প্রশ্ন ফাঁসের বাজার

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

বাজার আছে হরেক রকমের। ভালো বাজারের উল্টো দিকে আছে কালোবাজার। আর এই কালোবাজারের নতুন সংযোজন প্রশ্নপত্র ফাঁসের বাজার। পরীক্ষার মৌসুমে কোটি টাকা লেনদেন হয় এই বাজারে। কর্মকর্তা-কর্মচারী, ছাত্র-ছাত্রনেতা, শিক্ষক, কোচিং সেন্টার, প্রেসের কর্মচারী—এঁরাই এ বাজারের নিয়ন্ত্রক। আর ক্রেতা ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থী, চাকরিপ্রার্থী ও তাঁদের অভিভাবক। প্রশ্নপত্র ফাঁসের এই বাজারে প্রযুক্তি সবচেয়ে বড় মাধ্যম।

সম্প্রতি প্রশ্নপত্র ফাঁস ও পরীক্ষায় জালিয়াতির সঙ্গে যুক্ত সন্দেহে ছাত্রলীগের ২ নেতাসহ ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করার পর পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কর্মকর্তারা এসব তথ্য জেনেছেন। এই ১৪ জনের মধ্যে ১০ জনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তাঁদের ৫ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

সিআইডির একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস ও পরীক্ষায় জালিয়াতির বেশ কয়েকটি চক্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। যার মধ্যে দুটি চক্রের সন্ধান পেয়েছেন তাঁরা। এর একটির হোতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র নাভিদ আনজুম। তাঁকে ১৪ নভেম্বর রংপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। আরেকটির হোতা বিকেএসপির সহকারী পরিচালক (বরখাস্ত) অলিপ বিশ্বাস পলাতক।

জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান গতকাল বুধবার রাতে বলেন, ‘গোয়েন্দাদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের পারস্পরিক সহযোগিতায় এই চক্র ধরা হয়েছে। এই চক্র ধরার কারণেই গত ২০ অক্টোবরের ভর্তি পরীক্ষা থেকে বড় বাঁচা বেঁচে গেছি। এ বিষয়ে আমাদের অবস্থান কঠোর।’
শিক্ষাব্যবস্থায় যত বেশি পরীক্ষা বাড়ছে, ততই বাড়ছে প্রশ্নপত্র ফাঁসের এই বাজার। বিভিন্ন চাকরি ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার ঠিক আগের রাতে ক্যাম্পাসে কান পাতলেই শোনা যায় এই বাজারের নানা সংকেত। ‘এই, তুই পাইছিস’, ‘কোনো লিংক আছে’, ‘কত চায়’—এ রকম ছাড়া ছাড়া খুদে বার্তা বিনিময় হয় আগের রাতে। গত ২০ অক্টোবরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার আগের রাতে সন্দেহভাজনদের মুঠোফোনে এমন বার্তা বিনিময়ের তথ্য পেয়েছে সিআইডি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সিআইডি সূত্রগুলো বলছে, ভর্তি বা চাকরির বড় পরীক্ষার আগের রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো ও ফেসবুকে প্রশ্ন খোঁজাখুঁজি করেন অনেকে। প্রশ্নপত্র পাওয়া যেতে পারে এই আশায় অনেকে পরীক্ষার আগের দিনই ক্যাম্পাসে চলে আসেন। রীতিমতো কোটি টাকার প্রশ্নপত্র ফাঁস আর জালিয়াতির ‘ইন্ডাস্ট্রি’ গড়ে বসে আছে কয়েকটি চক্র। একটি ফাটকা বাজারে যত রকমের উপকরণ থাকে, তার সবই রয়েছে এই বাজারে। ক্রেতা, বিক্রেতা, দালাল, সেবাদানকারী সবাই এখানে কাজ করেন কঠোর গোপনীয়তা রক্ষা করে। এর মাঝ থেকেও কখনো টাকা মার যায়, কখনো তথ্য ফাঁস হয়ে যায়।

সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্যা নজরুল ইসলাম গতকাল বলেন, তদন্তে ছোট-বড় অনেকের নাম আসছে। কাউকেই ছেড়ে কথা বলা হবে না।
সিআইডির তদন্তে জানা যায়, গত বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা থেকে নাভিদের আয় ছিল ৫০ লাখ টাকার বেশি। পরীক্ষার এক ঘণ্টা আগে কেন্দ্র থেকে প্রশ্নপত্র পেয়েছিলেন তিনি। এরপর প্রশ্নপত্র বেচে, কার্ড আকৃতির ফোনের মাধ্যমে জালিয়াতি করে তিনি এ অর্থ উপার্জন করেন।

