ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর সদর উপজেলাস্থ এস.এম.পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষা কেন্দ্র।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.শরিফুল ইসলাম স্থানীয় সাংবাদিকদের নিয়ে চলতি ৫ম শ্রেনীর সমাপনী পরীক্ষা পরিদর্শনের চিত্র ঘুরে ঘুরে দেখাচ্ছিলেন।এক পর্যায়ে সাংবাদিকসহ ইউএনও-এর নজর পড়লো একটি পরীক্ষা কক্ষে ফুটফুটে এক ছাত্রী তার পরীক্ষার বেঞ্চে মাথা সমতল করে ঠুকে ঠুকে বেশ কষ্ট করে অবিরাম লিখে যাচ্ছে।
এরপর,তার স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বলে জানা যায় বিস্তারিত।মেয়েটির নাম আরজিনা বেগম।সিএনজি চালক দরিদ্র পরিবারের মেয়ে সে।পড়াশুনায় ভারী ঝোক।স্কুল কামাই করেনা একদিনও।১ম শ্রেনী হতে ৫ম শ্রেনী পর্যন্ত বরাবরই ভালো রেজাল্ট করে আসছে।উপজেলার দশদোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে অংশ নেয়া চলতি প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায়ও ভালো করবে বলে জানায় সে।
আরজিনার পিতা রিপন মিয়া জানায়,বেশ কয়েক বছর ধরে সে চোঁখে কম দেখতে শুরু করে।চিকিৎসার অভাবে ধীওে ধীরে তা এমন পর্যায়ে এসছে যে,বর্তমানে পরীক্ষার প্রশ্নটি তার চোখের খুব কাছে আনলে সে তা ক্ষীণ আকারে দেখতে পায়।আরজিনার মা জানান,গত সেপ্টেম্বরে ঢাকায় ইসলামিয়া হাসপাতালে চোখের ডাক্তার দেখালে বলেন,তার চোখের রেটিনা নষ্ট হয়ে গেছে।এ ছাড়া আরো সমস্যা আছে।সবকিছু ঠিক করতে বেশ অর্থ ব্যায় করতে হবে।
আরজিনার আজ পরীক্ষা শেষে জানায়,-‘আমার পড়তে ও লিখতে খুব কষ্ট হয়।কিন্তু আমি পড়ালেখা চালিয়ে যেতে চাই।পৃথিবীর সৌন্দয্য উপভোগ করতে চাই।প্রতিবন্ধীরাও যে পরিবার ও দেশের বোঝা না হয়ে সম্পদ হতে পারে,তা আমি পড়াশুনা করে প্রমান করতে চাই।
বাঞ্ছারামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও তার স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো.মাইনুদ্দিন মাষ্টার বলেন,-‘আরজিনার চোখের দৃষ্টি শক্তি দিন দিন কমে যাওয়া এবং স্কুলসহ পরীক্ষার বেঞ্চে ঠুকে ঠুকে লিখার কারনে তার বাম গালে কালসে দাগ পড়ে গেছে।সমাজের বিত্তবানরা তাকে সাহায্য করলে হয়তো সে দেশের সম্পদ্ হয়ে উঠবে’।