নিম্নমানের কাগজে ছাপা পাঠ্যবই যাচ্ছে স্কুলে!

নিজামুল হক |

আগামী শিক্ষাবর্ষের বিনামূল্যের পাঠ্যবই নিম্নমানের কাগজে ছাপার অভিযোগ উঠেছে। একই সঙ্গে ছাপার মান নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। ছাপার জন্য যে কালি ব্যবহার করেছে তা-ও নিম্নমানের। এসব অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় ইতোমধ্যে কয়েকলাখ বই বাজেয়াপ্ত করেছে পাঠ্যবই তদারকির দায়িত্বে থাকা জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)।

এনসিটিবির এক কর্মকর্তা জানান, প্রতিদিনই লাখ লাখ বই দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় যাচ্ছে। যার অনেক বই নিম্নমানের কাগজে ছাপা হয়েছে, কালিও নিম্নমানের। এগুলো দেখা হচ্ছে না। এনসিটিবির সে সক্ষমতাও নেই। এছাড়া কাগজের মান দেখার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলোও সেগুলো গুরুত্ব সহকারে দেখছে না। ফলে নিম্নমানের বই জেলা-উপজেলার স্কুলে চলে যাচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পাঠ্যবই ছাপার শর্তে চার রঙের বইয়ের কাগজে ‘গ্রামস পার স্কয়ার মিটার’ (জিএসএম) ৮০ শতাংশ ও ব্রাইটনেস ৮৫ শতাংশ থাকার কথা উল্লেখ রয়েছে। এছাড়া এক রঙের বইয়ে জিএসএম হবে ৬০ শতাংশ ও ব্রাইটনেস হবে ৬৫ শতাংশ। কিন্তু বাতিল হওয়া বইয়ে জিএসএম ও ব্রাইটনেস নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে কম রয়েছে।

বইয়ের মান দেখার দায়িত্বে থাকা এনসিটিবি’র সিনিয়র এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘পি’ আদ্যক্ষরের নামে একটি প্রেসে নিম্নমানের ও কম ব্রাইটনেসের কাগজে বই ছাপার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ কারণে ওই প্রতিষ্ঠানের ২ লাখ পাঠ্যবই বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া রাজধানীর তেজগাঁওয়ের একটি প্রেসে গিয়ে ১৫ হাজার বই কেটে দিয়েছেন এনসিটিবির কর্মকর্তারা। এই প্রেসটির বিরুদ্ধে অভিযোগ তারা নিম্নমানের কাগজে বই ছেপেছে। এছাড়া এনসিটিবি ছাপার জন্য রাখা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রায় ২ হাজার টন কাগজও বাতিল করেছে। এ ব্যাপারে এনসিটিবির সদস্য ড. রতন সিদ্দিকী বলেন, শিক্ষার্থীদের হাতে যথাসময়ে বই দেওয়া হবে। কেউ যাতে নিম্নমানের কাগজে বই ছাপতে এবং পৌঁছাতে না পারে সে বিষয়ে আমরা সতর্ক রয়েছি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

২০১৭ শিক্ষাবর্ষের বই সম্পর্কে এমন মূল্যায়ন করতে গিয়ে এই অভিভাবক আরো বলেন, খারাপ বই দেওয়ার পরও ওই সব প্রেস মালিকদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। হয়তো ২০১৮ শিক্ষাবর্ষেও নিম্নমানের কাগজে বই দেবে। আমরা নিরুপায়।

প্রেস মালিকরা যা বলেন : এদিকে নিম্নমানের বইয়ের জন্য এনসিটিবিকে দায়ী করছেন প্রেস মালিকরা। তারা বলছেন, কিছু প্রতিষ্ঠান এনসিটিবির সংশ্লিষ্ট কিছু কর্মকর্তাকে আর্থিক সুবিধা দিয়ে নিম্নমানের বইকে ভালো বই হিসাবে ছাড়পত্র দিচ্ছে, যার ফলে ভুক্তভোগী হবে শিক্ষার্থীরা। এর আগে প্রাথমিকের বইয়ের কাগজের মান দেখার দায়িত্বে থাকা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কন্টিনেন্টাল একাধিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিম্নমানের কাগজ ব্যবহারের অভিযোগ জানালেও ওই সব প্রেস মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি এনসিটিবি। প্রেস মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প সমিতির সভাপতি তোফায়েল খান বলেন, আমরা এজন্য এনসিটিবিকে দায়ী করবো।

 

সৌজন্যে: ইত্তেফাক


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন - dainik shiksha জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো - dainik shiksha ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা - dainik shiksha তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণ ও ‘বিশ্ব বই দিবস’ - dainik shiksha স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণ ও ‘বিশ্ব বই দিবস’ শিক্ষার মান পতনে ডক্টরেট লেখা বন্ধ জার্মান পাসপোর্টে - dainik shiksha শিক্ষার মান পতনে ডক্টরেট লেখা বন্ধ জার্মান পাসপোর্টে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0063931941986084