কর্মকর্তারা বলছেন, ওই প্রশ্নপত্র ফাঁস ও জালিয়াতির বাজারের সদস্যরা (মার্কেট প্লেয়ার) জানেন ধরা পড়লেও কারও কিছু হবে না। অতীত বলছে, প্রশ্নপত্র ফাঁস করে ধরা পড়লে কারও সাজা হয় না।

দৈনিক বার্তার হিসাবে, ২০১০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন পরীক্ষায় জালিয়াতি ও প্রশ্নপত্র ফাঁস করতে গিয়ে ধরা পড়া ৭০টি ঘটনায় ‘পাবলিক পরীক্ষা (অপরাধ) আইনে’ মামলা হলেও কারোরই সাজা হয়নি। তবে এবার কেবল ‘পাবলিক পরীক্ষা আইন’ নয়, সিআইডি মানি লন্ডারিং আইনে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এ বছরের ঘটনার শুরুটা ছিল গত ২০ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার আগের রাতে শহীদুল্লাহ্‌ হল থেকে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসম্পাদক মহিউদ্দীন (পরে বহিষ্কৃত) এবং অমর একুশে হলের নাট্য ও বিতর্কবিষয়ক সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুনকে গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে। তাঁদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সিআইডি বাকিদের গ্রেপ্তার করে।

সিআইডি বলছে, মহিউদ্দীন ও মামুন মূলত ছাত্রলীগ নেতার পরিচয় কাজে লাগিয়ে ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থী জোগাড় করতেন। শিক্ষার্থীদের সনদ জমা রেখে তাঁদের বাবা-মায়েদের সঙ্গে অলিখিত চুক্তি হয়। এরপর মহিউদ্দীন এই শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব তুলে দিতেন অলিপ বিশ্বাস নামের বিকেএসপির এক সহকারী পরিচালকের (বর্তমানে বরখাস্ত) হাতে। অলিপ ২০১২ সাল থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁস ও জালিয়াতির ব্যবসা করছেন। আর মামুনের চক্রের হোতা হলেন নাভিদ আনজুম। নাভিদ এ কাজে যুক্ত হন ২০১৩ সালে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস ও জালিয়াতির ঘটনায় করা মামলার তদন্ত তদারককারী সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিনহাজুল ইসলাম বলেন, গণমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার পর অলিপ গা ঢাকা দেওয়ায় ওই চক্রটির বিষয়ে বিস্তারিত অনেক কিছুই এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। তবে অলিপের দুটি ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে। যেখানে কোটি টাকার লেনদেন পাওয়া গেছে।

কর্মকর্তারা বলেন, প্রাথমিকভাবে তাঁদের প্রশ্নপত্র ফাঁসের চারটি উপায় জানা গেছে। সরাসরি প্রেস থেকে, প্রশ্ন বহনকারী সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা বা কর্মচারী, পরীক্ষার কেন্দ্রে প্রশ্নপত্র যাঁরা নাড়াচাড়া করেন সেই কর্মকর্তা বা কর্মচারী এবং কোচিং সেন্টারের মাধ্যমে প্রশ্নপত্র প্রণয়নে যুক্ত শিক্ষকদের সঙ্গেও তাঁদের যোগাযোগ রয়েছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে।
পরীক্ষার আগের রাতে প্রশ্নপত্র পাওয়া গেলে ব্যবসা বেশি হয়। তবে ধরা পড়া বা প্রশ্ন পাল্টে যাওয়ার ঝুঁকিও থাকে। বেশির ভাগ প্রশ্নপত্র পাওয়া যায় পরীক্ষার দিন খুব সকাল বা ভোরে। এক চক্র আরেক চক্রের কাছেও প্রশ্নপত্র বেচে বা ‘ক্যান্ডিডেট ধরে দেয়’।

ডিভাইস, সলভার আর কল সেন্টার কর্মকর্তারা বলছেন, অলিপ ও নাভিদ দুজনেই অনলাইনের আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ক্রেডিট কার্ড আকৃতির ফোন কিনেছেন। যেগুলোকে তাঁরা বলেন ‘ডিভাইস’। ওই ফোনগুলোর সঙ্গে থাকে কানের ভেতরে লুকিয়ে রাখা যায় এমন ছোট আকারের তারবিহীন (ব্লুটুথ) ইয়ারপ্লাগ বা বাগ। চিকন ডিভাইসটি শরীরের কোথাও লুকিয়ে রেখে ইয়ারপ্লাগটি কানের ভেতরে ঢুকিয়ে রাখলে বাইরে থেকে বোঝা কঠিন।

