সংকটে দুই লাখ কলেজশিক্ষার্থী

দৈনিক শিক্ষা ডেস্ক |

দৃশ্যত দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের কারণে দুই লাখ শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়া দুর্ভাগ্যজনক। এ ঘটনা অবশ্য দেশের সার্বিক শিক্ষাব্যবস্থার শৃঙ্খলার প্রতিও একটি হুমকি। এটা আরও নিশ্চিত করে যে, দেশের শিক্ষাঙ্গনে, বিশেষ করে সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে খুব ভালো অবস্থা বিরাজ করছে না।

আন্দোলনরত দুই লাখ শিক্ষার্থী এবং তাঁদের অভিভাবকদের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিবেচনায় নিয়ে সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে অবিলম্বে পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা আসা উচিত। আলোচ্য দুই উপাচার্যই একাদিক্রমে দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব পালন করছেন। এর মানে তাঁরা উভয়ই সরকারের উচ্চপর্যায়ের আস্থাভাজন। অবস্থা এতটাই নাজুক যে খোদ শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, সংকট মেটাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন। এরপর ৪৮ ঘণ্টা অতিবাহিত হলেও সংকট অপরিবর্তিত।

এটা সত্যিই পরিহাসমূলক যে আমরা অতীতে পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে শিক্ষার্থীদের অন্যায্য আন্দোলন করতে দেখেছি। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য অধিভুক্ত হওয়া সাতটি কলেজের শিক্ষার্থীরা দ্রুত পরীক্ষা গ্রহণ ও ফল প্রকাশের দাবিতে অব্যাহতভাবে বিক্ষোভ করছেন। তাঁরা সন্দেহাতীতভাবে কর্তৃপক্ষীয় স্বেচ্ছাচারিতার নির্দয় শিকার হয়েছেন। তাঁরা দেখছেন একই বর্ষের শিক্ষার্থী হয়েও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের লাখ লাখ শিক্ষার্থী যথাসময়ে পরীক্ষা দিয়ে ফলও হাতে পেয়ে গেছেন। অথচ তাঁদের জীবন থেকে ইতিমধ্যে কয়েকটি মাস অর্থহীনভাবে কেটে গেছে। এবং আগামী সেপ্টেম্বরে সাত কলেজের চারটি বর্ষের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা গ্রহণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষিত তথাকথিত সম্ভাব্য তারিখেও পরীক্ষা হবে কি না, তা কারও জানা নেই।

যে প্রক্রিয়ায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাতটি কলেজকে রাতারাতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়েছে, তা একটি তুঘলকি সিদ্ধান্ত। এত বড় একটি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে গিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে প্রয়োজনীয় আলাপ–আলোচনাও হয়নি। এটা অবিশ্বাস্য। দুই লাখ শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রায় এক-পঞ্চমাংশের চূড়ান্ত বর্ষের লিখিত পরীক্ষা (সম্মানসহ স্নাতক) শেষ হয়েছিল। কিন্তু তাঁদের ফল প্রকাশ এবং মৌখিক পরীক্ষা অনিষ্পন্ন থাকতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাত কলেজের অধিভুক্তির প্রজ্ঞাপন জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।অথচ এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের আগে ১৯৯২ সালের মূল জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আইনে উপযুক্ত সংশোধনী আনার দরকার ছিল।

শিক্ষামন্ত্রী যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসনের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু আমরা মনে করি, দুই কর্তৃপক্ষের দ্বন্দ্বের জের ধরে দুই লাখ শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবনে যে অহেতুক দুর্ভোগ নেমে এসেছে, তার দায় সরকার এড়াতে পারে না। তাই উচ্চপর্যায়ের আশু কার্যকর হস্তক্ষেপ প্রত্যাশিত।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ - dainik shiksha আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0028741359710693