নড়াইলে কলেজের অধ্যক্ষ ও সভাপতির বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

নড়াইল প্রতিনিধি |

নড়াইলের কালিয়া উপজেলার পিরোলী হাবিবুল আলম বীরপ্রতীক কলেজের অধ্যক্ষ আবু রেজা মোল্যা ও সভাপতি শেখ নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে প্রায় ২৭ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কলেজের সাবেক অভিভাবক সদস্য মোল্যা টিপু সুলতান দুদকসহ বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

লিখিত অভিযোগে জানা যায়, কালিয়া উপজেলার পেড়লী এলাকায় অবস্থিত হাবিবুল আলম বীরপ্রতীক কলেজের অধ্যক্ষ ও সভাপতি যোগসাজশে বিভিন্ন প্রকল্পের অনিয়ম, দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ, নিয়ম বহির্ভূতভাবে প্রতিষ্ঠানের মালামাল বিক্রিসহ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ব্যবহারিক ফি নিয়েছেন।

সূত্রে জানা যায়, গত জুনে কলেজ মাঠ ভরাটকল্পে ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয় থেকে ৪৫ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ করা হয়। যার বাজার মূল্য ১৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এ ব্যাপারে বালু ব্যবসায়ী কালিয়ার বিষ্ণুপুর গ্রামের আমিরুল ইসলাম জানান, কলেজ মাঠ ভরাট বাবদ তাকে এক লাখ ২০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে।

কলেজের সাবেক অভিভাবক সদস্য মোল্যা টিপু সুলতান বলেন, কলেজ মাঠ ভরাটের কাজে ১৫ লাখ টাকার বেশি বরাদ্দ হলেও নামমাত্র টাকার বালি ভরাট করে বাকি টাকা অধ্যক্ষ ও সভাপতি আত্মসাৎ করেছেন। এ কাজে কালিয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শাহিনুর ইসলামও জড়িত ছিলেন।

কলেজ বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য মুক্তিযোদ্ধা আলী আহম্মদ খান বলেন, খড়ড়িয়ার ইমাম হোসেন তুষারের ৫০ হাজার টাকার অনুদানও অধ্যক্ষ ও সভাপতি আত্মসাৎ করেন।

বাস্তবায়ন কমিটির অপর সদস্য মুক্তিযোদ্ধা মুন্সি মোস্তফা কামাল ও জিন্নাত শেখ জানান, কলেজের নতুন ভবন নির্মাণের জন্য দুই কক্ষের পাকা ল্যাট্রিন, টিনশেডের দুটি শ্রেণিকক্ষ এবং শহীদ মিনার ভাঙতে হয়। এখানে দুই লক্ষাধিক টাকার ইট, খোয়া, রড ও টিন বিক্রি করে সেই টাকা আত্মসাৎ করেন কলেজ অধ্যক্ষসহ সভাপতি।

এদিকে কলেজ বাস্তবায়ন কমিটির অপর সদস্য মুক্তিযোদ্ধা আতিয়ার রহমান, লাহুয়ার রহমান সিকদার, শেখ আজিজুল হক ও কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিষয়ের প্রভাষক আলমগীর হোসেন জানান, প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে নিয়ম বহির্ভূতভাবে কলেজ ব্যবহারিক পরীক্ষা বাবদ ২০০ থেকে ৫০০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে। ২০১৭ সালের এইচএসসি পরীক্ষায়ও ৯৯ হাজার টাকা ওঠানো হয়েছে ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে, যে টাকার কোনও হিসাব নেই। ব্যবহারিক পরীক্ষা বাবদ এ পর্যন্ত প্রায় ৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। এছাড়া প্রশংসাপত্র বাবদ শিক্ষার্থী প্রতি ১০০ টাকা করে নেওয়া হয়। এক্ষেত্রে প্রায় ৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ হয়েছে। অধ্যক্ষ আবু রেজা মোল্যা এসব টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির ব্যাপারে অধ্যক্ষ আবু রেজা মোল্যা বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ করা হয়েছে, তা ভিত্তিহীন। কলেজ মাঠ বরাদ্দের বিষয়টি সভাপতি ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বলতে পারেন।’ আর ব্যবহারিক পরীক্ষা ও প্রশংসাপত্র বাবদ অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।

কলেজ সভাপতি শেখ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘কলেজ মাঠ ভরাটের ক্ষেত্রে কোনও অনিয়ম হয়নি। প্রতিপক্ষের লোকজন বিরোধিতা করে এসব বানানো কথা বলছেন।’

কালিয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শাহিনুর ইসলাম বলেন, ‘কলেজের মাটি ভরাটের ক্ষেত্রে কোনও অনিয়ম হয়নি। যাচাই-বাছাই করে মাটি ভরাটের বিল দেওয়া হয়েছে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ - dainik shiksha আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.018129110336304