প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দ ৮৪ মিলিয়ন ডলারের হদিস নেই

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

নিউইয়র্ক সিটির প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সেবা প্রদানের জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে ৮৪ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করেছিল শিক্ষা বিভাগ। কিন্তু এই অর্থের কতটা অংশ নির্ধারিত কাজে ব্যয় হয়েছে, তার কোনো হিসাব শিক্ষা বিভাগের কাছে নেই। ২৮ আগস্ট প্রকাশিত এ-বিষয়ক এক নিরীক্ষা প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয় বলে নিশ্চিত করেছে নিউইয়র্ক ডেইলি।

প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য শারীরিক, মানসিক, বাক ও শ্রবণ থেরাপি প্রদানের জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে ৮৪ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করে নিউইয়র্ক সিটির শিক্ষা বিভাগ। কিন্তু এই বিপুল বরাদ্দ সম্পর্কে কোনো হিসাব উপস্থাপন করতে শিক্ষা বিভাগ ব্যর্থ হয়েছে বলে জানান নিউইয়র্ক সিটির কম্পট্রোলার স্কট স্ট্রিংগার। তিনি বলেন, ২০১৬ সালে বরাদ্দকৃত এই অর্থ কোন খাতে কত ব্যয় হয়েছে, সে সম্পর্কে শিক্ষা বিভাগ সুস্পষ্ট হিসাব দিতে পারেনি। অর্থাৎ, ভুয়া চিকিৎসা ও সেবার বিপরীতে শহর কর্তৃপক্ষ প্রচুর বাজে ব্যয় করেছে, যা নিশ্চিতভাবে করদাতাদের অর্থের অপচয়।

নিউইয়র্ক ডেইলিকে তিনি বলেন, ‘বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য আমাদের সেরাটাই করা উচিত। তাদের সেবার মান নিয়ে সমঝোতার কোনো সুযোগ নেই। কিন্তু নিম্নমানের তদারকি ও ভুয়া লেনদেনের তথ্য বলছে, এ ক্ষেত্রে নিউইয়র্ক সিটির শিক্ষা বিভাগ যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করছে না।’

২৮ আগস্ট স্ট্রিংগার ২০ পৃষ্ঠার নিরীক্ষা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। এতে নিউইয়র্ক সিটি কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন লেনদেনের হিসাব পর্যালোচনা করা হয়। মূলত বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের বিদ্যমান আইন অনুযায়ী সেবা প্রদান করা হচ্ছে কি না, তা-ই খতিয়ে দেখা হয় নিরীক্ষার মাধ্যমে। এতে বিদ্যমান ব্যবস্থায় বিস্তর ফাঁকির হদিস পান নিরীক্ষা কর্মকর্তারা। তাঁরা জানান, বহু অর্থের অপচয় করা হয়েছে। সঙ্গে রয়েছে জালিয়াতির মতো ঘটনাও, যা শেষ পর্যন্ত বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদেরই ঝুঁকিতে ফেলছে।

এ বিষয়ে স্ট্রিংগার বলেন, ‘প্রাপ্তবয়স্ক আমলারা এমন কিছু সংকটাপন্ন শিক্ষার্থীর বিপরীতে বরাদ্দকৃত অর্থ অপচয় ও অপব্যবহার করছেন, যা সত্যিই হৃদয়বিদারক। এমনকি কী পরিমাণ অর্থের অপচয় করা হয়েছে, সে সম্পর্কেও ওয়াকিবহাল নয় শহর কর্তৃপক্ষ। এটি খুবই দুঃখজনক।’

নিরীক্ষায় অন্তত ৩ হাজার ঘটনার কথা উঠে এসেছে, যেখানে শহর কর্তৃপক্ষ ভুয়া লেনদেন করেছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে একই কাজের জন্য একাধিকবার অর্থ প্রদান করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে। এভাবে মোট ১ লাখ ৩১ হাজারেরও বেশি অর্থ অপচয় করা হয়েছে। আর ভুয়া লেনদেন করা হয়েছে প্রায় ১ মিলিয়ন ডলারের।

এ বিষয়ে শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তারা নিউইয়র্ক ডেইলিকে বলেন, বিষয়টি নিয়ে শিক্ষা বিভাগ পৃথক তদন্ত করছে। কোনো নিয়ম লঙ্ঘন ও জালিয়াতির প্রমাণ পেলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় শিক্ষা বিভাগের মুখপাত্র টয়া হোলনেস বলেন, ‘শিক্ষা বিভাগ নিরীক্ষা প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করেছে। প্রাথমিকভাবে প্রতিবেদনে উল্লিখিত পরামর্শগুলোর সঙ্গে সহমত নয় শিক্ষা বিভাগ। এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের অনিয়ম আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়নি। এ ক্ষেত্রে একটি পৃথক তদন্ত পরিচালনা করা হবে। কোনো অনিয়মের প্রমাণ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
দেরিতে এসে স্বপ্নভঙ্গ গুচ্ছে ভর্তিচ্ছু অনেকের - dainik shiksha দেরিতে এসে স্বপ্নভঙ্গ গুচ্ছে ভর্তিচ্ছু অনেকের নবম পে-স্কেল বাস্তবায়নসহ ৭ দাবিতে সরকারি কর্মচারীদের মানববন্ধন - dainik shiksha নবম পে-স্কেল বাস্তবায়নসহ ৭ দাবিতে সরকারি কর্মচারীদের মানববন্ধন কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে জগদীশ চন্দ্র বসুর নামে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে সম্মতি প্রধানমন্ত্রীর - dainik shiksha জগদীশ চন্দ্র বসুর নামে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে সম্মতি প্রধানমন্ত্রীর প্রধান শিক্ষককে লাঞ্ছিতের অভিযোগে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি গ্রেফতার - dainik shiksha প্রধান শিক্ষককে লাঞ্ছিতের অভিযোগে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি গ্রেফতার শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ নিজের শিক্ষককে নিয়ে শ্রেণিকক্ষে ঢাবি শিক্ষক, প্রশংসায় ভাসছে ফেসবুক - dainik shiksha নিজের শিক্ষককে নিয়ে শ্রেণিকক্ষে ঢাবি শিক্ষক, প্রশংসায় ভাসছে ফেসবুক please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0048470497131348