কার্ড ফোন দিয়ে জালিয়াতির জন্য তিনটি ধাপ। এগুলো হলো পরীক্ষার আগে প্রশ্নপত্র ফাঁস করা বা পরীক্ষার হল থেকে প্রশ্নপত্র বাইরে পাঠানো, প্রশ্নের সমাধান করা ও উত্তরগুলো আবার ফোনে পরীক্ষার্থীদের কাছে পাঠানো। চুক্তি করার পর পরীক্ষার আগেই ওই ফোনগুলোতে সিম কার্ড ঢুকিয়ে সেগুলোর ব্যবহার সম্পর্কে পরীক্ষার্থীদের ধারণা দেওয়া হয়। তাঁদের সিম কার্ড নম্বরগুলো কেবল চক্রের হোতারাই জানেন। চুক্তির ভিত্তিতে পরীক্ষার্থীদের সুবিধার জন্য তাঁরা আগে থেকে একাধিক পাতানো বা ডামি পরীক্ষার্থী নিয়োগ করতেন। পরীক্ষার্থীরা ভেতর থেকে যেকোনোভাবে পরীক্ষা শুরুর পরপরই সব কটি সেটের প্রশ্নপত্রের ছবি তুলে হোয়াটসঅ্যাপ বা মেসেঞ্জারে অলিপ বা নাভিদের কাছে পাঠিয়ে দেন। তাঁরা বাইরে প্রস্তুত থাকেন ১০ থেকে ২০ জনের একটি প্রশ্ন সমাধানকারী (সলভার) দল নিয়ে। প্রথম বর্ষের মেধাবী ছাত্রদের এ কাজে নিয়োগ করা হয়। প্রশ্নপত্রটি সঙ্গে সঙ্গে কয়েকটি প্রিন্ট নেওয়া হয়। সমাধানকারীরা নিজেদের মধ্যে প্রশ্নের বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান ও সাধারণ জ্ঞানের অংশগুলো ভাগ করে ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যেই সমাধান করে ফেলেন। সমাধান করা উত্তরগুলো আবার হোয়াটসঅ্যাপ বা মেসেঞ্জার গ্রুপে আরেকটি দলের কাছে দলে যায়। এই দলটিকে বলা হচ্ছে ‘কল সেন্টার’। যাদের কাজটা হলো উত্তরগুলো পরীক্ষার্থীদের কাছে পাঠানো। তাদের আগে থেকেই দেওয়া থাকে পরীক্ষার্থীর কার্ড ফোনের নম্বর। সাধারণত পরীক্ষা শুরু হওয়ার আধা ঘণ্টা বা ৪০ মিনিট পরে উত্তর আসতে শুরু করে পরীক্ষার্থীর কাছে।

সিআইডি বলছে, অলিপ আর নাভিদ পৃথক চক্র হলেও তাঁদের মধ্যে যোগাযোগ ছিল। নাভিদ প্রশ্ন ফাঁস এবং কার্ড ফোন ডিভাইস উভয় প্রকারের জালিয়াতিতে যুক্ত থাকতেন। আর অলিপ কেবল ডিভাইস জালিয়াতি করেন। নাভিদের এ রকম ২০টি ডিভাইস রয়েছে, অলিপের ডিভাইসের সংখ্যা এর কয়েক গুণ বলে ধারণা করছেন কর্মকর্তারা। আর নাভিদের ‘কল সেন্টার’ও দুর্বল। চলতি বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘ ইউনিটের পরীক্ষার আগে অলিপকে খুদে বার্তা পাঠিয়ে নাভিদ জানতে চান, ‘দাদা, ডিভাইসের ক্যান্ডিডেট ধরব নাকি’।
নাভিদের কোটি টাকার ইন্ডাস্ট্রি সিআইডির কর্মকর্তারা বলেন, ২০১৩-১৪ সালের এসএসসি পরীক্ষার ফাঁস করা প্রশ্নপত্র বিক্রি করে এ ব্যবসায় হাতেখড়ি হয় নাভিদ আনজুমের। এরপর তিনি ‘ব্যবসা’ আরও বাড়িয়ে ফেলেন।

ফরিদপুরের বোয়ালমারীর ছেলে নাভিদের মা স্কুলশিক্ষিকা। কর্মকর্তারা বলছেন, প্রথম প্রথম মায়ের ব্যাংক হিসাবেই টাকা লেনদেন করতেন নাভিদ। ওই অ্যাকাউন্টেই তাঁর কয়েক লাখ টাকা লেনদেন পাওয়া গেছে।

