প্রশ্ন ফাঁসের প্রধান ও জরুরি বিষয় হিসেবে নৈতিকতার উন্নয়নের ওপর জোর দিতে চাই। কারণ যিনি বা যাঁরা প্রশ্ন ফাঁস করেন, তাঁদের কয়েকটি বিষয়ের ওপর নজর থাকে।
১. প্রশ্ন বিক্রি করে অনৈতিকভাবে টাকা রোজগার। ২. নিজের ও আত্মীয়-স্বজনের কম মেধাসম্পন্ন ছেলে-মেয়ের ভালো ফলাফলের প্রত্যাশা। ৩. এই অবৈধ প্রক্রিয়ায় যদি গ্রেড এ অথবা এ প্লাস পাওয়া যায়, তাহলে সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি পাওয়ার লোভ। আর সর্বশেষ ভালো ফলাফল হলে ভালো প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ সৃষ্টি। মোটামুটি এ ধরনের কয়েকটি বিষয়কে সামনে রেখে লোভী মানুষেরা এমন অনৈতিক কাজ করে থাকে। দুঃখজনক হলেও সত্য, এক শ্রেণির শিক্ষকসহ চাকরিজীবী ও রাজনৈতিক কর্মীরা এর সঙ্গে জড়িত থাকেন। এ কথা বলতে খুবই খারাপ লাগে, স্বাধীনতার আগে এমন প্রশ্ন ফাঁসের কথা কখনো শুনিনি।
অথচ দেশ স্বাধীনের ১০ বছরের মাথায় প্রশ্ন ফাঁস একটি নৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। দেশের মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নৈতিক অবস্থারও যে ক্রমান্বয়ে অবনতি ঘটছে, তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ প্রশ্ন ফাঁস। এটি রোধ করার জন্য প্রথমেই বলেছি নৈতিকতা উন্নয়ন যেমন কাঙ্ক্ষিত, ঠিক তেমনি রাজনৈতিক অঙ্গীকারও প্রয়োজন। প্রশাসনিক দুর্বলতা কাটানোর সঙ্গে সঙ্গে যে বা যাঁরা প্রশ্ন ফাঁসে জড়িত প্রমাণিত হবেন তাদের চাকরিচ্যুতিসহ দীর্ঘমেয়াদি সাজা প্রয়োগ করলে বোধ করি দেশে প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা কমে আসবে। যাঁরা এ কাজ করেন, ক্ষণিকের লাভ এবং লোভের শিকার হয়ে সমগ্র দেশবাসীকে লজ্জায় ডোবানোর পাশাপাশি মেধাবী এবং পড়ুয়া ছেলে-মেয়ের জীবনে বীতশ্রদ্ধ ভাব তৈরি করে। এ থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য অবশ্যই প্রশ্ন ফাঁস রোধ করা অত্যন্ত জরুরি।
ওয়াহিদ মুরাদ
দিলু রোড, ইস্কাটন, ঢাকা।