বৈশাখী ভাতাসহ সব দাবী লিখিতভাবে জানাতে বললেন মহাপরিচালক

নিজস্ব প্রতিবেদক |

জাতীয়করণ, বৈশাখী-ভাতা, পুর্ণাঙ্গ পেনশনসহ বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের সব ধরণের দাবী-দাওয়া  সম্পর্কিত শিক্ষক সংগঠনসমূহের মতামত আগামী ১৬ই অক্টোবরের মধ্যে লিখিতভাবে জানাতে বললেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. এস এম ওয়াহিদুজ্জামান।

মঙ্গলবার (১১ই অক্টোবর) শিক্ষা অধিদপ্তরের সভাকক্ষে মাধ্যমিক, কলেজ ও মাদ্রাসার সব শিক্ষক সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। মূল আলোচনা বিষয় ছিলো অবসর ও কল্যাণের বর্ধিত চাঁদার গেজেট সংক্রান্ত। কিন্তু বৈঠকে শিক্ষক নেতৃবৃন্দ অবসর ও কল্যাণের বর্ধিত চাঁদার প্রজ্ঞাপন, পাঁচ শতাংশ প্রবৃদ্ধি, পূর্ণাঙ্গ পেনশন [বর্তমানে এককালীন কিছু সুবিধা পান], জাতীয়করণসহ বিভিন্ন দাবী বিচ্ছিন্নভাবে তুলে ধরেন। আবার কেউ কেউ অবসর ও কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা পেতে দেরি হওয়ায় শিক্ষকদের ভোগান্তি নিরসনে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বেশি বেশি টাকা বরাদ্দের দাবী তোলেন। তবে, শিক্ষক নেতা আবুল কাশেমসহ যারা অবসর সুবিধার ভোগান্তির কথা বলেছেন তারা সবাই নিজেদের অবসরে যাওয়ার তিন মাসের মধ্যে অবসর ও কল্যাণের টাকা তুলে নিয়েছেন মর্মে জানা যায়।

বৈঠকের এক পর্যায়ে মহাপরিচালক নেতৃবৃন্দের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আপনারা সব দাবী-দাওয়া সম্পর্কিত মতামত আগামী ১৬ অক্টোবরের মধ্যে লিখিতভাবে অধিদপ্তরকে জানানোর অনুরোধ করছি। সব দাবীর সারাংশ তৈরি করে শিগগিরই শিক্ষাসচিব মহোদয়ের সঙ্গে বৈঠক হবে।’  শিক্ষকদের দাবী-দাওয়া নিয়ে মাঠে না নেমে আলোচনার টেবিলে আসার অনুরোধ জানালে সব নেতৃবৃন্দই একমত পোষণ করেন। যারা বৈঠকে এক ধরণের মতামত দেন কিন্তু সংবাদ সম্মেলন বা ফেসবুকে অন্য কথা লেখেন তাদের ডাবল-স্টান্ডার্ড ভূমিকা পরিহারের আহ্বান জানানো হয়। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক শিক্ষক নেতা দৈনিকশিক্ষাডটকমকে এ খবর নিশ্চিত করেছেন।

বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারি অবসর সুবিধা বোর্ডের সদস্য-সচিব অধ্যক্ষ শরীফ আহমদ সাদী ও শিক্ষক-কর্মচারি কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য-সচিব অধ্যক্ষ মো: শাহজাহান আলম সাজু  তাদের বক্তব্যে পাঁচ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ও বৈশাখী ভাতা না দেয়ায় সারাদেশে শিক্ষকদের কষ্টের কথা মহাপরিচালককে জানান।

অবসর ও কল্যাণ ফাণ্ডের জন্য অতিরিক্ত টাকা বরাদ্দ ও জাতীয়করণসহ অন্যান্য বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে শিক্ষক নেতৃবৃন্দের একটা বৈঠকের ব্যবস্থা করতে পারলে সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে বলে বৈঠকে আশা প্রকাশ করেন শরীফ আহমদ সাদী।

বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদারেছিনের  মহাসচিব মাওলানা শাব্বীর আহমেদ মোমতাজী অবসর ও কল্যাণের বর্ধিত চাঁদার গেজেটের কার্যকরিতা স্থগিত রাখার দাবী এবং অবিলম্বে পাঁচ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ও বৈশাখী ভাতা দেয়ার দাবী জানান।

