মাদ্রাসা শিক্ষকের তিন জন্ম তারিখ!

কুমিল্লা প্রতিনিধি |

কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার বরকরই পীর মঞ্জিল দাখিল মাদ্রাসার সহকারী সুপার আবদুল মতিনের তিনটি জন্ম তারিখের সন্ধান মিলেছে। এসব জন্ম তারিখ ব্যবহার করে তিনি চাকরি ও মুক্তিযোদ্ধা সনদ নিয়ে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ভোগ করাসহ সরকারি অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক ও জেলা শিক্ষা অফিসারের কার্যালয়সহ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এদিকে আবদুল মতিনের মিথ্যা তিনটি জন্ম তারিখের বিষয় জানাজানি হলে ওই মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় এলাকায় বেশ তোলপাড় শুরু হয়।

অভিযোগে জানা যায়, চান্দিনা উপজেলার বরকরই ইউনিয়নের লগড্ডা গ্রামের মৃত আবদুল খালেকের পুত্র আবদুল মতিনের তিনটি জন্ম তারিখ রয়েছে, যা হচ্ছে- জন্ম নিবন্ধন সনদে ১ জানুয়ারি ১৯৫৭, শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদে ১ মার্চ ১৯৫৯ ও এমপিওভুক্তির কাগজপত্রে ১ জানুয়ারি ১৯৬১ ইং। এ ছাড়া এসব সনদ ও সংশ্লিষ্ট কাগজপত্রে তার নাম ও তার পিতার নামেও গড়মিল রয়েছে। ওই তিনটি জন্ম তারিখের মধ্যে জন্ম নিবন্ধন সনদ অনুযায়ী মুক্তিযুদ্ধের সময় (মার্চ ১৯৭১) আবদুল মতিনের বয়স ছিল ১৪ বছর ৩ মাস ও বর্তমান বয়স (১ নভেম্বর ২০১৭) ৬০ বছর ১০ মাস, শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ অনুযায়ী মুক্তিযুদ্ধের সময় তার বয়স ১২ বছর ও বর্তমান বয়স ৫৮ বছর ৮ মাস এবং চাকরির এমপিওভুক্তির কাগজপত্রের জন্ম তারিখ অনুযায়ী মুক্তিযুদ্ধের সময় তার বয়স ১০ বছর ২ মাস ও বর্তমান বয়স ৫৬ বছর ১০ মাস।

অভিযোগে বলা হয়, আবদুল মতিনের শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ সঠিক হলে মুক্তিযোদ্ধা সনদ ও এমপিওভুক্তির কাগজের জন্ম তারিখ ভুয়া এবং ওই ক্ষেত্রে তিনি ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা ও চাকরি থেকে অবসরে যেতেন দুই বছর আগে। এ ছাড়া এমপিওভুক্তির জন্ম তারিখ সঠিক হলে তার শিক্ষাগত যোগ্যতা ও মুক্তিযোদ্ধা সনদের উভয় জন্ম তারিখ ভুয়া। এভাবে আবদুল মতিন তার নাম ও পিতার নামের গড়মিল করে এবং তিনটি ভুয়া জন্ম তারিখ প্রতারণার মাধ্যমে যথেচ্ছ ব্যবহার করে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ভোগ করাসহ বছরের পর বছর ধরে সরকারি অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

আবদুল মতিন বলেন, জন্ম তারিখ কাগজপত্রে উল্লেখ আছে, আমি তো লুকাতে পারব না।
সুপার মাওলানা মো. সফিকুল ইসলাম এ বিষয়ে বলেন, তিনি মাদ্রাসায় আসেন না, এ নিয়ে আর কোনো কথা বলতে চাই না।

জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের (শিক্ষা ও কল্যাণ শাখা) সহকারী কমিশনার নওরীন হক জানান, গত ৭ নভেম্বর অভিযোগ তদন্তের শুনানির দিন ধার্য ছিল। কিন্তু ওইদিন আবদুল মতিন সময় চেয়েছেন, তাই সহসা পরবর্তী তারিখ ধার্য করে তদন্ত অনুষ্ঠিত হবে।

দুদক সমন্বিত কার্যালয় কুমিল্লার উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ জানান, অভিযোগের তদন্ত কার্যক্রম চলছে, সত্যতা পাওয়া গেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও - dainik shiksha স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল - dainik shiksha ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি - dainik shiksha সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ - dainik shiksha বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা - dainik shiksha ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস - dainik shiksha এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0045149326324463