চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে দুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনের একাংশ ভেঙে পুকুরে পড়ে গেছে। ফলে শ্রেণিকক্ষ-সংকটের কারণে এসব বিদ্যালয়ে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। এর মধ্যে একটি বিদ্যালয়ে বিকল্প ব্যবস্থায় পাঠদান করা হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শাহরাস্তি উপজেলার চিতোষী পূর্ব ইউনিয়নের পানচাইল ও তেতৈশ্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পুরোনো ভবন ভেঙে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে একাধিকবার লিখিত আবেদন করেছে। কিন্তু আজও নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়নি।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘বিদ্যালয় দুটি সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি। এ দুটিসহ শাহরাস্তি উপজেলায় ২৪টি বিদ্যালয়ের ভবন ঝরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ। এসব বিদ্যালয়ের তালিকা উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি এসব বিদ্যালয়ে দ্রুত ভবন নির্মাণের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে তালিকা পাঠানো হয়েছে।’
সরেজমিনে দেখা গেছে, পানচাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মূল ভবনের তিনটি কক্ষ। পশ্চিম পাশের কক্ষটি ভেঙে পাশের পুকুরে পড়ে গেছে। অবশিষ্ট দুটি কক্ষের একটিতে দাপ্তরিক ও আরেকটি কক্ষে পাঠদান কার্যক্রম চলে। তেতৈশ্বর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুরোনো ভবনের পেছনের অংশের দুটি কক্ষের দেয়াল ও মেঝে ভেঙে পুকুরে পড়ে গেছে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ টিন ও কাঠ দিয়ে ভাঙা অংশ ঢেকে রেখেছে। চালের টিনগুলো ঝরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে।
পানচাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিখিল চন্দ্র ভট্টাচার্য বলেন, তাঁর বিদ্যালয়ে প্রায় দুই শ শিক্ষার্থী আছে। মূল ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় মাঠের দক্ষিণ পাশে টিনশেড ভবনের দুটি শ্রেণির কার্যক্রম চলে। তিনি আরও বলেন, বিদ্যালয়ে একটি নতুন ভবন নির্মাণের জন্য একাধিকবার শিক্ষা কর্মকর্তাসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দপ্তরে আবেদন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে তেতৈশ্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মঞ্জুমা বেগমের সঙ্গে চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে এ বিষয়ে এলাকাবাসী বলেন, বিদ্যালয়ে চারটি কক্ষের মধ্যে দুটিই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ কারণে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করতে সমস্যা হচ্ছে। এখানে দুই শ শিক্ষার্থী আছে। বিদ্যালয়ের পুরোনো ভবন ভেঙে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য প্রধান শিক্ষক একাধিকবার উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেছেন।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) শাহরাস্তি উপজেলা কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী মাইনুল ইসলাম বলেন, ‘বিদ্যালয় দুটি আমরা পরিদর্শন করেছি। ভবন দুটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, স্থানীয় সাংসদ মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম (বীর উত্তম) বিদ্যালয় দুটিতে দুটি নতুন ভবন নির্মাণের জন্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আধা সরকারি পত্র (ডিও লেটার) পাঠিয়েছেন।