নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা নূর হোসেন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, কোম্পানি কমান্ডার মেজর (অব.) আরিফ হোসেন ও লে. কমান্ডার (চাকরিচ্যুত) এম মাসুদ রানাসহ ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহ ও বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার এই রায় ঘোষণা করেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে আছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, আর আসামিপক্ষে আছেন আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী ও আইনজীবী এস এম শাহজাহান প্রমুখ।
২৬ জুলাই এই মামলার আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শেষে রায়ের জন্য ১৩ আগস্ট দিন ধার্য করেন হাইকোর্ট। কিন্তু ১৩ আগস্ট আদালত রায় ঘোষণার দিন পিছিয়ে ২২ আগস্ট রায়ের দিন ধার্য করেন।
ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের ফতুল্লার লামাপাড়া থেকে ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ ৭ জনকে অপহরণ করা হয়। অপহরণের তিন দিন পর শীতলক্ষ্যা নদীতে তাদের লাশ পাওয়া যায়। এই ঘটনায় দুটি মামলা হয়।
গত ১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ দুই মামলায় ৩৫ জন আসামির মধ্যে ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় দেন। অন্য নয় জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মৃত্যুদণ্ড পায়: সাবেক কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা নূর হোসেন, র্যাব-১১ এর সাবেক অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, সাবেক দুই কোম্পানি কমান্ডার মেজর (অব.) আরিফ হোসেন, লে. কমান্ডার (চাকরিচ্যুত) এম মাসুদ রানা, হাবিলদার মো. এমদাদুল হক, এ বি মো. আরিফ হোসেন, ল্যান্স নায়েক হিরা মিয়া, ল্যান্স নায়েক বেলাল হোসেন, সিপাহি আবু তৈয়ব আলী, কনস্টেবল মো. শিহাব উদ্দিন, এসআই পুর্ণেন্দু বালা, সৈনিক আসাদুজ্জামান নুর, সৈনিক আবদুল আলিম, সৈনিক মহিউদ্দিন মুনশি, সৈনিক আল আমিন, সৈনিক তাজুল ইসলাম, সার্জেন্ট এনামুল কবির, নূর হোসেনের সহযোগী আলী মোহাম্মদ, মিজানুর রহমান দিপু, রহম আলী, আবুল বাশার, মোর্তুজা জামান চার্চিল, সেলিম, সানাউল্লাহ সানা, শাহজাহান ও জামাল সর্দার।
রায়ে ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলো: ল্যান্স কর্পোরাল রুহুল আমিন, এএসআই বজলুর রহমান, সৈনিক নুরুজ্জামান, কনস্টেবল বাবুল হাসান, এএসআই আবুল কালাম আজাদ, এএসআই কামাল হোসেন ও করপোরাল মোখলেছুর রহমান।
ওই রায়ে ৭ বছর সশ্রম কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন: কনস্টেবল হাবিবুর রহমান, হাবিলদার নাসির উদ্দিনকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া ১০ বছর কারাদনণ্ড প্রাপ্ত মোখলেছুরকে আলামত অপসারণে যুক্ত থাকার দায়ে আরও ৭ বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়।
বিচারিক আদালতের রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের করা আপিলের শুনানির পর হাইকোর্ট মঙ্গলবার রায় দেন।