মানুষ মানুষের জন্য: ড. জাফর ইকবাল

নিজস্ব প্রতিবেদক |

গত বেশ কিছুদিন হলো পত্রপত্রিকার পৃষ্ঠার দিকে আর তাকানো যাচ্ছে না। মানুষের নিষ্ঠুরতার কথা পড়তে ভালো লাগে না।

এ রকম খবর পত্রপত্রিকায় ছাপা হলে নিজের অজান্তেই চোখ ফিরিয়ে নিই। ১৯৭১ সালে আমাদের এ রকম নিষ্ঠুরতার ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছিল, তখন চোখ ফিরিয়ে নেওয়ার কোনো উপায় ছিল না, আমাদের চারপাশেই সেই ঘটনাগুলো ঘটেছিল। মনে হচ্ছে সেই দিনগুলো বুঝি আবার ফিরে এসেছে, আমি না চাইলেও আবার সে রকম ঘটনাগুলো দেখতে হচ্ছে, শুনতে হচ্ছে। একজন মা তার মৃত সন্তানের মুখের সঙ্গে মুখ লাগিয়ে শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে—এ রকম দৃশ্য সহ্য করা কঠিন। কিন্তু এখন আমরা সবাই জানি, খবরের কাগজের এ রকম একটা ছবির পেছনে এর চেয়েও ভয়ংকর নির্মম আরো হাজারটি কাহিনি আছে। রোহিঙ্গাদের গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে, মেয়েদের ধর্ষণ, গণধর্ষণের শিকার হতে হয়েছে, নারী-পুরুষ-শিশুদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। এই ভয়ংকর অত্যাচার থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য একজন-দুজন নয়, চার লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এত অল্প সময়ে এত বেশি মানুষ আর কোথাও প্রাণ বাঁচানোর জন্য হাজির হয়েছে বলে আমার জানা নেই।
রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে থাকত।

এ মুহূর্তে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গার সংখ্যা কমে হাতে গোনা পর্যায়ে চলে এসেছে। তাদের বেশির ভাগই সেখান থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে। বহুদিন থেকে মিয়ানমার এটিই করতে চেয়েছিল, তারা শেষ পর্যন্ত এটি করতে পেরেছে। পৃথিবীর মানুষের সমালোচনা কিংবা ধিক্কার এক কান দিয়ে শুনে অন্য কান দিয়ে বের করে দিয়ে মিয়ানমার তাদের বহুদিনের কাঙ্ক্ষিত চূড়ান্ত সমাধানটি শেষ পর্যন্ত করে ফেলতে পেরেছে। পৃথিবীর ইতিহাসে এ রকম চূড়ান্ত সমাধানের কোনো অভাব নেই। ইসরায়েল নামক রাষ্ট্রটি এর সবচেয়ে স্পষ্ট উদাহরণ। জোর করে একটি জায়গা থেকে সব অধিবাসীকে সরিয়ে দিয়ে সেখানে ইসরায়েল রাষ্ট্রটি তৈরি করা হয়েছে, বিশ্ব বিবেকে তাতে একটি আঁচড়ও পড়েনি। কাজেই হঠাৎ করে রোহিঙ্গাদের জন্য পৃথিবীর মানুষ ব্যাকুল হয়ে উঠবে—আমি একবারও সেটি মনে করি না।

আমরা নিজের চোখেই দেখতে পাচ্ছি, আমাদের পাশের দেশ ভারতের এই রোহিঙ্গা বিপর্যয় নিয়ে কোনো মাথাব্যথা নেই। চীন ও রাশিয়া মোটামুটি স্পষ্ট করে বলে দিয়েছে, তারা মিয়ানমারের পক্ষে। একাত্তরে যখন বাংলাদেশে গণহত্যা চলছিল, আমাদের চোখের সামনে যখন শুধু মানুষের লাশ ও লাশ, ঠিক তখনো আমরা শুনতে পেতাম ‘এটি পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয়’। এত দিন পর সেই একই ভাষায় একইভাবে আমরা শুনতে পাচ্ছি, রোহিঙ্গা গণহত্যার বিষয়টি হচ্ছে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয়। ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেশ আমেরিকার ‘রিফিউজি’ বা শরণার্থী নিয়ে রীতিমতো অ্যালার্জি আছে। তাই বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ নিয়ে তাদের কোনো গরজ থাকার কথা নয়। নিউ ইয়র্ক থেকে শেখ হাসিনা সেটা সোজা ভাষায় আমাদের জানিয়ে দিয়েছেন। সদা হাস্যময় মিয়ানমারের জেনারেল সাহেব ইউরোপে খুবই জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব—তিনি সারা পৃথিবীতে খুবই দাপটের সঙ্গে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। অং সান সু চিকে সাধারণ মানুষজন ইন্টারনেটে একটু গালমন্দ করছে, চোখ-নাক-মুখ বন্ধ করে এই সময়টা পার করে দিলেই পৃথিবীর মানুষ এর কথা ভুলে যাবে।

