ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

প্রশ্নপত্র ফাঁসের পাশাপাশি ভর্তি ও নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতির খবর সংবাদমাধ্যমে নিয়মিতই আসছে। এক মাস আগে অনুষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায়ও জালিয়াতি ধরা পড়ে।

এরপর সিআইডি ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করে, যাদের ছয়জনই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। খবরে বলা হচ্ছে, আটক সবাই ব্লুটুথ কমিউনিকেশন হ্যান্ড ডিভাইস ব্যবহার ও বিক্রিসহ জালিয়াতি প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত। গত সোমবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সেখানে অধ্যয়নরত সাতজন ছাত্রকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি। তারা সবাই গত বছর ডিভাইস জালিয়াতির মাধ্যমে এই প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়েছে। এর আগের তিন সপ্তাহে গ্রেপ্তার চারজনের একজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। প্রকাশিত খবরে বলা হচ্ছে, মাস্টারকার্ডের মতো দেখতে একটি ডিভাইস সংগ্রহ করার পর তা টাকার বিনিময়ে ভর্তীচ্ছু শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয়।

তাদের কানে লাগিয়ে দেওয়া হয় একটি ছোট হেয়ারিংএইড। প্রশ্ন হাতে আসার পর এই যন্ত্রের মাধ্যমে ভর্তীচ্ছু শিক্ষার্থীদের উত্তর বলে দেওয়া হয়। শুধু ঢাকা নয়, ঢাকার বাইরেও তাদের নেটওয়ার্ক ছড়িয়ে আছে। ভর্তীচ্ছু শিক্ষার্থী সংগ্রহ, তাদের সনদ জমা রেখে ডিভাইস দেওয়া, প্রশ্নের উত্তর তৈরি করা থেকে শুরু করে সব কাজ নির্বিঘ্নে শেষ করার জন্য রয়েছে নির্দিষ্টসংখ্যক লোক। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী, কোচিং সেন্টারের শিক্ষক থেকে শুরু করে ছাত্রনেতারাও এই সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত। বলার অপেক্ষা রাখে না, এই সিন্ডিকেট অনেক বড়। তবে সিআইডি এখন পর্যন্ত যাদের গ্রেপ্তার করেছে এবং তাদের কাছ থেকে যে তথ্য-উপাত্ত পেয়েছে, তাতে পুরো সিন্ডিকেটকে আইনের আওতায় আনা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।
ভর্তি মৌসুমে দেশজুড়ে কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য হয়।

এখন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক বেশি। এরই মধ্যে দেখা যায় তুলনামূলক কম মেধার অনেক শিক্ষার্থী জালিয়াতির মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো নামকরা প্রতিষ্ঠানেও ভর্তি হয়ে যায়, যা মেধাবীদের মধ্যে হতাশা তৈরি করে। একদিকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে বেড়াতে হয়, অন্যদিকে কম মেধার অনেকেই টাকার বিনিময়ে জালিয়াতি করে ভর্তি হয়ে যায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রেপ্তার শিক্ষার্থীরাই তার প্রমাণ। আবার ছাত্রসংগঠনের অনেক নেতাও এই জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও সন্দেহের বাইরে রাখা যাবে না। এরই মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মচারীকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে। শুধু ভর্তি নয়, ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষা, মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস ও জালিয়াতির খবরও নাকি আছে সিআইডির কাছে। সন্দেহভাজন যে কাউকে গ্রেপ্তার করে তার কাছ থেকে তথ্য নিতে হবে। ভর্তি ও নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি রুখতে আইনের কঠোর প্রয়োগ জরুরি।

সৌজন্যে: কালের কণ্ঠ


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও - dainik shiksha স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে পরীক্ষার আগেই হবু শিক্ষকদের হাতে পৌঁছে যায় উত্তরপত্র: ডিবি - dainik shiksha পরীক্ষার আগেই হবু শিক্ষকদের হাতে পৌঁছে যায় উত্তরপত্র: ডিবি দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল - dainik shiksha ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ - dainik shiksha বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস - dainik shiksha এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0031859874725342