গাজীপুরের সিটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের শিক্ষার্থীরা গতকাল রোববার সকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির মূল ফটকে তালা দিয়ে ক্লাস বর্জন করেছেন। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) অনুমোদন, পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগসহ বিভিন্ন দাবিতে শিক্ষার্থীরা এই কর্মসূচি পালন করছেন।
কলেজটির প্রতিষ্ঠার পর প্রথম দুই বছরের অনুমোদন থাকলেও পরবর্তী তিনটি ব্যাচের শিক্ষার্থীদের বিএমডিসির কোনো রেজিস্ট্রেশন নেই। এ বিষয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষের গাফিলতির অভিযোগ এনে শিক্ষার্থীরা দুই দিন ধরে কর্মসূচি পালন করছেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, কলেজ শুরুর পর প্রথম দুই বছরের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রাথমিক অনুমোদন দেয় বিএমডিসি। কিন্তু শর্ত পালন না করায় গত দুই শিক্ষাবর্ষ ধরে তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম ব্যাচের শিক্ষার্থী ভর্তি ও একাডেমিক কার্যক্রমের অনুমোদন বা রেজিস্ট্রেশনের অনুমোদন দেয়নি বিএমডিসি। এতে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এই কলেজে নেপাল ও ভারতের অন্তত ২৭ জন শিক্ষার্থী ছাড়াও তিন শতাধিক শিক্ষার্থী আছেন। ওই তিন ব্যাচের অনুমোদন ও রেজিস্ট্রেশনের শর্ত পূরণের জন্য কলেজের অধ্যক্ষ, চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের বিভিন্ন সময় তাগিদ দিলেও এ বিষয়ে কোনো সাড়া মেলেনি। বাধ্য হয়ে আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষার্থীরা। আজ (সোমবার) বেলা ১১টার মধ্যে ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা চেয়ারম্যান সশরীরে হাজির হয়ে সুস্পষ্ট কোনো জবাব না দিলে শিক্ষার্থীরা বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
শিক্ষার্থীদের দাবি, ওই তিন ব্যাচের শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা করতে পারলে অন্য কোনো অনুমোদিত কলেজে তাঁদের বদলির (মাইগ্রেশন) সুযোগ করে দেওয়া হোক।
কলেজ শাখার সেক্রেটারি অশোক কুমার রায় বলেন, এই কলেজ প্রতিষ্ঠার পর প্রথম দুই বছর ছাড়া অন্য শিক্ষাবর্ষের জন্য বিএমডিসি অনুমোদন না দিলেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ২০১৩-২০১৪ এবং ২০১৪-২০১৫ শিক্ষাবর্ষের জন্য শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমোদন দিয়েছে। তবে পরবর্তী শিক্ষাবর্ষে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের পর বিএমডিসি তাদের সিদ্ধান্ত জানাবে বলে জানান তিনি। তিনি হাসপাতালের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন খান আলমগীরের বরাত দিয়ে বলেন, এক-দুই বছরের মধ্যে শর্ত পালন করে কলেজটিকে দেশের প্রথম শ্রেণির মেডিকেল কলেজে পরিণত করা হবে।
জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, গতকাল সকালে শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করলেও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। পরে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।