দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) হাতে আটক বরখাস্তকৃত রাজশাহী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার জামিন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) দুপুরে কারাগার থেকে তাকে রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে (০১) হাজির করা হয়। এ সময় তার পক্ষে জামিনের আবেদন জানান অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান মিঠু। শুনানি শেষে তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের (০১) বিচারক মাহাবুবুর রহমান।
রাজশাহী কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক আবুল হাশেম জানান, আদালতের নির্দেশে আটক শিক্ষা কর্মকর্তাকে বিকেলে আবারও কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনীর বৃত্তি নিয়ে জালিয়াতির অভিযোগে সাময়িকভাবে বরখাস্ত হওয়া রাজশাহী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কাশেমকে আটক করে দুদক।
সোমবার (২১ আগস্ট) বিকেল ৪টার দিকে পুলিশ লাইনের সামনে থেকে তাকে আটক করা হয়।
পরে বিকেল ৬টার দিকে তাকে রাজপাড়া থানায় সোপর্দ করেন দুদক কর্মকর্তারা। আটকের পর দুদকের রাজশাহী বিভাগীয় উপ-পরিচালক (ডিডি) শেখ ফায়াজ আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, একজন শিক্ষা কর্মকর্তা হয়েও তিনি কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বৃত্তি নিয়ে বড় ধরনের অনিয়ম করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এজন্য তাকে আটক করে রাজপাড়া থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে সোমবার (২১ আগস্ট) সকালে তার বিরুদ্ধে থানায় মামলাও দায়ের করা হয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক তরুণ কান্তি ঘোষ বাদী হয়ে নগরীর রাজপাড়া থানায় মামলাটি দায়ের করেন। দুদকের এ কর্মকর্তাই আবুল কাশেমকে আটক করেন। এর আগে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের বিভাগীয় তদন্তেও বৃত্তি জালিয়াতির ঘটনাটির প্রমাণ মিলেছে। তাই শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কাশেম সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন।
এর আগে ২০১৫ সালের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় ৪০ জন শিক্ষার্থীর নম্বর বাড়িয়ে দিয়ে তাদের বৃত্তি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কাশেমের বিরুদ্ধে । এ নিয়ে খবর প্রকাশের সূত্র ধরে বিষয়টি তদন্ত শুরু করে দুদক। তদন্তে দুদকের কাছে অভিযোগটির সত্যতার প্রমাণ মেলে। এ জন্য আবুল কাশেমের বিরুদ্ধে থানায় মঙ্গলবার সকালে মামলা করা হয়।
সাবেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কাশেমের বাড়ি নগরীর ভদ্রা এলাকায়। প্রাথমিকের বৃত্তিতে
ফল জালিয়াতির অভিযোগটি এর আগে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরও তদন্ত করে।
সেখানেও এ জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পড়েছে। পরে এ ঘটনায় ওই ৪০ শিক্ষার্থীর বৃত্তি বাতিল করা হয়। পরবর্তী সময়ে এ জালিয়াতির ঘটনায় আবুল কাশেমসহ তিন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলাও দায়ের হয়। এর পরই আবুল কাশেমকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছিল।