নব্য জাতীয়কৃত শিক্ষকদের নন-ক্যাডার করার পক্ষে মত শিক্ষাবিদের

নিজস্ব প্রতিবেদক |

নব্য জাতীয়কৃত কলেজ শিক্ষকদের বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারে অন্তর্ভূক্ত না করে স্বতন্ত্র অর্থাৎ নন-ক্যাডার রাখার মত দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক।

বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির করা এক রুলের শুনানিতে মতামতের জন্য হাইকোর্ট তিনজনকে অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। হাইকোর্টের আহ্বানে মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে মতামত দেন তিনি। তিন অ্যামিকাস কিউরি হচ্ছেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন ও অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক এবং আইনজীবী ব্যারিস্টার কামাল উল আলম।

তার মতামত দেওয়া শেষে বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহ’র হাইকোর্ট বেঞ্চ এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য ১৮ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছেন ।

মতামত দেওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের এই সাবেক শিক্ষক বলেন, আমি প্রথম কথা বলেছি যে, সরকারের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়। জাতীয় স্বার্থে জাতীয়করণ করা খুব ভাল কাজ। দ্বিতীয় কথা, এখানে জটিল একটা সমস্যা। কারণ বিসিএস পরীক্ষা দিয়ে রেগুলার সাবজেক্টে যারা আসছেন এবং প্রাইভেট পরীক্ষা দিয়ে যারা আসছেন তাদের চাকরিগত সুযোগ সুবিধা, সিনিয়রিটি, এগুলো নিয়ে সমস্যা আছে। এই সমস্যার সমাধান সরকারকেই করতে হবে। কিন্তু এই সুযোগে সুপ্রিমকোর্টের একটা পরিচ্ছন্ন রায় দেয়া উচিত।

অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, এই মূলনীতির কথা আমি যতটা বুঝেছি তাতে বলেছি, দুইটা স্ট্রিমকে স্বতন্ত্র রাখা উচিত। স্বতন্ত্র রাখা ভাল হবে। ভবিষ্যতে আরও এই ধারায় জাতীয়করণের বিষয়টি ভিন্নধারায় আসবে। আর যারা বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে আসবে তাদের সিনিয়রিটি তাদের সুযোগ সুবিধা এটা যথাসম্ভব অপরিবর্তিত রাখতে হবে। আর যারা নতুন আসছেন তাদের মর্যাদা, তাদের আর্থিক সুযোগ সুবিধা যত দূর সম্ভব সরকার সব থেকে বেশিই দেবেন। কারণ তারা তো আগেই থেকেই বঞ্চনার মধ্যে আছে।সেই বঞ্চনা যতটা কাটানো যায়।

গত ৩০ নভেম্বর নন-ক্যাডার রাখার দাবীতে বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের এক রিটে এক আইনজীবী ও দুই শিক্ষাবিদকে অ্যামিকাস কিউরি (আদালতকে আইনি সহায়তাকারী) হিসেবে নিয়োগ দেন হাইকোর্ট।

বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির পক্ষে করা রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সালাউদ্দিন দোলন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাপস কুমার বিশ্বাস।
৩০ নভেম্বর তাপস কুমার বিশ্বাস জানান, সরকার ২০০০ সালের রুলস অনুযায়ী জাতীয়করণ কলেজের শিক্ষকদের আত্তীকরণ করছেন। এ বিষয়ে একটি পক্ষ রিট করেছেন। এ রিটের শুনানিতে আদালত তিনজনকে অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন।

সালাউদ্দিন দোলন জানান, বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের নিয়োগ না দিতে ২০১৬ সালে একটি রিট করা হয়। ওই রিটে রুলও জারি করেন হাইকোর্ট। এ রুল শুনানিতে মতামতের জন্য হাইকোর্ট তিনজনকে অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, ২০০০ সালে তৈরি করা আত্তীকরণ বিধিমালা অনুসরণ করে জাতীয়করণ করা বেসরকারি কলেজের শিক্ষকদের বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারে আত্তীকরণ করে আসছে সরকার। সরকারের এমন সিদ্ধান্তে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে আন্দোলন করছেন ক্যাডারভুক্ত শিক্ষকরা।

জাতীয়করণের তালিকাভুক্ত ২৮৩ কলেজ শিক্ষকদের  একজন দৈনিকশিক্ষাকে বলেন, তিনি সৈয়দপুর থেকে প্লেনে চড়ে আজ সকালে ঢাকায় পৌঁছেছেন আবুল কাসেম ফজলুল হককে কিছু তথ্য দেয়ার উদ্দেশ্যে। ফজলুল হক তাকে জানিয়েছিলেন যে, নব্য জাতীয়কৃতদের বিষয়ে তিনি ততটা অবগত নন। তাই কিছু তথ্য-উপাত্ত দরকার।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0028440952301025