বারো বছরেও কেন কাটল না ইংরেজি-ভীতি

মুহাম্মদ শরীফ |

এবারে এইচএসসিতে একরকম ফল-বিপর্যয় ঘটেছে। বিপর্যয় বেশি ঘটেছে কুমিল্লায়। প্রতি দুজনের সোয়াজনই ফেল। জিপিএ-৫ও কমেছে। বেড়েছে কেবল ফেলের সংখ্যা। বেশ কিছুদিন আগে প্রকাশিত হয় এসএসসি পরীক্ষার ফল। সেখানেও দেখা গেল একই চিত্র। এসএসসি যেমন এইচএসসিও তেমন। কেন হলো এমনটা?

অনেকে মনে করেন, পরীক্ষা-পরীক্ষক, প্রশ্নপত্র, খাতা মূল্যায়নের ভেতরে লুকিয়ে আছে ফল-বিপর্যয়ের কারণ। জানা যায়, এখন নাকি পরীক্ষার খাতা কঠোরভাবে মূল্যায়নের নির্দেশ দেওয়া আছে। ব্যাপারটি ভালো না কি খারাপ—আমরা এখনো বুঝে উঠতে পারছি না। ফল-বিপর্যয়ের জন্য এখন আমরা এটাকে খারাপ হিসেবেই ধরে নিয়েছি। বিগত বছরগুলোতে পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নের ক্ষেত্রে শিক্ষকদের অন্য রকম নির্দেশ দেওয়া হতো। যদি কোনো শিক্ষার্থী ফেল করত, তাহলে যে শিক্ষক ওই শিক্ষার্থীর খাতা মূল্যায়ন করতেন তাঁকে এর ব্যাখ্যা দিতে হতো। ‘কেন তাকে ফেল করানো হলো, কিছু মার্কস বাড়িয়ে দিলে কী হতো?’ এই ধরনের বাক্য প্রায়ই শুনতে হতো খাতা মূল্যায়নকারী শিক্ষককে।

তাই পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নকারী শিক্ষককে দেখা যেত বাড়িয়ে মার্কস দিতে। ফলে দেশে প্রতিবারই পরীক্ষায় ভালো ফলের সংবাদ পাওয়া যেত। জিপিএ-৫ দেখা যেত অসংখ্য। দেখা যেত, শিক্ষার্থীরা জিপিএ-৫ পেলেও অনেকেই সেই অনুযায়ী মেধার পরিচয় দিতে পারত না। ২০১৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় ইংরেজি বিভাগে মাত্র ২ জন শিক্ষার্থী পাস করেছিল। যদিও সে পরীক্ষায় হাজার হাজার জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছিল। ঠিক তখনো এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার ফলের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, এখন যেমনটি উঠছে। পার্থক্য; তখন প্রশ্ন উঠেছিল কেন বেশি জিপিএ-৫ পায়, এখন উঠছে কেন কম জিপিএ-৫ পায়? পূর্বোক্ত অভিজ্ঞতা থেকে হয়তো শিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষা নিয়েছে। তাই পরীক্ষার খাতা নিরীক্ষার ব্যাপারটিতে এনেছে ব্যাপক সংস্কার। শিক্ষকদের অভয় দিয়েছে, খাতা নিরীক্ষায় দিয়েছে স্বাধীনতা। তাই হয়তো জিপিএ-৫ এবং পাসের হার কমেছে। এই ব্যাপারটি অনেকেই ভালো চোখে দেখছেন না।

কিন্তু আমাদের উচিত এই প্রক্রিয়াটিকেই স্বাগত জানানো। কারণ এতে বাড়বে দেশের শিক্ষার মান। শিক্ষার্থীরা আর চাইবে না, না-পড়ে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে। ফলে শিক্ষার্থী হবে পাঠে মনোযোগী। এবার এইচএসসি পরীক্ষায় সবচেয়ে বেশি ফেল করেছে ইংরেজি বিষয়ে। বারো বছরেও শিক্ষার্থীরা কাটাতে পারেনি ইংরেজি-ভীতি। কেন বারো বছর ধরে ইংরেজি পড়েও আমাদের শিক্ষার্থীরা ইংরেজিতে দুর্বল—ব্যাপারটি নিয়ে ভাবতে হবে।

ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ, কুমিল্লা


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0054168701171875