আমি প্রতিদিন ইন্টারনেটে বিবিসিতে একবার চোখ বুলিয়ে দেখি, এর মধ্যেই প্রাত্যহিক খবরে এখন রোহিঙ্গাদের কোনো খবর নেই। প্রাণ বাঁচানোর জন্য লাখ লাখ নারী-শিশু-পুরুষের নিজ বাসভূমি ছেড়ে অন্য দেশে আশ্রয় নেওয়ার ঘটনাটির গুরুত্ব বিশেষ অবশিষ্ট নেই। কাজেই মোটামুটি অনুমান করা যায়, মিয়ানমার তাদের রাখাইন রাজ্যটি মোটামুটি ঝামেলামুক্ত করে ফেলেছে; সেখানে আর কোনো রোহিঙ্গা নেই। কাজটি করতে হয়তো অনেক সময় লাগত; কিন্তু অনেক দ্রুত করে ফেলা গেছে। রোহিঙ্গাদের চরমপন্থী দল আরসা পুলিশ-মিলিটারির ঘাঁটি আক্রমণ করে অল্প কিছু পুলিশ-মিলিটারিকে মেরে পুরো কাজটি খুব সহজ করে দিয়েছে। এখন মিয়ানমারের বিশাল মিলিটারি বাহিনী খুবই ‘যৌক্তিক’ভাবে রোহিঙ্গাদের গণহত্যা করতে পারছে। এভাবে যে গণহত্যা করা যায় আমরা আমাদের চোখের সামনেই সেটি অনেকবার হতে দেখেছি।

২.

শান্তির জন্য নোবেল পুরস্কার পাওয়া ভদ্রমহিলা অং সান সু চি সেদিন তাঁদের টেলিভিশনে একটি বক্তৃতা দিয়েছেন। বক্তৃতায় কী বলবেন মোটামুটি অনুমান করা যেত—এবং মোটামুটি সেটাই বলেছেন। একাত্তরে বাংলাদেশের এক কোটি শরণার্থী ভারতবর্ষে আশ্রয় নিয়েছিল, পৃথিবীর বেশ কিছু দেশ যখন সেটা নিয়ে পাকিস্তানের ওপর চাপ দিয়েছিল তখন কোনো এক পর্যায়ে পাকিস্তানি মিলিটারি শরণার্থীদের ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছিল। সেই আহ্বান শুনে একজন শরণার্থীও ফিরে যায়নি। কেন যাবে? পাকিস্তানি মিলিটারিরাও জানত সেটা ফাঁকা বুলি, শরণার্থীরাও জানত সেটা ধাপ্পাবাজি। নিজের জীবন নিয়ে কে ধাপ্পাবাজির ফাঁদে পা দেবে? মিলিটারির গুলি খেয়ে মারা যাওয়া থেকে অনাহারে-রোগে-শোকে-কলেরায় মারা যাওয়াটাই তাদের কাছে বেশি গ্রহণযোগ্য মনে হয়েছিল। শরণার্থী ক্যাম্পে তখন প্রায় আট থেকে ১০ লাখ লোক মারা গেছে।

এবারে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়া ভদ্রমহিলা পাকিস্তানি মিলিটারির চেয়ে এক কাঠি সরেস! তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, যাচাই-বাছাই করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীদের ফেরত নেওয়া হবে। ‘যাচাই-বাছাই’ করার প্রক্রিয়াটি কী আমরা এখনো জানি না। যারা প্রাণ নিয়ে পালিয়ে এসেছে তাদের কাছে কি কাগজপত্র প্রমাণ হিসেবে আছে, আমার জানা নেই। সবচেয়ে বড় কথা, এই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর কোনো নাগরিকত্ব নেই। ব্যাপারটা আমি বুঝতেই পারি না, একজন মানুষ একটি দেশে থাকে; কিন্তু সে ওই দেশের নাগরিক নয়। দেশের সংবিধানে কথাগুলো লেখা থাকে সেই দেশের নাগরিকের জন্য। কাজেই যারা সেই দেশের নাগরিক নয়, তাদের জন্য রাষ্ট্রের কোনো দায়দায়িত্ব নেই। এর অর্থ রোহিঙ্গা শিশু লেখাপড়া করতে পারবে না; অসুস্থ হলে চিকিৎসা পেতে পারবে না; বাস-ট্রেনে উঠতে পারবে না; দেশের এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে পারবে না। সবচেয়ে ভয়ংকর কথা, দেশের সুনাগরিকরা যদি দা-চাপাতি হাতে নিয়ে কিছু রোহিঙ্গাকে কেটে টুকরা টুকরা করে ফেলে, সেটা অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হবে না! রোহিঙ্গা মেয়েরা যেহেতু নাগরিক নয়, কাজেই তাদের ধর্ষণ করাও নিশ্চয়ই গুরুতর অপরাধ নয়। যে রাষ্ট্রের কিছু মানুষের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়, সেই দেশের সংবিধানটি দেখার আমার খুবই কৌতূহল।

শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়া ভদ্রমহিলা অনুপ্রবেশকারীদের যাচাই-বাছাই করে ফিরে যাওয়ার প্রক্রিয়ার কথা বলে অবশ্য স্বীকার করে ফেলেছেন যে অনুপ্রবেশকারী বলে কিছু একটা আছে। আমি ভেবেছিলাম, তিনি সেটাও অস্বীকার করবেন। চীন, রাশিয়া ও ভারত পাশে থাকলে যেকোনো মিথ্যা কথা খুব জোর দিয়ে বলা যায়। নাফ নদের এপার থেকে যখন দেখা যায়, রাখাইন রাজ্যের গ্রামে গ্রামে আগুন জ্বলছে তখন আগুনটাকে অস্বীকার করা একটু কঠিন হয়ে যায়। তখন রাখাইন রাজ্যের কর্মকর্তারা বলেছেন মানুষগুলো নিজেরাই নিজেদের বাড়িতে আগুন দিয়েছে। এর চেয়ে নিষ্ঠুর কৌতুক আর কী হতে পারে?

শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়া ভদ্রমহিলার বক্তব্যের সবচেয়ে চমকপ্রদ অংশ হচ্ছে যে তাঁদের দেশের মিলিটারিরা সেপ্টেম্বরের ৫ তারিখের পর আর কিছু করেনি। বক্তব্যটিকে সোজা বাংলায় অনুবাদ করলে এ রকম শোনাবে : ‘আগস্টের ২৪ তারিখ থেকে আমাদের মিলিটারি রোহিঙ্গাদের নির্বিচারে হত্যা করেছে, মেয়েদের ধর্ষণ করেছে, বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে, রোহিঙ্গারা প্রাণ বাঁচানোর জন্য বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছে। মোটামুটি সবাইকে যেহেতু তাড়িয়ে দেওয়া গেছে, এখন হত্যা করার জন্য আর কাউকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তাই সেপ্টেম্বরের ৫ তারিখ থেকে হত্যা-ধর্ষণ-বাড়ি জ্বালানো বন্ধ আছে। ’

তবে কথাটি নির্জলা মিথ্যা, সেপ্টেম্বরের ৫ তারিখের পরও রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের গ্রাম পোড়ানো হয়েছে, তাদের ওপর হামলা হয়েছে।

সবচেয়ে বড় কথা, শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়া ভদ্রমহিলার বক্তব্য শুনে মনে হলো, সেপ্টেম্বরের ৫ তারিখে মিলিটারি অ্যাকশন বন্ধ করার জন্য তিনি সারা পৃথিবী থেকে এক ধরনের বাহবা কিংবা সম্ভব হলে শান্তির জন্য দ্বিতীয় আরেকটি নোবেল পুরস্কার আশা করছেন! তা না হলে এত বড় গলায় এত বড় একটা মিথ্যা কথা কিভাবে বলা হয়?

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা মিয়ানামারে ছুটে গিয়েছিলেন, সামরিক শাসন শেষ হয়ে মিয়ানমার গণতান্ত্রিক দেশ হয়ে গেছে, সেই আনন্দে সারা পৃথিবী উদ্বাহু হয়ে নৃত্য করেছে। রোহিঙ্গা বিপর্যয়ের কারণে আমরা এখন মিয়ানমারের গণতন্ত্রের প্রকৃত ছবিটা দেখতে পাচ্ছি। তাদের সংসদের ২৫ শতাংশ আসন মিলিটারিদের জন্য। শুধু তা-ই নয়, কোনো বিল পাস করতে হলে ৭৫ শতাংশ ভোট পেতে হয়। এর অর্থ কোন বিল পাস হবে আর কোন বিল পাস হবে না সেটা সে দেশের মিলিটারিরা ঠিক করে দেয়। মজা এখানেই শেষ নয়, সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করে মিলিটারি; কিন্তু দেশটাকে পৃথিবীর সামনে উপস্থাপন করার জন্য রয়েছে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়া সারা পৃথিবীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় সিক্ত ফটোজেনিক একজন ভদ্রমহিলা। কী মজা!

