রাজধানীর বিভিন্ন মাদ্রাসায় দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকতা করে আসছেন শায়েখ মামুনুর রশিদ ওরফে শায়েখ মামুন। একপর্যায়ে ২০১৪ সালে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে যোগ দেন জেএমবিতে।
২০১৫ সালে নব্য জেএমবিতে যোগ দেওয়ার পর নিজ যোগ্যতায় জায়গা করে নেন সংগঠনের শরিয়া বোর্ডে। বহুভাষায় দক্ষ মামুন ২০১৬ সালে নির্বাচিত হন বোর্ডের আমির হিসেবে।
সবশেষ ডেমরার একটি মাদ্রাসায় ভাইস প্রিন্সিপাল হিসেবে কর্মরত শায়েখ মামুনুর রশিদকে সোমবার (১২ জুন) সকালে আটক করে র্যাব।
বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অবস্থিত র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান।
তিনি বলেন, গত শনিবার (১০ জুন) রাতে গ্রেফতার জেএমবির অর্থদাতা গার্মেন্ট ব্যবসায়ী ইমরানের তথ্যের ভিত্তিতে মামুনকে আটক করা হয়। তিনি ২০০৪-২০০৬ সাল পর্যন্ত ভারতে দারুল উলুম শিক্ষা গ্রহণ করেন। কোরানে হাফেজ মামুন বিভিন্ন ভাষা থেকে বাংলা ভাষায় অনুবাদে পারদর্শী। বিভিন্ন মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করা মামুন বর্তমানে ডেমরার একটি মাদ্রাসায় ভাইস প্রিন্সিপালের দায়িত্ব পালন করছিলেন।
মামুন ২০১৪ সালে তৌহিদ ও ঈমাম নামের দুই ব্যক্তির মাধ্যমে জেএমবিতে যোগ দেন। ১৫ সালের মাঝামাঝি জেএমবির নতুন ধারা সারোয়ার-তামিম গ্রুপে যোগ দেওয়া মামুন পর্যায়ক্রমে সংগঠনের শরিয়া বোর্ডের দায়িত্ব পান।
মুফতি মাহমুদ আরো বলেন, সারোয়ার-তামিম গ্রুপের সদস্যদের উদ্বুদ্ধ এবং নতুন সদস্য রিক্রুটের জন্য বিভিন্ন মোটিভেশনাল সামগ্রী সরবরাহে কাজ করে শরিয়া বোর্ড। জঙ্গিবাদের বিভিন্ন বক্তব্য, বই, ভিডিও, অডিও সংগ্রহ করে বাংলা ভাষায় রূপান্তর করে সরবরাহ করাই ছিল শরিয়া বোর্ডের কাজ। অনলাইনে প্রচারিত বিভিন্ন উস্কানিমূলক ভিডিও এবং অডিও প্রচারের কাজও করতো বোর্ডের সদস্যরা।
শরিয়া বোর্ডটি ২০১৫ সালে গঠিত হয় এবং ১০-১৫ জন সদস্য এ বোর্ডে কাজ করতেন। শিক্ষিত এবং দক্ষতার ভিত্তিতে এ বোর্ডে জায়গা হতো সদস্যদের।
জেএমবির শরিয়া বোর্ডে প্রস্তুত বিভিন্ন ম্যাটেরিয়ালগুলো সরবরাহ করতো আলেম বোর্ডে। আলেম বোর্ডে দেশের বিভিন্ন মাদ্রাসা এবং মসজিদের ঈমামরা রয়েছেন। তারপরে কৌশলে সেসব ঈমামদের মাধ্যমে বিভিন্নস্থানে জঙ্গিবাদী সেসব অডিও, ভিডিও, লিফলেট বা বইয়ের মাধ্যমে জিহাদের মতাদর্শ ছড়িয়ে দিতো।
আটক শায়েখ মামুনের সঙ্গে বর্তমান আমিরের সরাসরি যোগাযোগ ছিল বলেও দাবি করেন র্যাবের এ কর্মকর্তা।