বগুড়ার শেরপুর উপজেলার মাদ্রাসাগুলো শিক্ষক সংকটের মুখে পড়েছে। বিষয়ানুযায়ী শিক্ষক না থাকায় শ্রেণিকক্ষে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।
সংকট নিরসনে কর্তৃপক্ষ বারবার চাহিদাপত্র দিলেও কোন সুরাহা হচ্ছে না। ফলে দিনের পর দিন স্বল্প সংখ্যক শিক্ষক দিয়ে পাঠদান করাতে বাধ্য হচ্ছে প্রতিষ্ঠানগুলো।
এদিকে প্রতিবছর বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের চাহিদা মাফিক শিক্ষক সরবরাহের কথা থাকলেও প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিন ধরে নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত রেখেছে। তাই এ সংকট থেকে উত্তরণ সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন উপজেলার মাদ্রাসা প্রধানরা।
বগুড়া জেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে শেরপুর উপজেলার ১৫টি মাদ্রাসায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সর্বমোট ৩২ জন শিক্ষকের চাহিদা রয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- উপজেলার দড়িহাসড়া দাখিল মাদ্রাসায় সহকারী শিক্ষক গণিত-১ জন, বিরইল শহীদ ফোরকানিয়া দাখিল মাদ্রাসায় সহকারী শিক্ষক গণিত-১ জন, সহকারী মৌলভী-১ জন, জুনিয়র শিক্ষক-১, জামুর ইসলামিয়া আলীম মাদ্রাসা- সহকারী শিক্ষক ইংরেজি-১ জন, সহকারী শিক্ষক শরীর চর্চা-১ জন, খাগা দোলং ভি.সি. দাখিল মাদ্রাসায় ক্বারী-১ জন, আলতাদীঘি ফাযিল স্নাতক মাদ্রাসায় প্রভাষক (আরবী)-১ জন, সহকারী শিক্ষক কৃষি-১ জন, কাফুরা সমবায় বালিকা দাখিল মাদ্রাসায় ক্বারী-১ জন, শালফা এস.আর চেীধুরী দাখিল মাদ্রাসায় সহকারী শিক্ষক শরীর চর্চা-১ জন, শাহনগর ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসায় সহকারী শিক্ষক শরীর চর্চা-১ জন, সহকারী মৌলভী-১ জন, আয়রা জামেউল উলুম দাখিল মাদ্রাসায় সহকারী শিক্ষক ইংরেজী-১ জন, সহকারী শিক্ষক কম্পিউটার-১ জন, বেলগাছী দাখিল মাদ্রাসায় ক্বারী-১ জন, ঘৌড়দৌড় এন. পি আলিম মাদ্রাসায় প্রভাষক সাধারণ-২ জন, সহকারী শিক্ষক শরীর চর্চা-১ জন, হাপুনিয়া দাখিল মাদ্রাসায় সহকারী শিক্ষক শরীর চর্চা-১ জন, ভবানীপুর দাখিল মাদ্রাসায় সহকারী শিক্ষক কম্পিউটার-১ জন, শেরপুর শহীদিয়া কামিল ¯œাতকোত্তর মাদ্রাসায় কামিল হাদিস বিভাগ প্রভাষক-২ জন, কামিল ফিক্হ বিভাগ প্রভাষক-২ জন, সহকারী মৌলভী-২ জন, সহকারী শিক্ষক-২ জন, সহকারী শিক্ষক কৃষি-১ জন, ধনকুন্ডি আয়েশা মওলা বক্স দাখিল মাদ্রাসায় সহকারী শিক্ষক-১ জন, সহকারী শিক্ষক শরীর চর্চা-১ জন।
জামুর ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হাফিজুর রহমান জানান, শিক্ষক সংকটে প্রতিষ্ঠানের সুষ্ঠু শিক্ষা কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। বাধ্য হয়ে ধার করা শিক্ষক দিয়ে ক্লাস চালাতে হচ্ছে। তাছাড়া এক বিষয়ের শিক্ষক অন্য বিষয়ের ক্লাস নিতে চাননা। ফলে, শিক্ষার্থীদের ক্লাস করানোও সম্ভব হয় না।
ভবানীপুর দাখিল মাদ্রাসার সুপার আব্দুর রহিম শিক্ষক সংকটের কথা তুলে ধরে বলেন, শূন্যপদ পূরণে একাধিকবার কর্তৃপক্ষ বরাবরে চাহিদা পাঠানো হয়েছে। কিন্তু শিক্ষক না পাওয়ায় আধুনিক মানসম্মত শিক্ষা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক মাদ্রাসা অধ্যক্ষ জানান, আমার প্রতিষ্ঠানে লেকচারারসহ সহকারী শিক্ষকের পদ প্রায় দেড় বছর যাবৎ শূন্য। আমরা চাহিদা পত্রও দিয়েছি। এদিকে এনটিআরসিএর ১৩তম নিবন্ধনের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ হয়েছে কয়েক মাস আগে। তারপরও তারা শিক্ষক সরবরাহ করছে না। এভাবে চলতে থাকলে শিক্ষার্থীদের ফলাফল ভাল করা সম্ভব না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে, শেরপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ নজমুল ইসলাম বলেন, উপজেলার প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষক চাহিদাপত্র আমরা বহু আগেই এনটিআরসিএ বরাবর প্রেরণ করেছি। শিক্ষক নিয়োগ করা সম্পূর্ণ তাদের এখতিয়ার।