যমুনা নদীতে তৃতীয় দফায় পানি বৃদ্ধির ফলে প্রচণ্ড ঘূর্ণাবর্তের সৃষ্টি হয়ে সিরাজগঞ্জের চৌহালীতে ২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।
সেই সঙ্গে যমুনার পশ্চিমপাড় এনায়েতপুরের ৫টি গ্রাম জুড়ে আবারও শুরু হয়েছে নদীভাঙন। এতে শিক্ষার্থীসহ হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন।
তবে এখনও শুরু হয়নি ভাঙনরোধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ। যমুনার থাবা থেকে ঘর-বাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ফসলি জমি রক্ষায় দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি ভুক্তিভোগীদের।
শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, যমুনা বিধ্বস্ত চৌহালী উপজেলার খাষপুখুরিয়া ইউনিয়নের খাষদেলদারপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) ভোরে নদীতে বিলীন হয়ে যায়। একই ইউনিয়নে বীরবাউনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সম্প্রতি নদীগর্ভে চলে গেছে। এতে দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় সাড়ে ৫শ কোমলমতি শিক্ষার্থীকে দুর্ভোগে পড়ে চালিয়ে যেতে হচ্ছে পড়াশোনা। ভাঙন অব্যাহত থাকলে চৌহালী উপজেলার প্রায় ১১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নদীতে বিলীনের আশঙ্কা রয়েছে।
যমুনার পশ্চিমপাড় এনায়েতপুর থানা সদরের ব্রাহ্মণগ্রাম, আড়কান্দি চর, পাকুর তলা, বাওখোলা ও পাচিল গ্রামের নদী তীরবর্তী এলাকায় চলছে ভাঙন। পানি বৃদ্ধির পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় দেড় হাজার ঘর-বাড়ি, শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও বহু ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে এখনও নেয়া হয়নি ভাঙনরোধে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা। এলাকাবাসীর অভিযোগ নদী ভাঙনরোধে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতাদের জানিয়েও এনায়েতপুরের দক্ষিণ থেকে পাচিল পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৫ কিলোমিটার এলাকায় জিওব্যাগ অথবা পাথর ফেলে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি পাউবো।
এভাবে ভাঙন অব্যাহত থাকলে দেশের সর্ববৃহৎ এনায়েতপুর কাপড়ের হাট, খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বিশ্ববিদ্যালয়, তাঁত কারখানা ও কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে।
খাষ দেলদারপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলতাব হোসেন বলেন, যমুনা নদীতে স্কুল ভবন, বাথরুম ও টিউবয়েল নদীগর্ভে চলে গেছে। সামনে সমাপনী পরীক্ষার্থীসহ শিক্ষার্থীদের পাঠদান নিয়ে মারাত্মক সমস্যায় পড়েছি। স্কুলটি স্থানান্তর করে নতুন ভবন নির্মাণ দাবি জানাচ্ছি।
চৌহালী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর ফিরোজ বলেন, ভেঙে যাওয়া স্কুল দুটির শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতে কথা চিন্তা করে অন্য স্থানে পাঠদান চালু রাখা হয়েছে। তবে নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর নতুন ভবন নির্মাণে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। নতুন ভবন নির্মাণ হলে শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ কমে যাবে।
এ বিষয়ে বুধবার বিকেলে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান ইমাম জানান, এনায়েতপুরের দক্ষিণাঞ্চলে নদী ভাঙনের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে ভাঙনরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।