আমি দেশ, রাজনীতি, অর্থনীতি কিছুই বুঝি না। সাধারণ মানুষের কমন সেন্স দিয়ে সব কিছু বোঝার চেষ্টা করি। একেবারে মৌলিক যে বিষয়গুলো কমন সেন্স দিয়ে বুঝতে হবে, সেটা হচ্ছে এই পৃথিবীতে সব মানুষের সম্মান নিয়ে বেঁচে থাকার অধিকার আছে। পৃথিবীটাকে নানা দেশে ভাগ করা আছে। সব দেশের দায়িত্ব নিজের দেশের মানুষকে সুখে-শান্তিতে বেঁচে থাকার জন্য সাহায্য করা। গায়ের রং, মুখের ভাষা কিংবা ধর্মের জন্য কাউকে পছন্দ না হলেই তাকে দেশ থেকে বের করে দেওয়া যাবে না। ইসরায়েল কিংবা মিয়ানমার সেটা করতে পারবে না। তাদের যত বড় খুঁটির জোরই থাকুক না কেন, সেটা অন্যায়—সেই কথাটা আমরা উচ্চকণ্ঠে বলতে পারব। আমার ‘উচ্চকণ্ঠ’ আমার চারপাশের মানুষের কান পর্যন্ত পৌঁছায়; কিন্তু যখন এক ডজন নোবেল পুরস্কার পাওয়া মানুষ সেই একই কথা বলেন তখন সেই কথাটা সারা পৃথিবীর বিবেককে নাড়া দেয়। জাতিসংঘের পক্ষ থেকে যখন বলা হয়, এটা হচ্ছে একটা জাতিকে নিঃশেষ করে দেওয়ার ধ্রুপদী প্রক্রিয়া, তখন একটুখানি হলেও পৃথিবীর সব মানুষের ওপর বিশ্বাস আরো একটুখানি ফিরে আসে।

এর মধ্যে আরো একটা ব্যাপার আছে। পৃথিবীতে বৈচিত্র্য হচ্ছে সৌন্দর্য। একটা দেশের মানুষের ভেতর যত বৈচিত্র্য থাকবে সেই দেশটা হবে তত সম্ভাবনাময়। এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, সে দেশে পৃথিবীর সব দেশের, সব জাতির মানুষ রয়েছে, সত্যি কথা বলতে কি এটা একটা বড় দেশ নয়, এটা একটা ছোট পৃথিবী। সে কারণে এ দেশটা এত উন্নত হতে পেরেছে (এ মুহূর্তে ডোনাল্ড ট্রাম্প অবশ্য দেশটার প্রকৃত সৌন্দর্যকে অস্বীকার করে এটাকে বৈচিত্র্যহীন দেশে পরিণত করার চেষ্টা করছেন!)। আমাদের দেশের মানুষের মধ্যে বৈচিত্র্য খুব বেশি নয়, সে জন্য অল্প যে কজন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী বা ভিন্ন কালচারের মানুষ রয়েছে তাদের আমাদের বুক আগলে রাখার চেষ্টা করতে হয়। মিয়ানমারের জন্যও সেই কথাটা সত্য, তাদের দেশের ৯০ শতাংশ মানুষ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। কাজেই অল্প যে কজন ভিন্ন ধর্মের মানুষ রয়েছে তাদের মূল্যবান সম্পদের মতো বুক আগলে রক্ষা করার কথা ছিল। মিয়ানমারের জেনারেলদের সেই সৌন্দর্য অনুভব করার ক্ষমতা নেই, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী তাদের কাছে আপদ-বালাই। তাদের নিশ্চিহ্ন করে দিয়ে তাদের শান্তি। বলতে কোনো দ্বিধা নেই, তারা আধুনিক পৃথিবীর মানুষ এখনো হতে পারেনি। তাদের জন্য আমাদের করুণা হয়।

বাংলাদেশি হিসেবে আজ আমি অনেক গর্ব অনুভব করি, যখন দেখতে পাই আমাদের দেশটি হতভাগ্য রোহিঙ্গাদের বুক আগলে রক্ষা করার জন্য এগিয়ে এসেছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী তাদের দেখতে আশ্রয় শিবিরে গিয়েছিলেন, তখন একজন বিদেশি সাংবাদিক তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘এই রোহিঙ্গাদের আপনি কত দিন রাখবেন?’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বললেন, ‘কত দিন? এরা সবাই মানুষ!’

পৃথিবীর সবাই লাভ-ক্ষতির হিসাব করছে। আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী সেই লাভ-ক্ষতির হিসাব করেননি, একেবারে পরিষ্কারভাবে বলেছেন, তিনি মানুষ হিসেবে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই।

লেখক : অধ্যাপক, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও - dainik shiksha স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে পরীক্ষার আগেই হবু শিক্ষকদের হাতে পৌঁছে যায় উত্তরপত্র: ডিবি - dainik shiksha পরীক্ষার আগেই হবু শিক্ষকদের হাতে পৌঁছে যায় উত্তরপত্র: ডিবি দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল - dainik shiksha ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ - dainik shiksha বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস - dainik shiksha এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0067968368530273