবশেষে সিদ্ধান্ত হয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আইন শাখার মতামত নেয়ার। এ বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্ট বিভাগ নয় বরং আপীল বিভাগের রায় ও পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী কাজ করা বাধ্যতামূলক। এর অন্যথা হলে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আইনের মুখোমুখি হতে হবে। মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা ও অধিদপ্তরের আইন শাখার একজন কর্মকর্তা গোঁজামিল দিয়ে ১৫৩ জনকে এমপিওভুক্ত করাতে উদগ্রীব। হাইকোর্টের রায়ে ১৫৩ জনকে নিয়োগের দিন থেকে এমপিওভুক্ত করাতে বললেও আপীল বিভাগ তা নাকচ করে দিয়ে বিষয়টি সরকারের বিবেচনার জন্য বলেছেন। সরকার চাইলে চলতি নভেম্বর মাস থেকে তাদেরকে এমপিওভুক্ত করতে পারেন। তবে, সেক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের আইন সেলের মতামত লাগবে। অধিদপ্তরের এমপিও কমিটি সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।
একজন পরিচালক আক্ষেপ করে বলেন, ‘মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কতিপয় কর্মকর্তা ১৫৩ জন শিক্ষককে এই মর্মে ভুল বুঝিয়েছেন যে হাইকোর্টের দেয়া আদেশবলেই তাদেরকে এমপিওভুক্তি করিয়ে দেয়া হবে। বাস্তবে, হাইকোর্টের দেয়া আদেশ আপীল বিভাগে টেকেনি। আপীল বিভাগ বিষয়টি সরকারের বিবেচনার ওপর ছেড়ে দিয়েছে। কিন্তু দূর্ভাগ্যজনক হলো কতিপয় কর্মকর্তা ও কর্মচারী ভুক্তভোগী শিক্ষকদের ভুল বুঝিয়ে আসছেন বছরের পর বছর যাবত। তাদেরকে সান্তনা দিয়ে টুপাইস কামিয়েছেন কতিপয় কর্মকর্তা ও কর্মচারী।