বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জন্য ৩২৯ কোটি ৬৭ লাখ টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে সংশোধিত বাজেটের পরিমাণ ছিল ২৭৪ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। ঘোষিত বাজেটের মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের জন্য ২০৯ কোটি ৬৫ লাখ টাকা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ১২০ কোটি ২ লাখ টাকার অনুমোদন দেয়া হয়েছে। বাজেটে বেতন ও ভাতাদি বাবদ ২০৫ কোটি ৬ লাখ টাকা, পেনশন বাবদ ১৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা, শিক্ষা ও অন্যান্য সাধারণ আনুষাঙ্গিক ৮১ কোটি ২২ লাখ টাকা, গবেষণায় ৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা এবং মূলধন মঞ্জুরি বাবদ ২০ কোটি ৭৯ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।
বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ মোহাম্মদ আলী আসগর মোড়ল বাজেট সম্পর্কিত এ তথ্য তুলে ধরেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ কামরুল হাসান খান উপস্থিত ছিলেন। অন্যদের উপস্থিত মধ্যে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডাঃ মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডাঃ এ এস এম জাকারিয়া (স্বপন), রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডাঃ এবিএম আব্দুল হান্নান, প্রক্টর অধ্যাপক ডাঃ মোঃ হাবিবুর রহমান দুলাল, পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) মোঃ ছিদ্দিকুর রহমান ভূঁঞা, পরামর্শক (অর্থ ও হিসাব) মোঃ আব্দুস সোবহান এবং অতিরিক্ত পরিচালক (অর্থ, হিসাব ও অডিট) মোঃ শফিকুর রহমান প্রমুখ ।
সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ কামরুল হাসান খান বলেন, বর্তমান প্রশাসন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়কে চিকিৎসা শিক্ষা, গবেষণা ও চিকিৎসা সেবাসহ সবদিক থেকে সত্যিকার অর্থেই একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের হাসপাতালে ১৯০৪ রোগীর বিছানা আছে। আইপিজিএমআর এর সময় এ সংখ্যা ছিল ৮০০। বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫০টি বিভাগ ও একটি সেন্টারে শিক্ষক ৪৬০, কনসালট্যান্ট ৫০, মেডিক্যাল অফিসার ৪৪৬, গবেষণা সহকারী ৫৮, কর্মকর্তা ২৮৩, নার্স ও ব্রাদার ১১৮৮ ও কর্মচারী ২০১৩ জনসহ মোট জনবল ৪৪৯৮ জন।
উপাচার্য জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ৪২ প্রতিষ্ঠানে ৯২টি উচ্চশিক্ষার কোর্সে ৩ হাজার ৩শ’ শিক্ষার্থী মেডিক্যাল শিক্ষায় স্নাতকোত্তর কোর্সে অধ্যয়নরত। ২৪টি বৈকালিক বিশেষায়িত বহির্বিভাগে প্রতিদিন প্রায় ১ হাজার রোগী সেবা নিচ্ছেন। ক্যাজুয়ালিটিসহ জেনারেল ইমাজেন্সি চালুর কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ১৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১ হাজার বেডের একটি অত্যাধুনিক সেন্টার বেইজড সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল তৈরি করার যাবতীয় কার্যক্রম চলমান রয়েছে। চলতি বছর এ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত রেসিডেন্টদের পারিতোষিক শিক্ষা মন্ত্রণালয় বরাদ্দ প্রদান করেছে এবং অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠানসমূহের রেসিডেন্টদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব তহবিল থেকে পারিতোষিক দেয়া হচ্ছে। একই সেন্টারে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ওয়ান পয়েন্ট হেলথ চেকআপ সেন্টার চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এটা বাস্তবায়নে ১০ কোটি টাকা প্রয়োজন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আলী আসগর মোড়ল জানান, ৩২৯ কোটি ৬৭ লাখ টাকার মধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন থেকে অনুদান পাওয়া যাবে ২৬২ কোটি ৪৮ লাখ টাকা এবং নিজস্ব আয় থেকে ব্যয় নির্বাহের পরিমাণ ধরা হয়েছে ২৮ কোটি টাকা। ফলে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে সামগ্রিক ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে ৩৯ কোটি ১৯ লাখ টাকা। এই ঘাটতি কাটিয়ে উঠার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সর্বোত্তম প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে।
এ সময় লিখিত বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নের রূপকল্প ২০২১ অর্থাৎ মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়ন, বোনম্যারো ট্রান্সপ্ল্যানটেশন ইউনিট, সেন্টার অব এক্সিলেন্স, গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন, আধুনিক লাইব্রেরি স্থাপন, টাওয়ার নির্মাণ, বহির্বিভাগ ভবনের উর্ধমুখী সম্প্রসারণ, বৈকালিক স্পেশালাইজড সার্ভিস, সুপার স্পেশালাইজড হসপিটাল, পরীক্ষা কেন্দ্র ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিসের জন্য স্বতন্ত্র ভবন নির্মাণ, ইনস্টিটিউশনাল প্র্যাকটিস সার্ভিস চালুকরণ, ছাত্রছাত্রীদের আবাসিক হল নির্মাণ, নার্সদের আবাসিক হল নির্মাণ, প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তাদের জন্য ডরমেটরি নির্মাণ, জেনারেল ইমার্জেন্সি, ওয়ান পয়েন্ট চেকআপ সেন্টার নির্মাণের কথা তুলে ধরেন কোষাধ্যক্ষ ডাঃ মোঃ আলী আসগর মোড়ল।