সাঁওতাল নৃ-গোষ্ঠীর মাতৃভাষায় পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ২০১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে প্রাক-প্রাথমিক পর্যায়ে সাঁওতাল নৃ-গোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যে এসব পাঠ্যবই তুলে দেয়া হবে।
বুধবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদফতরের মিলনায়তনে আয়োজিত সাঁওতাল নৃ-গোষ্ঠীর পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ বিষয়ক এক আলোচনা সভায় মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, সরকার নৃ-গোষ্ঠীদের মাতৃভাষাকে সংরক্ষণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাই ২০১৭ শিক্ষাবর্ষে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) চাকমা, মারমা, ক্রিপুরা, গারো ও সাদরি মাতৃভাষায় পাঁচটি নৃ-গোষ্ঠীর জন্য পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন করেছে।
মন্ত্রী বলেন, গতবছর সাঁওতাল নৃ-গোষ্ঠীর মাতৃভাষায় বই দেয়ার সিদ্ধান্ত থাকলেও বর্ণগত সমস্যা থাকায় তা সম্ভব হয়নি। আগামী বছর এ নৃ-গোষ্ঠীর হাতেও তাদের মাতৃভাষায় বই দেয়া হবে। সাঁওতাল রামনা ধর্ম ও সংস্কৃতি রক্ষা পরিষদের সভাপতি রনীন হেমব্রম বলেন, ‘সাঁওতালদের মাতৃভাষা সংরক্ষণ করতে হলে তাদের নিজ ভাষায় পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন জরুরি। দীর্ঘদিন ধরে এ নৃ-গোষ্ঠীর বই কোন হরফে লেখা হবে তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।’
‘সাঁওতালরা এখনও রোমান বর্ণ ব্যবহার করে আসছে। তাই রোমান বর্ণের পরিবর্তে বাংলা বর্ণ ব্যবহারের সুপারিশ করছি,’ বলেন তিনি।
জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ সরেন বলেন, সাঁওতাল একটি স্বতন্ত্র নৃ-গোষ্ঠী। কিন্তু তাদের ভাষা লেখনীর জন্য পূর্ণাঙ্গ বর্ণ নেই। এ কারণে দিন দিন সাঁওতাল ভাষা হারিয়ে যাচ্ছে।’তাই সাঁওতাল নৃ-গোষ্ঠীর মাতৃভাষার বই প্রণয়নে বাংলা বর্ণ ব্যবহারের প্রস্তাব করেন তিনি।
আলোচনা সভায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রাণলয়ের সচিব আসিফ উর জামান, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক আবু হেনা মোস্তফা কামালসহ সাঁওতাল নৃ-গোষ্ঠীর বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা বক্তব্য দেন।