শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিশু ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ

মাদারীপুর প্রতিনিধি |

মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার হোসেনপুর ইউনিয়নের উত্তর হোসেনপুর গ্রামে নার্সারি শ্রেণির এক ছাত্রীকে (৭) ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে শিক্ষক মেরাজ খালাশীর (২৬) বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় আজ শনিবার বিকেলে মামলা হয়েছে বলে পুলিশ জানায়।

ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রীকে গুরুতর অবস্থায় প্রথমে রাজৈর ও পরে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে এলাকার কোচিং সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে।

এদিকে, ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে এলাকার একটি প্রভাবশালী মহল শুক্রবার রাতে এক সালিশি বৈঠক বসিয়ে এক লাখ ৪০ হাজার টাকা জরিমানার মাধ্যমে মীমাংসার চেষ্টা করেছে।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, নার্সারি শ্রেণির ওই ছাত্রীর জন্মের কয়েক মাস পর তার পারিবারিক বিরোধের জের ধরে মা-বাবার মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। পরে রাজৈর উপজেলার হোসেনপুর ইউনিয়নের উত্তর হোসেনপুর গ্রামে নানার বাড়িতে চলে আসে।

প্রতিবেশী একই বংশের কোটন খালাশীর ছেলে শিক্ষক মেরাজ খালাশীর বাড়ির কাছে একটি ঘর ভাড়া করে লাইফ কেয়ার কিন্ডার গার্টেন অ্যান্ড প্রাইভেট কোচিং সেন্টার খোলেন। সেখানে নার্সারি শ্রেণিতে ভর্তি হয় ওই ছাত্রী।

বৃহস্পতিবার সকালে প্রতিদিনের মতো ওই ছাত্রী কোচিং সেন্টারে ক্লাস করতে যায়। ক্লাস শেষে ওই ছাত্রীকে ফুঁসলিয়ে রেখে বাকি শিক্ষার্থীদের ছুটি দেন ওই শিক্ষক।

সবাই চলে যাওয়ার পর ওই ছাত্রীকে কোচিং সেন্টারের পাশে একটি কক্ষে নিয়ে ধর্ষণ করেন তিনি। এ সময় ওই ছাত্রীর চিৎকার শুনে এলাকাবাসী এগিয়ে এসে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে রাজৈর ও পরে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

শিশুটির মা বলেন, “মেয়ের ওপর পাশবিক নির্যাতন করা হয়েছে। এলাকার কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি শুক্রবার সন্ধ্যায় বাড়িতে সালিশি বৈঠক বসিয়ে ধর্ষণকারীকে এক লাখ ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। শনিবারের মধ্যে ওই জরিমানার টাকা পরিশোধ করার জন্য সিদ্ধান্ত হয়। আমরা কোনো জরিমানা চাই না। আমরা এর বিচার চাই। “

হাসপাতালে আসা শিশুটির দুইজন খালা বলেন, “আমাদেরকে এলাকা ছাড়ার হুমকি দিচ্ছে। আমরা আতঙ্কের মধ্যে আছি। বিশেষ করে আমার বাবা ভয়ে আছেন। কারণ তার কোনো ছেলে সন্তান নেই। “

মাদারীপুর সদর হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার ডা. অখিল চন্দ্র সরকার বলেন, “হাসপাতালে ভর্তির রেজিস্ট্রারে সেক্সচুয়াল ফোর্স লেখা রয়েছে। মেডিক্যাল বোর্ডের মাধ্যমে ধর্ষণের পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়ার পর ধর্ষণের সঠিক তথ্য পাওয়া যাবে। “

এ ব্যাপারে মাদারীপুরের জেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার কণা বলেন, “ধর্ষণের ঘটনায় কোনো সালিশ বা কোনো জরিমানা হয় না। যারা সালিশ করেছেন তাদের বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। ওই শিশুটিকে আইনি সহযোগিতাসহ সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। “

রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জিয়াউল মোর্শেদ বলেন, এই ঘটনায় শিশুটির মাকে ডেকে এনে মামলা নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আজ শনিবার বিকেলে শিশুটির মা বাদী হয়ে মামলা করেছেন। এ ঘটনার পর ধর্ষণকারী মেরাজ খালাশী পলাতক।

এলাকাবাসী জানায়, বখাটে মেরাজ খালাসী এর আগেও কয়েকবার এ ধরনের যৌন নির্যাতন করে ধরা পড়েন। পরে এলাকার প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় জরিমানা দিয়ে রক্ষা পান তিনি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0064659118652344