বৈঠকে জাতীয় শিক্ষক-কর্মচারি ফ্রন্টের প্রধান সমন্বয়কারী ও এনজিওর মালিক অধ্যক্ষ কাজী ফারুক আহম্মেদকে বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও তিনি উপস্থিত না হননি। তার পক্ষে মোহাম্মদ আলী চৌধুরী, চট্টগ্রামের সহকারি অধ্যাপক ও কল্যাণট্রাস্টের বোর্ড সভার সদস্য আবু তাহের উপস্থিত ছিলেন। ঢাকার নন এমপিও শিক্ষক মহসীন রেজা আমন্ত্রণ না পেলেও হাজির হন।

বৈঠকে আবু তাহের বলেন, ‘শিক্ষা সচিব মহোদয়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অবসর ও কল্যাণের বর্ধিত চাঁদা সংক্রান্ত  বৈঠকের খবর ও সভার কার্যবিবরণী এবং সম্মানী নেয়ার তথ্য দৈনিকশিক্ষার হাতে পৌছে গেলো কীভাবে? আজকের সভার সিদ্ধান্ত ও আলোচনা যেন দৈনিকশিক্ষার সাংবাদিকরা জানতে না পারেন।

আবু তাহের বৈঠকে বলেন, “দৈনিকশিক্ষায় প্রকাশ হয়েছে আমরা কতিপয় শিক্ষক নেতা শিক্ষা সচিব মহোদয়ের কাছে আমাদের ডাবল স্ট্যান্ডার্ডের দায়ে ‘ক্ষমা’ চেয়েছি। ওই খবর পাঠ করে আমার মেয়ে আমাকে বলেছে, “বাবা দৈনিক শিক্ষায় দেখলাম তোমরা শিক্ষা সচিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অবসর-কল্যাণের চাঁদার হার ৬ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশ করার  পক্ষে মতামত দিয়েছো আবার মিটিং এ্যালাউন্স নিয়েছো কিন্তু পরে আবার সংবাদ সম্মেলনে দাবী করেছো তোমরা [শিক্ষক নেতৃবৃন্দ] কিছুই জানো না, এ কেমন কথা?” নাম প্রকাশে অনিচছুক একধিক সূত্র দৈনিকশিক্ষাকে এ খবর নিশ্চিত করেছেন।

বৈঠকে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যক্ষ এম এ আউয়াল সিদ্দিকী, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মিসেস বিলকিস জামান, বাংলাদেশ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. আক্তারুজ্জামান, বাংলাদেশ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির কার্যকরী সভাপতি অধ্যক্ষ আব্দুর রশীদ, বাংলাদেশ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ইমাম আলো, বাংলাদেশ কারিগরি কলেজ শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যক্ষ এম এ সাত্তার, বাংলাদেশ কারিগরি কলেজ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলী চৌধুরী, বাংলাদেশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্মচারি ফেডারেশনের সভাপতি মো: শাহজাহান মিয়া, বেসরকারি কারিগরি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ এ কে এম মোকসেদুর রহমান, বাংলাদেশ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. নুর মোহাম্মদ তালুকদার, বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রফসর মো: ফয়েজ হোসেন, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোঃ আবু বক্কর সিদ্দিক, বাংলাদেশ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মোঃ জাহাঙ্গীর, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ আবুল কাশেম, বেসরকারি কারিগরি শিক্ষক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যক্ষ নাসির উদ্দিন বাবুল, বাংলাদেশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্মচারি ফেডারেশনের সভাপতি মোঃ ফখরুদ্দিন জিগার এবং বাংলাদেশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্মচারি ফেডারেশনের সভাপতি মোঃ হাবিবুর রহমান হাবিব উপস্থিত ছিলেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ ৮৬৬ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাকে পদায়ন - dainik shiksha ৮৬৬ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাকে পদায়ন কারিগরি বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা মামুন - dainik shiksha কারিগরি বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা মামুন মেডিক্যাল কলেজের ক্লাস অনলাইনে - dainik shiksha মেডিক্যাল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নতুন করে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha নতুন করে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি বুয়েটের বিতর্কিত ‘সাংবাদিক সমিতি’র কমিটি বিলুপ্ত! - dainik shiksha বুয়েটের বিতর্কিত ‘সাংবাদিক সমিতি’র কমিটি বিলুপ্ত! আলিমের ফরম পূরণের সময় বাড়লো - dainik shiksha আলিমের ফরম পূরণের সময় বাড়লো কৃষি গুচ্ছের ভর্তি আবেদন শুরু - dainik shiksha কৃষি গুচ্ছের ভর্তি আবেদন শুরু এমপিও শিক্ষকরাও সর্বজনীন পেনশনে - dainik shiksha এমপিও শিক্ষকরাও সর্বজনীন পেনশনে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0067682266235352