১৪ নভেম্বর গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে নাভিদ সিআইডিকে জানান, গত বছরের ঘ ইউনিটের প্রশ্নপত্রটি তিনি সাড়ে ১৩ লাখ টাকা দিয়ে এনামুল হক নামের একজনের কাছ থেকে কিনেছিলেন। গত সোমবার রাতে পূর্বাচল থেকে সেই এনামুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর নাভিদের মিথ্যা কথা ধরা পড়ে। কর্মকর্তারা বলছেন, এনামুলকে কোনো টাকাই দেননি নাভিদ। ওই দিন সকাল ৯টা ৭ মিনিটে নাভিদ নিজেও একটি পূর্ণাঙ্গ ছাপানো প্রশ্নপত্র পান। পরীক্ষা শুরু হয় সকাল ১০টায়।

নাভিদ কোত্থেকে প্রশ্ন পেলেন এ বিষয়টি এখনো পুরোপুরি স্পষ্ট হয়নি। তবে কর্মকর্তারা বলেন, ভর্তি পরীক্ষার আগে নাভিদ ইডেন ও বদরুন্নেসা মহিলা কলেজের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কিছু কর্মচারীর সঙ্গে সম্পর্ক করেন। ওই কর্মচারীদের আগেই তিনি দামি মোবাইল ফোন উপহার দেন, যাতে তাঁদের নাগালে কোনো প্রশ্নপত্র আসামাত্রই তার ছবি তুলে নাভিদের কাছে তাঁরা সরবরাহ করতে পারেন। এ রকম এক কর্মচারীর নামও বলেছেন তিনি।

তবে গত সোমবার রাতে জালিয়াতির মাধ্যমে ভর্তি হওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে সাত ছাত্র সিআইডির হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন, তাঁদের একজন জানিয়েছেন, তাঁরা নাভিদকে মুঠোফোনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ভবনে কারও কাছে টাকা পাঠানোর আদেশ দিতে শুনেছেন।

পরীক্ষার আগে কিছু শিক্ষার্থীর বাবা-মায়েদের সঙ্গে চক্রটি ভর্তির চুক্তি করে। চুক্তির সাধারণ মূল্য চার লাখ টাকা। ব্যক্তিবিশেষে কম বা বেশিও হতে পারে। আবার চুক্তি করে টাকা দিতে পারেননি বলে এক শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস করতে পারেননি।

‘ইয়ারড্রপ’ আছে প্রায় সবার সিআইডির কর্মকর্তারা বলছেন, চক্রের সদস্যদের হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্টগুলো ঘেঁটে আরও অনেকের জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শুভ, আজাদ, মিজান, ওমেগা কোচিং সেন্টারের তন্ময় অন্যতম।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রগুলো বলছে, পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসকারী হিসেবে যাঁদের নাম আসছে তাঁদের প্রায় সবারই ‘ইয়ারড্রপ’ (সাময়িক পাঠবিরতি) রয়েছে। যেমন গ্রেপ্তার হওয়া নাভিদের এত দিনে মাস্টার্সে থাকার কথা ছিল, কিন্তু তিনি এখনো তৃতীয় বর্ষের গণ্ডি ডিঙাতে পারেননি। মামুন তিন বছর ধরে প্রথম বর্ষে পড়ছেন। শুভ নামের একজনের ছাত্রত্বই বাতিল হয়েছে ইয়ারড্রপের কারণে। আজাদ আর মিজান নামের অভিযুক্ত দুজনের এত দিনে মাস্টার্সে পড়ার কথা ছিল। তাঁরাও এখনো তৃতীয় বর্ষে।

জানতে চাইলে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধূরী বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে নানা মহল থেকেই নানা কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু নীতিনির্ধারণী মহল, বিশেষ করে মন্ত্রণালয় থেকে একধরনের পাশ কাটিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। মাঝেমধ্যে বলা হলেও পরে আবার অস্বীকার করা হচ্ছে। কিন্তু তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টিকে যথাযথভাবে মোকাবিলা না করে পাশ কাটানোয় দিনে দিনে এর ডালপালা মেলেছে। পাবলিক পরীক্ষাতেই নয়, এখন নিয়োগ ও ভর্তি পরীক্ষাতেও প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ উঠছে। তবে আশার বিষয়, এখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ নীতিনির্ধারণী মহল আবার তৎপর হয়েছে। এ থেকে উত্তরণের উপায় হলো প্রথমত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা, দ্বিতীয়ত তথ্যপ্রযুক্তিবিশারদদের কাজে লাগিয়ে বিকল্প উপায় বের করা।

সূত্র: প্রথম আলো


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0081920623779297